ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হয়ত সম্রাট বাতিল করতে হবে

মুনাফালোভী এজেন্সির জন্য বিমানের ১৫ হাজার টিকেট এখনও অবিক্রীত

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৭ জুলাই ২০১৮

  মুনাফালোভী এজেন্সির জন্য বিমানের ১৫ হাজার টিকেট এখনও অবিক্রীত

আজাদ সুলায়মান ॥ হজ এজেন্সিগুলো অতি মুনাফালোভী হওয়ার দরুন এখনও বিমানের ১৫ হাজার টিকেট অবিক্রীত রয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব টিকেট বিক্রি না হলে এবারও বিমানকে সøট বাতিল করতে হবে। কিন্তু গতবারের মতো এবার আর বাড়তি সøট বরাদ্দ দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। এ অবস্থায় এসব অবিক্রীত টিকেট নিয়ে বিমানের বিপাকে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানতে চাইলে বিমানের পরিচালক আশরাফুল আলম বলেছেন,আমরা তাগিদ দিয়েছি হজ এজেন্সিগুলোকে অবিলম্বে টিকেট সংগ্রহ করতে। অপেক্ষায় আছি তারা হয়ত টিকেট কিনে ফেলবে। জানা গেছে-১৪ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হজ ফ্লাইটের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ১৫ হাজার টিকেট এখনও অবিক্রীত রয়ে গেছে। বিমানের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সিগুলোকে টিকেট ক্রয় করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যাতে শেষ মুহূর্তে যাত্রীর অভাবে ফ্লাইট বাতিল করতে না হয়। যাতে কোন হজযাত্রীকে অনিশ্চয়তায় পড়তে না হয়। কারণ এ বছর নির্ধারিত ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহনে সৌদি আরবে অতিরিক্ত শ্লট বরাদ্দ পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে-১৪ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজযাত্রীদের সৌদি আরবে নেবে। ১৮৭ ফ্লাইটে ৬৩ হাজার ৬০০ হজযাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সৌদি আরব যেতে পারবেন। গত ৪ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৭৭৯টি টিকেট বিক্রি হয়েছে। অন্য একটি সূত্রের মতে, বৃহস্পতিবার রাতেও বেশকিছু টিকেট বিক্রি হয়েছে। সে হিসেবে তা প্রায় অর্ধ লাখে দাঁড়িয়েছে। বিমান জানিয়েছে, যেসব এজেন্সি সুনির্দিষ্ট সময়ে টিকেট কিনতে ব্যর্থ হবে তাদের হয়ত আর্থিক জরিমানা করা হবে। কিন্তু শ্লট যদি বাতিল করা হয় আর সেটা নতুন করে না পাওয়া যায় তাহলে সব হজযাত্রীকে পাঠানোটা জটিল হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে হাব মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম বলেন, এজেন্সিগুলো তাদের বিজনেস পলিসি অনুযায়ী টিকেট কিনে। এখানে আমাদের করার কি আছে। তারপরও আমি বেশ আস্থার সঙ্গে বলতে চাই গতবার এই সময়ে বিমানের মাত্র ৫ হাজার টিকেট বিক্রি হয়েছিল। আর এবার হজফ্লাইট শুরুর আগেই ৫১ হাজার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। এটা কি অনেক ভাল লক্ষণ নয়? যদিও মূলত আমাদের চাপের কারণেই এজেন্সিগুলো এতগুলো টিকেট কিনেছে। হাব-এর এই অবদান কে অস্বীকার করতে পারবে। এজেন্সিগুলো কেন একটা নির্দিষ্ট সময়ের টিকেট কিনতে অনাগ্রাহী জানতে চাইলে বিমান ও সৌদিয়ার একাধিক সূত্র জানায়, অনেক এজেন্সি এখনও মক্কা মদীনায় বাড়ি করতে পাারেনি। সেজন্য তারা টিকেট নিয়ে হজযাত্রী পাঠাবে কিভাবে ? তাছাড়া অনেকেই স্বল্প দিনের প্যাকেজ করে অতি মুনাফার আশায় শেষের দিকে হজযাত্রী পাঠাতে চায়। সেজন্য তারা মাঝামাঝি সময়ে টিকেট নিতে অনাগ্রহী। মূলত হজের ব্যয় কমানোর জন্যই হজ এজেন্সিগুলো এই কৌশল অবলম্বন করে। হজ যাত্রী পাঠানোর এই কৌশলের দরুন বিমান ও সৌদিয়াকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হয়। এ কারণে গত কয়েক বছর ধরেই বিমান ও সৌদিয়ার সিডিউল বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করায় দেন দরবার করে সৌদি আরব থেকে অতিরিক্ত শ্লট চেয়ে আনতে হয়। সৌদি আরব তখন সতর্ক করে-নির্ধারিত শ্লট বাতিল করে এজেন্সির ইচ্ছামতো সিডিউল দেয়ার আবদার রক্ষায় জেদ্দা বিমানবন্দরে নানা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ কারণে এ বছর শ্লট বাতিল করা হলে আর নতুন করে তা বরাদ্দ না দেয়ার দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সাউদিয়া এয়ারের একটি সূত্র জানায়, এজেন্সিগুলোর আবদার বিমান রক্ষা করলেও সাউদিয়া এবার আর তাতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করবে না। এ বিষয়ে বিমান সূত্র জানিয়েছে- হজের ফ্লাইট এবার সিডিউল অনুযায়ীই অপারেট করা হবে। এজেন্সিগুলোর খেয়াল খুশির কাছে আর জিম্মি হয়ে থাকার কোন অবকাশ নেই। ওদের জন্য কোন জটিলতা দেখা দিলে ওদেরকেই সেটার মাশুল দিতে হবে।
×