ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুক আস্থা হারাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ৭ জুলাই ২০১৮

ফেসবুক আস্থা হারাচ্ছে

ফের ফেসবুকের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এবার ১২০ মিলিয়ন (১২ কোটি) ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এই জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির বিরুদ্ধে। খবর দ্য ভার্জ। ক্যামব্রিজ এ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির রেশ না কাটতেই এই অভিযোগ উঠল। একজন নিরাপত্তা গবেষক দাবি করেছেন, ‘নেমটেস্টস’ নামের ফেসবুক কুইজের এক ডেভেলপারের মাধ্যমে এসব তথ্য ফাঁস হয়েছে। নিরাপত্তা গবেষক ইন্টি ডি সিউলেয়ার বলেন, ব্যক্তিত্ব-বিষয়ক কুইজ এ্যাপ নেমটেস্টস এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০১৬ সাল থেকে তৃতীয় পক্ষের কাছে ব্যবহারকারীর বিস্তারিত তথ্য জমা করেছে এ্যাপটি। ইন্টি ডি সিউলেয়ার আরও জানান, গত ১০ এপ্রিল তথ্যের অপব্যবহার নিয়ে ফেসবুক একটি বাগ বাউন্টি প্রোগ্রাম চালুর ঘোষণা দেয়। পরে তিনি সামাজিক মিডিয়া জায়ান্টটির তথ্যের অপব্যবহার হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার বন্ধুরা তৃতীয় পক্ষের যেসব এ্যাপ ব্যবহার করেন, তা নিয়েই তিনি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেন। এর অংশ হিসেবে তিনি নেমটেস্টস এ্যাপ থেকে একটি ফেসবুক কুইজে অংশ নেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন, এ্যাপটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য তৃতীয় পক্ষের কারো কাছে হস্তাস্তর করছে। ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে নাম, জন্মতারিখ, পোস্ট, স্ট্যাটাস, ছবি ও বন্ধুদের তালিকা রয়েছে। এমনকি ব্যবহারকারীর ডিভাইস থেকে এ্যাপটি মুছে ফেলার পরও তাদের তথ্য ফাঁস হচ্ছিল। উল্লেখ্য, জার্মান এ্যাপ নির্মাতা সোশ্যাল সুইটহার্টস নেমটেস্টস এ্যাপটি বানিয়েছে। ফেসবুকের তথ্য অপব্যবহারের তদন্ত ‘বিস্তৃত হচ্ছে’ রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা কর্তৃক ফেসবুক ইনকর্পোরেটেডের তথ্য অপব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান তদন্ত আরও বিস্তৃত হচ্ছে। তদন্ত ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সংবাদ জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর ফেসবুক যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং যে বিবৃতিগুলো দিয়েছে সেগুলোও তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ তিনটি সংস্থা এ তদন্তের সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার সঙ্গে তথ্য শেয়ারিং সম্পর্কে ফেসবুক যে সব বিবৃতি দিয়েছে বিস্তৃত তদন্তে সেগুলোতেই জোর দেয়া হচ্ছে। এসব বিবৃতি অন্তর্নিহিত তথ্যের সঙ্গে খাপ খায় কি না এবং বিষয়টি সম্পর্কে ফেসবুক যথাসময়ে পর্যাপ্ত পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে ও বিনিয়োগকারীদের তথ্য দিয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ফেসবুকের এক প্রতিনিধি রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের কর্মকর্তার সঙ্গে সহযোগিতা করছি। আমরা আনুষ্ঠানিক সাক্ষ্য, প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছি এবং চলমান তদন্তে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার জানিয়েছি। ফেসবুক প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার সঙ্গে শেয়ার করেছিল, যা পরে নিজেদের ব্যবসার কাজে লাগায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওই রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর কয়েকটি দেশের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ ফেসবুকের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।
×