ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চীনা পণ্যে মার্কিন শুল্ক কার্যকর

সবচেয়ে বড় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৭ জুলাই ২০১৮

সবচেয়ে বড় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু

চীনা পণ্যের ওপর তিন হাজার চারশ’ কোটি মার্কিন ডলার (দুই হাজার পাঁচশ’ ৭০ কোটি পাউন্ড) মার্কিন শুল্ক শুক্রবার থেকে কার্যকর করা হয়েছে, যা বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে সামগ্রিকভাবে একটি বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থার হুমকি দেয় চীন। খবর বিবিসি ও সিএনএনের। গণমাধ্যমকে ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, শুল্ক আরোপের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি ডলারেরও ওপরে পৌঁছাতে পারে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আরও এক হাজার ছয়শ’ কোটি মার্কিন ডলারের শুল্ক আসছে। তারপর আরও ২০ হাজার কোটি ডলার, এরপর ২০ হাজার কোটি ডলারের পরে ৩০ হাজার কোটি ডলার। সুতরাং আমরা ৫০ প্লাস, ২০০ প্লাস ও ৩০০ প্লাস নিয়ে কাজ করছি। শুল্ক কার্যকরের পর থেকে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার চীনা স্টক মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমে গেছে। ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, যদি চীনা পণ্যের ওপর বসানো শুল্ক দিতে বেজিং অস্বীকৃতি জানায় তবে আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হবে। যার পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এই সংখ্যা ধাপে ধাপে বাড়তে থাকবে বলেও জানান তিনি। চীন জানিয়েছে, তার পণ্যের ওপর প্রভাব দেখে একটি তালিকা করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করার বিষয়টি ভেবে দেখবে। প্রথম ধাপে যুক্তরাষ্ট্রের সময় ইস্টার্ন টাইম (ইটি) শুক্রবার মধ্যরাত অর্থাৎ রাত ১২টা এক মিনিট থেকে শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে। চীনের সময় শুক্রবার বিকেল থেকে শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে চীনা ব্যবসায়ীদের ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে তার মধ্যে বিমানের টায়ার ও বাণিজ্যিক ডিশওয়াশার অন্যতম। এদিকে চীন পরিকল্পনা করেছে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসাবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই ধরনের শুল্ক আরোপ হচ্ছে একটি বাণিজ্যিক গোষ্ঠীবাদ। যা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের নিরাপত্তাকে বিপজ্জনক করে তুলেছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিরোধ করে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ঘটাচ্ছে। যা বৈশ্বিক বিনিময়কে আকৃষ্টকারী মুক্ত বাণিজ্যনীতি ধ্বংস করবে। মরগান স্টেনলির হিসেবে, মার্কিন শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ প্রভাব পড়েছে। যা এক হিসেবে বৈশ্বিক জিডিপির শূন্য দশমিক এক শতাংশ। ব্যাংক হিসেবে প্রতি দশ হাজার মার্কিন ডলার আমদানিতে প্রভাব বৈশ্বিক বাণিজ্য শুল্কের প্রায় শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ ও বৈশ্বিক জিডিটির শূন্য দশমিক এক শতাংশ। বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এই উত্তেজনা অন্যান্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও প্রভাবের জন্য সাধারণভাবে সবাই উদ্বিগ্ন থাকবে। ওয়াশিংটন ভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস (পিআইআইই) প্রত্যাশা করে, চীনের পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক যা বিশেষ করে কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক্সকে লক্ষ্য করে কার্যকর করা হয়েছে তা চীন ও এশিয়ার অন্যান্য সংস্থাগুলোর তুলনায় বহুজাতিক সংস্থাগুলোকে আরও ক্ষতির সম্মুখীন করবে।
×