ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৮ জুলাই ২০১৮

সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়ছে। এ লক্ষ্যে আজ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল- ২০১৮ পাসের জন্য আজ উত্থাপন করবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক। যে কোন সংবিধান সংশোধনী পাস করতে হলে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যদের সমর্থনের প্রয়োজন। বর্তমান সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও এই বিলে সমর্থন দিতে পারে। সে কারণে আজ বেলা তিনটায় শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন করতে আনা এই বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাসের সম্ভাবনা রয়েছে। আইন প্রণয়ন কাজে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংবিধানে সংরক্ষিত নারী কোটা চালু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে ১৯৭২ সালে। সেই থেকে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের পরই সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ থাকছে। কিন্তু সংবিধানে বিদ্যমান সময় অনুযায়ী সংরক্ষিত নারী আসনের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই আজ সংসদে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে। আজ রবিবার দিনের কার্যসূচীতে আইন প্রণয়ন কার্যাবলীতে বিলটি উত্থাপনের তালিকায় রয়েছে। এর আগে গত ১০ এপ্রিল সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের বিধানে সংশোধনী এনে সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়। উত্থাপিত সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল-২০১৮ তে আরও ২৫ বছর সংরক্ষিত আসন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা এই বিল পাসের সময় সব সংসদ সদস্যদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং কীভাবে সংবিধান সংশোধনী বিলে ভোট দিতে হয় তাও শিখিয়ে দেন নতুন সংসদ সদস্যদের। সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) উপ-দফায় সংশোধনী এনে বলা হয়েছে- ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন ২০১৮ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পঁচিশ বছর অতিবাহিত হওয়ার অব্যবহিত পরবর্তীতে সংসদে ভেঙ্গে না যাওয়া পর্যন্ত পঞ্চাশটি আসন শুধু নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং তারা আইনানুযায়ী আগের সদস্যদের মাধ্যমে সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।’ বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে- স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আইন প্রণয়নে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তদানীন্তন গণপরিষদ প্রণীত ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এর বিধানে জাতীয় সংসদে নারী সদস্যদের জন্য সংবিধান প্রবর্তন থেকে ১০ বছর সময় অতিবাহিত হওয়ার অব্যবহিত পরবর্তী সময়ে সংসদ ভেঙ্গে না যাওয়া পর্যন্ত ১৫টি আসন সংরক্ষণ করা হয়। সংরক্ষিত নারী আসনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার কারণে সমাজে সবক্ষেত্রে নারীদের অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এর বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনের ১০ (দশ) বছর মেয়াদ ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ শেষ হবে। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ বৃদ্ধি করা না হলে ওই সময় অতিবাহিত হওয়ার পর জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য কোন আসন সংরক্ষিত থাকবে না। সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদেরকে নিয়ে গঠন করতে হলে দশম সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় সংবিধানে এ সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা আবশ্যক।
×