ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিচিত্র তথ্য

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ৬ জুলাই ২০১৮

বিচিত্র তথ্য

৯.৯৪ সেকেন্ডে গোল! অবিশ্বাস্য, অসাধারণ, অকল্পনীয়। জাপানের বিপক্ষে প্রি-কোয়ার্টার রাউন্ডের ম্যাচে বেলজিয়াম যা করে দেখাল তাতে স্তব্ধ গোটা বিশ্ব। মাত্র ৯.৯৪ সেকেন্ডে গোল! বিশ্বাসযোগ্য? বিশ্বকাপে সব থেকে দ্রুততম গোল কত সেকেন্ডে? চোখের সামনে নিশ্চয়ই ভাসছে হাকান শুকুরের ছবি। ২০০২ বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে মাত্র ১১ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন তুরস্কের হাকান শুকুর। ফিফার ভাষ্য মতে, হাকান শুকুরের গোলটিই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সব থেকে দ্রুততম। বেলজিয়ামের নাসের সালডি জাপানের বিপক্ষে গোল করলেন মাত্র ৯.৯৪ সেকেন্ডে। বলার অপেক্ষা রাখে না এটাই এখন বিশ্বকাপের সবথেকে দ্রুততম গোল! রোষ্টভ অন-ডনে ২-২ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোলের দেখা পায় বেলজিয়াম। অন্তিম মুহূর্তের গোলেই কপাল পুড়ে জাপানের। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বেলজিয়াম। আর এ জয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে হেজার্ড-লুকাকুরা। দলকে শেষ আটে উঠানোর নায়ক নাসের সাডলি। মাত্র তিন শটে জয়সূচক গোলের স্বাদ পায় বেলজিয়াম। লক্ষ্যভেদ করে সাডলি নায়ক হলেও গোলের রূপকার গোল রক্ষক কৌতিরিস। ৯৩ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে ফ্রি কিক পায় জাপান। হোন্ডার নেওয়া শট প্রথমে বাঁচিয়ে দেন কৌতিরিস। কর্ণার কিক পায় জাপান। কর্ণার কিক সামনে এগিয়ে লাফিয়ে বল তালুবন্দী করেন গোল রক্ষক। ২ সেকেন্ডে ডি বক্সের ভেতর থেকে আন্ডারআর্ম পাস দেন কেভিন ডি ব্রুনকে। বল নিয়ে দৌড় দেন ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে খেলা এ মিড ফিল্ডার। মাঝমাঠ পেরিয়ে ডানদিকে পাস দেন রাইট ব্যাক থমাস ম্যানুয়েরকে। ম্যানুয়ের বল পেয়ে ক্রস করেন সেকেন্ড ব্যবধানে। ততক্ষণে গোল পোস্টের কাছাকাছি লুকাকু ও নাসের সাডলি। নাসেরকে সাড়া দিয়ে বল ছেড়ে দেন লুকাকু। বাম পায়ে শট নিয়ে বল জাপানের জালে পাঠান নাসের। গোল! মাত্র ৯.৯৪ সেকেন্ডে। কর্ণার কিক থেকে কাউন্টার অ্যাটাক। এরপর গোল। সব কিছু এই ৯.৯৪ সেকেন্ডে। কাউন্টার এ্যাটাকে মাত্র তিন পাসে এমন গোল কি ফুটবল বিশ্ব এর আগে দেখেছে? দেখলেও এত পরিকল্পিত আক্রমণ নিশ্চয়ই ছিল না। জাপান কল্পনাতেও ভাবেনি অন্তিম মুহূর্তে এমন গোল তারা হজম করবে! ‘অভিশপ্ত’ চ্যাম্পিয়নশিপ! একটা ‘মিথ’ বারবার সত্য হচ্ছে! ফুটবল বিশ্বকাপের শিরোপাধারীরা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়বে- এ যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ তিন আসর গোটা বিশ্ব এমন মিথের ওপরই বাস করছে। ২০০২ বিশ্বকাপ থেকে ইউরোপের দলগুলো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের আসরেই বাদ পড়েছে প্রথম রাউন্ড থেকে। ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল জিনেদিন জিদানদের ফ্রান্স। ২০০২ সালে তারা বাদ পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকে। ২০০৬ সালে ইতালি চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে। ২০১০ সালে তারা দ্বিতীয় রাউন্ড খেলতে পারেনি। ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপে ইনিয়েস্তা, জাভি, রামোসরা শেষ ষোলোর টিকিট পায়নি। এবার জার্মানির সঙ্গে ঘটল এমন ঘটনা। ব্রাজিলে শিরোপা উৎসব করেছিল জার্মানি। রাশিয়ায় গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল জার্মানরা। আবার একই ঘটনা ঘটল। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হলো ক্রুস, রইস, মুলারদের। মেক্সিকোর কাছে প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে সুইডেনকে হারিয়ে নিজেদের ফিরে পায় জার্মানি। শেষ ম্যাচে ড্র করলেই হতো কিন্তু জার্মানরা ভাঙতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া রক্ষণ দুর্গ। তাতেই কপাল পুড়ে জার্মানদের। শেষ মুহূর্তের জোড়া গোলে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে পড়তে হলো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে যেন অদৃশ্য এক অভিশাপই লেগে গেছে। এটা অবশ্য বিংশ শতাব্দীতে শুরু হয়নি। ১৯৫০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল ১৯৩৮ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি। মাঝে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২ ও ১৯৪৬ এ বিশ্বকাপ হয়নি। ১৯৬২ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ১৯৬৬ সালে বাদ পড়েছিল। তাহলে কি চ্যাম্পিয়ন হলেই পরের রাউন্ডে বাদ পড়তে হবে! এটা কি শুধুই মিথ নাকি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিশাপ! ইয়াসিন
×