ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাদারীপুরে পদ্মার ভাঙ্গন শুরু ॥ ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৯ জুলাই ২০১৮

  মাদারীপুরে পদ্মার ভাঙ্গন  শুরু ॥ ব্যাপক ক্ষতির  আশঙ্কা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৮ জুলাই ॥ জেলার শিবচরের চরজানাজাত এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ফলে বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। জানা গেছে, পদ্মা নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চল হওয়ায় প্রতি বছরই উপজেলার চরজানাজাত এলাকাটি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এর ফলে এ এলাকার সাধারণ জনগণের ব্যাপক ক্ষতি হয়। স্কুল কলেজ পড়ুুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা পরে চরম দুর্ভোগে। পূর্বেই এ এলাকারবেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রবল স্রোতের কারণে এ বছর এ অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় বিলীন হওয়ার পথে। দু’এক দিনের মধ্যে পুরো বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাবে। এ জন্য ভবনটি সরানোর কাজ চলছে। বর্ষা মৌসুম এলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন চিত্র অনেকটাই পাল্টে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় নদী ভাঙ্গনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের প্রায় অংশই এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এক সময়ের শত শত জমির বহু মালিক আজ নিঃস্ব হয়ে অন্য এলাকায় খাজনায় বসতবাড়ি তুলে কোন রকমে বসবাস করছেন। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত রাশিদা বেগম বলেন, ‘কোন এক সময় আমার স্বামীর ৪০-৫০ বিঘা জমি ছিল। আজ আমাদের ১ বিঘা জমিও নাই। পদ্মা নদী আমাদের সব জমি কেড়ে নিয়েছে। এখন আমরা পরের জমিতে কোন রকমে ঘর তুলে বসবাস করছি।’ চরজানাজাত ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক বেপারী বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সারাদিন দুঃশ্চিন্তায় থাকি এই বুঝি নদী ভাঙ্গনে আমাদের ভিটেমাটি নিয়ে যাবে।’ চরজানাজাত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান মাহামুদ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে খুবই কষ্টের সঙ্গে বলতে হয় এ বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়ার জন্য প্রহর গুণছে।যেভাবে নদী ভাঙ্গন শুরুহয়েছে তাতে মনে হয় ২/১ দিনের মধ্যে এই বিদ্যালয়টিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বিদ্যালয়টি নদী থেকে মাত্র ১০০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের ভবনটি সরানো হচ্ছে।’ শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান আহমেদ জানান, যেহেতু নদী ভাঙ্গনে এ অঞ্চলের লোকজন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে লক্ষ্যে প্রশাসনিকভাবে বিশেষ কিছু উদ্যোগ রয়েছে। পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়েই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে বিভিন্ন রকম সহায়তা করা হয়।’
×