ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পিডিবি এবং সামিটের সঙ্গে চুক্তি কাল, অংশীদার হচ্ছে জিই

ছয় হাজার মেও বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১০ জুলাই ২০১৮

ছয় হাজার মেও বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছয় হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। সরকারী অংশে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড পিডিবির সঙ্গে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট এবং সামিট গ্রুপের সঙ্গে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের পৃথক দুটি গ্যাস চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রের চুক্তি হবে। সামিট এবং পিডিবি উভয় কোম্পানির সঙ্গে অংশীদার হচ্ছে মার্কিন জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই)। এর মধ্য দিয়ে দেশে বড় অঙ্কের মার্কিন বিনিয়োগ আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিদ্যুত খাতের সব থেকে বড় চুক্তি এটি। মহেশখালীতে নির্মাণ করা দুই কেন্দ্রের সঙ্গে পৃথক এলএনজি টার্মিনাল থাকবে। আমদানি করা গ্যাস দিয়ে বিদ্যুত কেন্দ্র দুটি চালানো হবে। বুধবার দুপুরে এবং বিকেলে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। সরকারীভাবে দেশে এখনও পর্যন্ত বড় একক অংশীদারিত্ব ব্যবসা হিসেবে ধরা হয় নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিলিউপিজিসিএল) পায়রা তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রকে। এই কেন্দ্রর সঙ্গেও জার্মানির সিমেন্সের একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করার কথা রয়েছে। এখন একই ক্ষমতার আরেকটি সমঝোতা স্মারক সই করতে যাচ্ছে পিডিবি। পিডিবি সূত্র বলছে এখন বিদ্যুত কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের এমওইউ সই হবে। এর ভিত্তিতে জিই এর সঙ্গে একটি যৌথমূলধনী কোম্পানি গঠন করা হবে। সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব চুক্তি অনুযায়ী ওই কোম্পানিটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করবে। পিডিবি সূত্র বলছে প্রকল্পের ৫১ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে পিডিবির হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩০ ভাগের মালিকানা পাবে জিই। এছাড়া ১৯ ভাগ পিডিবি এবং জিইএর সমাঝোতার ভিত্তিতে অন্য কোম্পানিকে দেয়া হবে। অন্যদিকে দেশে বেসরকারী খাতে সব থেকে বড় বিনিয়োগ চুক্তি হবে এটি। তিন বিলিয়ন ডলারের এই চুক্তিতে মার্কিন জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই) এবং জাপানের মিতসুবিশি কর্পোরেশন সঙ্গে অংশীদার হচ্ছে সামিট গ্রুপ। অংশীদাররা বলছে সব কিছু ঠিক থাকলে বুধবারই চুক্তিটি সই হবে। এই চুক্তির আওতায় মহেশখালীতে একটি স্থায়ী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনালের সঙ্গে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। সামিট পাওয়ার সূত্র বলছে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফরের সময় মিতসুবিশি কর্পোরেশন সঙ্গে সামিটের একটি চুক্তি হয়েছে। মিতসুবিশি বিদ্যুত কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল উভয়ের অংশীদার হবে। অন্যদিকে জিই বিদ্যুত কেন্দ্রর নির্মাণের পাশাপাশি বিনিয়োগও করবে। সাধারণত দেশে এ ধরনের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের আগে সরকারের অনুমোদন নেয়া হয়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে দেশে বিদ্যুতের একক ক্রেতা পিডিবি। পিডিবির অনুমোদনের পরই বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বেসরকারী কোম্পানিগুলো। তবে এবার এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সামিট পাওয়ার। পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের সঙ্গে সামিট বিদ্যুত কেন্দ্র করার বিষয়ে কোন আলোচনা করেনি। তাদের সঙ্গে আমাদের কোন কথাও হয়নি এ বিষয়ে। তিনি জানান, আমরা একই দিন একটি তিন হাজার ৬০০ মেগায়াটের বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জিই আর সঙ্গে এমওইউ সই করব। সরকার মহেশখালীতে বিদ্যুত হাব নির্মাণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। শুরুতে মহেশখালীতে ১০ হাজার মেগাওয়াটের কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে কয়লার পাশাপাশি সেখানে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লান অনুযায়ী মোট বিদ্যুত উৎপাদনের ৫০ ভাগ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসাতে এলএনজিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে মাতারবাড়িতে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি একটি ১২০০ মেগাওয়াটের কয়লা চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছে।
×