ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তৃণমূল নেতাদের অঙ্গীকার

আপনি নৌকা দিয়ে যে প্রার্থীকেই পাঠাবেন তাকেই জয়ী করব

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৮ জুলাই ২০১৮

আপনি নৌকা দিয়ে যে প্রার্থীকেই পাঠাবেন তাকেই জয়ী করব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সকল ভেদাভেদ ভুলে দেশ ও দলের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয়ে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অঙ্গীকার করলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা। তারা অভিন্ন কণ্ঠে বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) নৌকা দিয়ে যে প্রার্থীকেই পাঠাবেন, ঐক্যবদ্ধভাবে সেই প্রার্থীকেই আমরা জয়ী করে আপনার কাছে নৌকা ফেরত দেব। কেউ কেউ দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানালে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু নৌকায় ভোট, আর কিছু নয়। কারও চেহারা দেখার দরকার নাই।’ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। একদম দেশের প্রান্তিক এলাকা ইউনিয়নের নেতাদের গণভবনে ডেকে কথা বলার সুযোগ প্রদানের জন্য তৃণমূল নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাদের মনের কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি। লালমনিরহাট জেলার তিন বিঘা করিডর এলাকার ধলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ধলগ্রামে আমার চার শতক জায়গার ওপর একটি বাড়ি আছে। বাড়িটি আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে দিয়েছি। আপনি আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। আপনার অবদান, আপনার ঋণ আমরা কোন দিন পরিশোধ করতে পারব না। আজ যে উন্নয়ন আপনি দিয়েছেন, বাংলাদেশের সর্বত্র যে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে, আমরা অবশ্যই হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবশ্যই নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করব। নেত্রকোনো জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সনজু মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ আমাদের গণভবনে আহ্বান করে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এজন্য আমাদের লাখ-কোটি তৃণমূল নেতাকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আজ আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, আওয়ামী লীগ করে আমার আর কোন চাওয়া-পাওয়া নাই। আপনি যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমরা তাকে নির্বাচিত করব। তবে আমাদের দাবি রাজনীতিতে ত্যাগ স্বীকারকারী ব্যক্তিকে আগামীতে মনোনয়ন দেবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার জন্য কাজ করব। বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এখনও আমরা ঐক্যবদ্ধ। আপনি যাকে নৌকা দেবেন তাকে জয়ী করার জন্য আমরা কাজ করে যাব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় নৌকার প্রার্থীদের আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করে আমরা আপনার হাতকে আরও শক্তিশালী করব। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি সোলার বিদ্যুতের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে উন্নয়ন করতে চান। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশে একটি মাত্র কোম্পানি সোলার ব্যবসা করে। একটি কোম্পানি হওয়ায় অর্থের ব্যয় ও সোলারের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু করে দিচ্ছেন। এ সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুরের তিনটি আসন থেকে আমরা আপনাকে নৌকার জয় উপহার দেব। আমরা তৃণমূলের নেতারা এক ও অভিন্ন। নৌকার বিজয় নিশ্চিতের জন্য আমরা কাজ করে যাব। একে একে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যে মনোযোগ দিয়ে শুনে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন। শুধু নৌকায় ভোট আর কিছু নয়। কারও চেহারা দেখারও দরকার নাই। শুধু নৌকায় ভোট দেবেন, নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন- এটাই আপনারা প্রচার করবেন। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের উন্নয়নের তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত চিত্র করে দিয়েছি। একটা খামে তা আপনাদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এটা দিয়েই আপনারা জনগণের কাছে যেতে পারবেন, আওয়ামী লীগ কী কী উন্নয়ন করেছে তা বলতে পারবেন। শেখ হাসিনা বলেন, এলাকায় গিয়ে আপনাদের জনমত তৈরি করতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান তা অব্যাহত রাখতে হবে। আপনারা জানেন আমরা ৫৬০টি মসজিদ তৈরি করছি, সেখানে ইসলামিক কালচারাল সেন্টার হবে। আমরা প্রতিটি এলাকার উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের স্থান হবে না। সমাজের সবাইকে নিয়ে এর বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান নিতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে, কারণ এতে এক-একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
×