ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরমনির্ভর তথ্যপ্রযুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ৯ জুলাই ২০১৮

পরমনির্ভর তথ্যপ্রযুক্তি

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে। ইতোমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হিসেবে ঘোষণাও করা হয়েছে। ২০১৮ সালে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট পূরণ হয়েছে। এখন ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। একই সময়ে ২০ লাখের বেশি তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী বা মানবসম্পদ তৈরি করা হবে। এই ২০ লাখ পেশাজীবী জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। এ জন্য সারাদেশে কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চল থেকেও যেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা কাজ করতে পারেন এমন অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলমান। এসবই দেশের অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের জন্য সুসংবাদ। ফ্রিল্যান্সিং তথ্যপ্রযুক্তির খাত বহু তরুণের আয়ের অন্যতম উৎস। ঘরে বসেই এই খাত থেকে বড় অঙ্কের টাকা আয় করা সম্ভব। সরকার এ জন্য দেশে ৫৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষ ফ্রিল্যান্সার গড়ে উঠলে ভিশন ২০২১ সালের মধ্যে দেশ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছবে। বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছিলেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি সরকারী চাকরির দিকে না তাকিয়ে আইটি সেক্টরে মন দেয়ার কথা বলেন। কেননা দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব। আউটসোর্র্সিংয়ে বিশেষ প্রণোদনার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। জনশক্তির তুলনায় দেশে শ্রমবাজার অপর্যাপ্ত থাকায় বেকারত্ব দূর করতে এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার এ খাতে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ভাল রোজগার করছেন। এখন স্বাধীনচেতা, কর্মঠ এবং উচ্চাভিলাষী তরুণদের মধ্যে আউটসোর্সিং প্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের এ কাজটি বর্তমান বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে চলে এসেছে। কিছুকাল আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের উদ্যোগে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার উদ্বোধন করা হয়। দ্রুত গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করায় বিপিও খাত থেকে প্রতিবছর ৩০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করা সম্ভব বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। আশা করা যায় ২০২১ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণের কর্মসংস্থান হবে বিপিওতে। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে এখনও আইটি দক্ষতার অভাব রয়েছে। এই কাজেও তরুণদের সম্পৃক্ত করতে পারলে তা দেশের সমৃদ্ধির জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তথ্যপ্রযুক্তি যেমন স্বকর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, তেমনি আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও অন্যতম প্রধান খাত হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার অনেকটাই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। তাতে অর্থসংস্থান আরও চ্যালেঞ্জপূর্ণ হয়ে উঠছে। মানবসম্পদকে সত্যিকারভাবে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য নানাবিধ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতেই দেখা যাচ্ছে আশার উজ্জ্বল আলো।
×