ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার দাবি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় যুক্তরাষ্ট্র

আলোচনা চলবে ॥ পম্পেও

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৯ জুলাই ২০১৮

আলোচনা চলবে ॥ পম্পেও

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রবিবার তার দেশের বিরুদ্ধে আনা উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উত্তর কোরিয়া অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ‘অপরাধী চক্রের হোতার’ মতো আচরণ করছে। এছাড়া ‘চূড়ান্ত পর্যায়’ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের আগে নিষেধাজ্ঞাগুলো অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে বলে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এসব অভিযোগ খুব বড় করে দেখছে না। এএফপি। পিয়ংইয়ংয়ে দুদিনের কূটনৈতিক তৎপরতা শেষ করে জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছে পম্পেও বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং ‘আস্থার পরিবেশের’ মধ্যে এই আলোচনা হয়েছে। পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক উদ্যোগ যতই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখুক পম্পেও একে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। পিয়ংইয়ং এমন হুঁশিয়ারিও দেয় যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য ওয়াশিংটন যেভাবে একতরফাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে তা ভবিষ্যত শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। পম্পেও মনে করেন, এটি উত্তর কোরিয়ার একটি আলোচনার কৌশল। তবে দুদিনের আলোচনার পরও যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কে যে অনেক দূরত্ব রয়ে গেছে পিয়ংইয়ং তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছে। টোকিওতে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পম্পেও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত থাকবে। তার এবারের উত্তর কোরিয়া সফরের অন্যতম লক্ষ্য ছিল পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে পিয়ংইয়ংয়ের কাছ থেকে স্পষ্ট অঙ্গীকার আদায় করা। গত মাসের ১২ তারিখ সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে প্রথম শীর্ষ বৈঠকের পর এই প্রথম কোন উচ্চ পর্যায় মার্কিন প্রতিনিধি উত্তর কোরিয়া সফর করলেন। দেশটি বরাবরই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ তাদের লক্ষ্য বলে ঘোষণা দিয়ে এলেও এখন মনে হচ্ছে এটি এক দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। পুরো কোরিয়া উপদ্বীপে বহুপাক্ষিক নিরস্ত্রীকরণ করা না হলে উত্তর কোরিয়া একতরফাভাবে এটি করবে না। টোকিওতে পম্পেও বলেন, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য তার উদ্যেগের প্রতি পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মতি রয়েছে। এটি যদি অপরাধী চক্রের হোতার মতো হয়ে থাকে তবে পুরো বিশ্বই অপরাধী চক্রের হোতা। কারণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাস হয়েছে। যা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সময় এখনও আসেনি। পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কাজ শেষ হলে তখন নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে। বিনিময়ে নিরাপত্তা যে গ্যারান্টি উত্তর কোরিয়া চেয়েছে তা অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক গতিতে কাজ করে যাবে। পিয়ংইয়ং ইতোমধ্যেই একটি ঘোষিত পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিযেছেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এটি প্রথম বড় পদক্ষেপ। এছাড়া ট্রাম্প একতরফাভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বার্ষিক সামরিক মহড়া বাতিল করেছেন। সিউল ইউনিভার্সিটির নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক ইয়াং মো জিন মনে করেন, ট্রাম্প ও তার শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপে রাখতে উত্তর কোরিয়া এসব বলছে। তিনি মনে করেন উত্তর কোরিয়ার সমালোচনার লক্ষ্য আলোচনায় নিজেদের প্রভাবশালী অবস্থান ধরে রাখা। পম্পেও এখনও জোর দিয়ে বলছেন আলোচনা অব্যাহত থাকবে। এখনও পর্যন্ত কেউ আলোচনা থেকে ওয়াকআউট করেনি। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যখন সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করে তখন পম্পেও ছিলেন সিআইএর প্রধান। আলোচনার প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।
×