ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রহ্মপুত্র যমুনায় পানি বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৮ জুলাই ২০১৮

ব্রহ্মপুত্র যমুনায় পানি বেড়েছে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাত কমে আসায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিস্তার পানি প্রবাহ কমে আসায় লালমনিরহাট ও নীলফামারিতে বন্যার প্রকোপ কমেছে। তবে পানি বেড়েছে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রে। যমুনা তীরের মানুষ বন্যার আশঙ্কায় উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। টাঙ্গাইলের পৌলী নদীর ভাঙ্গনে ১৪শ’ মিটার জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সুরমা নদীর পানি তোড়ে কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার সঙ্গে অনেক এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানিতে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিামিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কুড়িগ্রাম সদর ও ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা নদীর অববাহিকার চরাঞ্চলের প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এসব এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় নৌকা ও কলাগাছের ভেলাই একমাত্র ভরসা। সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা নদীর অববাহিকার চর বড়াইবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, চর বড়াইবাড়ী গ্রামের সব বাড়িতেই বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এ অবস্থায় এসব ঘরবাড়ির মানুষ তাদের গবাদি পশু উঁচু স্থানে রেখে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঘরের উঁচু মাচান ও চৌকির ওপর রেখে বাড়িতে অবস্থান করছে। কিছু কিছু বাড়ির মানুষ পার্শ্ববর্তী উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এ অবস্থা শুধু বড়াইবাড়ী চরের নয় এমন অবস্থা এখন কুড়িগ্রাম সদর ও ফুলবাড়ী উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা নদীর অববাহিকার সকল চরাঞ্চল। বন্যাকবলিত এলাকার পানিবন্দী মানুষজন জানান, ৩ দিন ধরে বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছে। এখন পর্যন্ত সরকারী বা বেসরকারী কোন সহায়তা পাননি। সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর বড়াইবাড়ী গ্রামের ছকমত আলী, আমিনুর ইসলাম, আব্দুস ছালাম জানান, বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করায় আপাত চৌকি উঁচু করে সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে অপেক্ষা করছি। পানি আরও বৃদ্ধি পেলে বাড়ি-ঘর ছেলে পরিবার পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। চর বড়াই গ্রামের ছাবিজন জানান, কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় ৩ দিন ধরে তার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ঘরে পানির ওপর অবস্থান করছি। রান্না করতে পারছি না। উঁচু জায়গা থেকে অন্যের রান্না করা খাবার এনে কোন রকমে দিন পার করছি। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৫২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদ ১২ সেমি ও দুুধকুমোর নদীর পানি ৩ সেমি বেড়েছে। নীলফামারী ॥ উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। দুদিন আগেও যে তিস্তা গর্জে উঠে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে (৫২ দশমিক ৭১ মিটার) প্রবাহিত হয়েছিল সে তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ০৮ মিটার ) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে। এদিকে তিস্তার উজানের ঢল থেমে যাওয়ায় জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদীর অববাহিকার গ্রাম ও চর গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি ঘটেছে। তবে গত দুদিনের বন্যা ও ভাঙ্গনে এলাকার চরম ক্ষতি হয়েছে। ২১ পরিবারে ঘরবাড়ি ভেঙ্গেছে আর ৫ হাজার পরিবারের ঘরে বানের পানি প্রবেশ করেছিল। ডিমলা পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন উজানের ঢলে তিস্তার বন্যায় আমরা দেড় হাজার মানুষ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন পানি নেমে যাওয়ায় নিজ নিজ ঘরে ফিরলেও রাতে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। তিনি জানান এই বর্ষা মৌসুমে উজান হতে যখন তখন ঢল নেমে আসতে পারে। অথচ আমরা আগাম কোন বার্তা পাই না। তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ যদি এই বর্ষার সময় তিস্তাপাড়ে ২৪ ঘণ্টা বন্যার বিষয়ে আগাম বার্তা দিত তাহলে খুব ভাল হতো। এতে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হতো না। ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা বলে পরিচিত ফরেস্টের চর, সোনাখুলী, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি এলাকায় প্রায় ৫ পরিবার বসবাস করে। এখানকার রহিম শেখ বলেন আমরা তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে থাকি। ব্যারাজের স্লুইচ গেট ৪৪টি খুলে দিলে আমাদের জানানো হয় না। ফলে নদীর পানির ধাক্কা আমরা সহ্য করে বসবাস করছি। তিনিও আগাম বার্তা প্রচারের দাবি করেন। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান উজানের ঢল কমলেও তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট আমরা এখন ২৪ ঘণ্টা খুলে রেখে ঢলের পানি মোকাবেলা করছি। শনিবার ঢলের পানি কমে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাট ॥ তিস্তা নদীর পানি প্রবাহও কমতে শুরু করায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফলে দুর্গত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। শনিবার সকালে তিস্তা নদীর পানি কমে দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে ব্যারাজ কন্ট্রোল রুম সূত্র জানিয়েছে। তবে, নদী সংলগ্ন চর এলাকাগুলোতে এখনও হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এসব মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন উঁচু স্থানে বা রাস্তার ধারে আশ্রয় নেয়া পানিবন্দীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যার সঙ্গে অব্যাহত রয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গনের। ফলে ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নদীতে বিলীন হয়েছে ফসলি জমিসহ প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি। এখনো হাজার হাজার একর বিভিন্ন ফসলি ক্ষেত পানির নিচে ডুবে আছে। তবে পানিবন্দী ও নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবারের মাঝে সরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। বগুড়া ॥ যমুনার পানি প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে বেড়ে শনিবার বিকাল তিনটায় বিপদসীমা থেকে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাচ্ছে। তবে তিস্তা অববাহিকায় পানি বেড়ে যাওয়ার হার কিছুটা কমেছে। সারিয়াকান্দিতে যমুনায় শুক্রবার যে হারে পানি বাড়ছিল শনিবার তা কিছুটা কমেছে। তারপরও বন্যা মোকাবেলায় পাউবোর সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে গোদখালি ও দীঘলকান্দি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৬শ’ মিটার অংশ অনেকটা উঁচু করা হয়েছে। এদিকে বন্যার শঙ্কার যমুনা ও বাঙালী তীর এবং চরগ্রামের অনেক মানুষ আগেই শুকনো ভূমি ও উঁচু বাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। অনেক কৃষক পাটের আবাদ রক্ষায় আগাম পাট কেটে নিচ্ছে। বাঁধের মধ্যবর্তী এলাকায় ফসলের ক্ষতি হতে পারে। মানিকদাইর থেকে পাকুরিয়া পর্যন্ত কয়েকটি এলাকায় ভাঙ্গনও শুরু হয়েছে। তবে তা বিচ্ছিন্ন। কাজলা এলাকার লোকজন বলছেন, গেল তিন বছর ধরে জুলাই ও আগস্ট মাসের দিকে সারিয়াকান্দিতে যমুনার তীর ও চরগ্রামে বন্যা দেখা দেয়। এবারের উজানী ঢলের গতিবিধিও তেমনই। পাউবো জানিয়েছে, উজানের ঢলের পানি এই এলাকার ওপর দিয়েই ভাটির দিকে যাবে। ওই সময়ে বড় বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এই সময়ে যে বন্যা হবে না তাও বলা যায় না। টাঙ্গাইল ॥ বর্ষার শুরুতেই টাঙ্গাইলের পৌলী নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে নদীর বাম তীরে ৬শ’ মিটার ও ডান তীরে ৮শ’ মিটার এলাকা এবং ৮-১০টি বাড়ি নদীর পেটে চলে গেছে। ডান তীরের ভাঙন টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে পৌলী নদীতে বর্ষার পানি এসেছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে নদীর দুই তীরে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পৌলী নদীর বাম তীরে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভা ও সহদেবপুর ইউনিয়ন এবং ডান তীরে সদর উপজেলার গালা ও ঘারিন্দা ইউনিয়নের আওতায়। নদীর বাম তীরে (উত্তরাংশে) অর্থাৎ এলেঙ্গা পৌরসভার অংশে ভাঙ্গনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। গত