ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল এসিডদগ্ধ মালা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৯ জুলাই ২০১৮

মৃত্যুর কাছে হেরে গেল এসিডদগ্ধ মালা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ৮ জুলাই ॥ সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক যুবকের এসিড নিক্ষেপে দগ্ধ দুই বোনের মধ্যে বড় বোন তানজিম আক্তার মালা (১৬) অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছে। এসিড নিক্ষেপে ৫৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শনিবার রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। স্বজনরা জানান, গত ১৪ মে গভীর রাতে হেলাল রাড়ির ২ কন্যা তানজিম আক্তার মালা (১৬) এবং মারজিয়া (৮) রাতের খাবার খেয়ে এক সঙ্গে ঘুমাতে যায়। রাত ২টার পর হঠাৎ করে জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়। এতে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রী তানজিম আক্তার মালার মুখন্ডমন্ডল, ২ চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। এছাড়াও তার ছোট বোন দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মারজিয়া হাত ও পেটসহ বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় তাদেরকে ভোলা থেকে বরিশাল প্রেরণ করা হয়েছে। পরে তাদেরকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। অপরদিকে এ ঘটনার ১১ দিন পর ২৬ মে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসিড নিক্ষেপকারী মূল আসামি ভোলা সরকারী কলেজের অনার্স ১ বর্ষের ছাত্র মহব্বত হোসেন অপুকে ভোলা সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অপু পুলিশকে জানিয়েছে, তানজিম আক্তার মালার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে সে জানতে পারে মালার সঙ্গে এক বছর আগে থেকে আরও দুটি ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিত-া হলে দুইজনের মধ্যে কথা বলা বন্ধ হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাটারি থেকে এসিড নিয়ে গত ১৪ মে রাত ২টার দিকে জানালা দিয়ে মালার ওপর এসিড নিক্ষেপ করে অপু। এদিকে এসিডদগ্ধ মালার পিতা হেলাল রাড়ি জানান, ৫৪ দিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিল। শনিবার ঢাকা মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে রাত ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মেয়ে মালা মৃত্যুবরণ করে। মালার পিতা হেলাল রাড়ি, তার মেয়ের ওপর এসিড নিক্ষেপকারী পাষ- মহব্বত হোসেন অপুর ফাঁসির দাবি জাানিয়ে বলেন, তার মেয়ের মতো আর যেন কারোর এমন নৃশংস ঘটনা না ঘটে।
×