ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গালিসিয়া উপকূলের এস্তাকা দে বারেসের কাছে সন্ধান পাওয়া যায়

নাৎসি বাহিনীর ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেল ডুবুরিরা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৮ জুলাই ২০১৮

নাৎসি বাহিনীর ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেল ডুবুরিরা

উত্তর-পশ্চিম স্পেনের গালিসিয়া উপকূলের কাছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত জার্মান ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন ডুবুরিরা। সাড়ে ছয় দশক আগে ১৯৪৩ সালের নবেম্বরে মিত্রবাহিনীর বোমাবর্ষণে ইউ-৯৬৬ ডুবোজাহাজটির ভয়াবহ ক্ষতি হওয়ার পর ক্রুরাই পরে টাইম বোমা ব্যবহার করে সেটি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। খবর বিবিসির। আটজন বাদে জাহাজটির সব নাবিক ও ক্রু ডাঙ্গায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলেন। বছরখানেকের অনুসন্ধানের পর গত মাসের শেষ দিকে তিন ডুবুরি ‘গুড উড’ নামের জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান। সমুদ্রের যে এলাকায় তারা খোঁজাখুঁজি চালিয়েছেন সেটি পাথুরে হওয়ায় খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই অনুসন্ধান কার্যক্রম অসম্ভব হয়ে পড়ত। গালিসিয়া উপকূলের এস্তাকা দে বারেসের কাছে ডুবোজাহাজটির সন্ধান পাওয়ার কথা জানালেও এর সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেননি। ডুবুরিদের একজন, নৌ ইতিহাসবিদ ইয়াগো আবিলেইরা স্পেনের পত্রিকা লা ভজ দে গালিসিয়াকে বলেন, ক্রুরাই ছিদ্র করে ‘গুড উডকে’ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। ‘মিত্রবাহিনীর বিমান চারদিক থেকে আক্রমণ করছিল, তারা (ক্রু) বুঝতে পেরেছিলেন- সময় কমে আসছে, তাই মরিয়া হয়ে সেটি ডুবিয়ে দিয়েছিলেন,’ বলেন আবিলেইরো। মার্কিন নৌবাহিনী ও যুক্তরাজ্যের রাজকীয় বিমানবাহিনীর (আরএএফ) বোমার বিমানের হামলা এড়াতে আঁকাবাঁকা পথে এগোনোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল ৫২ ক্রুর ওই ইউ-৯৬৬টি, হামলার পাল্টায় তাদের বিমানবিধ্বংসী গোলায় আরএএফের একটি বিমান বিধ্বস্তও হয়েছিল। ডুবুরির এখন ‘গুড উডের’ ধ্বংসাবশেষের আশপাশেই মিত্রবাহিনীর ওই বিধ্বস্ত বিমানটির অনুসন্ধান করেছেন বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ গণমাধ্যম। উত্তর আমেরিকার উপকূল থেকে ফেরার পথে ১৯৪৩ সালের ১০ নবেম্বর ডুবোজাহাজটি মিত্রবাহিনীর হামলার মুখে পড়ে বলে জানিয়েছে জার্মান নৌ ইতিহাস ভিত্তিক ওয়েবসাইট ইউবুটআর্কাইভ ডট দে। ইউ-৯৬৬টি ধ্বংসের পর স্থানীয় কিছু মাছ ধরার নৌকায় করে জাহাজটির জীবিত নাবিক ও ক্রুরা সমুদ্র তীরে পৌঁছায়। ইউ-বোটটির কমান্ডার একেহার্দ ওলফ পরের বছরের নবেম্বরে নাম জালিয়াতি করে স্পেন থেকে জার্মানি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন বলেও জানিয়েছে ওয়েবসাইটটি। স্পেনের স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো আনুষ্ঠানিকভাবে অক্ষশক্তিতে না ভিড়লেও নিরপেক্ষ থেকেই জার্মানদের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। ওই সম্পর্কের কারণেই ডুবোজাহাজটির অনেক নাবিক জার্মানিতে ফিরতে পেরেছিলেন। জার্মান এ ইউ-৯৬৬ ডুবোজাহাজগুলো মিত্রবাহিনীর নৌ যোগাযোগ ও রসদ সরবরাহের পথ বন্ধে বেশ কার্যকর ছিল। ৬৭ মিটার দীর্ঘ ‘গুড উড’কে ১৯৪৩ সালের জানুয়ারিতেই মোতায়েন করা হয়েছিল। ১০ মাস পর ‘প্রায় নতুন অবস্থাতেই’ এর সলিলসমাধি ঘটে।
×