এক সপ্তাহের ভাঙ্গনে এলেঙ্গা পৌরসভার ফটিকজানী ও মহেলা গ্রামের ৬শ’ মিটার এলাকার আবাদি জমি এবং মহেলা গ্রামের সেকান্দর আলী ও তার ভাইদের ৮-১০টি বাড়ি নদীর পেটে চলে গেছে। নদীর ভাঙ্গন চারান-লক্ষ্মীবাসা বিল উপ-প্রকল্পের বাঁধের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। বাঁধটি রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাঁধের পাশেই মহেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেলা মাদ্রাসা, মহেলা ঈদগা মাঠ ও গোরস্তান। চারান-লক্ষ্মীবাসা বিল উপ-প্রকল্পের বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে কালিহাতী উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়ি-ফসলি জমি, সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা প্লাবিত হয়ে অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে। পৌলী নদীর ডান তীরে রেলব্রিজ সংলগ্ন এলাকাটিও এলেঙ্গা পৌরসভার মহিলা আদর্শ গ্রাম (গুচ্ছগ্রাম) এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের পাছবেথইর, আগবেথইর ও শালিনা গ্রামের অংশেও ভ্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮শ’ মিটার এলাকা ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়ে বর্তমানে কম্পার্টমেন্টা-লাইজেশন পাইলট প্রকল্পের বাঁধ (টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ) ছুঁই ছুঁই করছে। এ বাঁধটি ভাঙ্গনের শিকার হলে টাঙ্গাইল শহর, গালা, ঘারিন্দা, করটিয়া ইউনিয়নসহ বাসাইল উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর-ফসলি জমি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এবং সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার ফটিকজানী জয়নাল আবেদীন, বেলায়েত হোসেন, মহেলা গ্রামের মামুনুর রশিদ, আলতাফ মিয়াসহ অনেকেই জানান, শুকনো মৌসুমে নদীর তলদেশে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করায় এখন নদী তীরের নিচে ধসে ভেঙ্গে পড়ছে। নদীতে পানি আসার সময়ই পরিস্থিতি বিবেচনায় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও কোন কার্যকারিতা দেখা যায়নি। ভাঙ্গনের খবর পেয়ে পৌলী নদী এলাকা পরিদর্শন করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট খোরশেদ আলম, কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকী প্রমুখ। এ সময় স্থানীয়দের দাবির মুখে কর্মকর্তা ও নেতারা ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ জানান, তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। জেলা প্রশাসক জানান, তিনি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছেন। পৌলী নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে দুই স্তরে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুনামগঞ্জ ॥ বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় দোয়ারাবাজার, সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চলাচলের কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুরমা নদীর পানির তোড়ে সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের কাটাখালী এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একই সড়কের কাঞ্চনপুর এলাকায় বন্যার পানিতে সড়ক ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সংস্কারের কাজ করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এদিকে বন্যার পানি না নামায় এখনও দোয়ারাবাজার-বুগলা ও দোয়রাবাজার-বাংলাবাজারের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হয়নি। পানিবন্দী অবস্থায় আছেন উত্তর সুরমার ৪টি ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক গ্রামের মানুষ। বন্যার কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। বন্যাদুর্গত ও নদী ভাঙ্গনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। অপরদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর উপজেলার সুনামগঞ্জ-হালুয়ারঘাট সড়ক। দুদিন ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলারও বেশ কিছু সড়ক ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে এলজিইডি। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুরমা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমলে দু-একদিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবহাওয়া সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
×