ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংক রিপোর্ট

ঢাকায় আরও ৫০ লাখ মানুষের আবাসনের সুযোগ আছে

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৬ জুলাই ২০১৮

ঢাকায় আরও ৫০ লাখ মানুষের আবাসনের সুযোগ আছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকায় আরও ৫০ লাখ মানুষের আরামদায়ক আবাসন ও নতুন ১৮ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, বর্তমান ঢাকাকে পরিকল্পিতভাবে পূর্বদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) ড্রেনেজে ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হলে এ সুযোগ সৃষ্টি হবে। এজন্য এখনই তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হলো- ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী সুপারিশ অনুযায়ী বালু নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ, ঢাকার পশ্চিম অংশের সঙ্গে (প্রগতি সরণী এয়ারপোর্ট রোডকে পশ্চিমের শুরু বিবেচনা করে) সঙ্গে যোগাযোগ সৃষ্টিতে সাধারণ পরিবহন ও পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো এবং পূর্বে দুই সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত নতুন ১৬ ইউনিয়নসহ সংলগ্ন এলাকাকে ‘বিজনেজ ডিস্ট্রিক্ট’ গড়ে তোলা। এজন্য প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। এটি করা গেলে বিনিময়ে ওই এলাকায় ২০৩৫ সালের মধ্যে বার্ষিক ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সৃষ্টি হবে বলে দাবি বিশ্বব্যাংকের। বিশ্বব্যাংকের ‘টুওয়ার্ড গ্রেট ঢাকা : এ নিউ আরবান ডেভেলপমেন্ট প্যারাডাইম ইস্টওয়ার্ড’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গ্লোবাল সিটির অংশ হিসেবে ঢাকাকে কীভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির ‘পাওয়ার হাউস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায়, যা এই গবেষণা প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য বলে জানায় সংস্থাটি। সাংহাইয়ের পুনবার্সিত শহর পুডংয়ের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ঢাকাকে পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ করা যায় কি না গবেষণায় সেটির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের হয়ে এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন জুলিয়া বার্ড, ইউ লি, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের চীফ ইকোনমিস্ট মার্টিন রমা, পিপিআরসির নির্বাহী হোসেন জিল্লুর রহমান এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এন্থনি জে ভেনেবলস। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষক, স্থপতি ও নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের লক্ষ্য অর্জনে ঢাকার আধুনিকায়নের তাগিদ দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলছে, যানজটের কারণে ঢাকায় দিনে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। ১৯৮০ সালের পর যান থেকে চলাচলের গড় গতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে কমে বর্তমানে ৭ কিলোমিটারে পর্যন্ত নেমে এসেছে; যেখানে পায়ে হেঁটে চলার গড় গতি হচ্ছে ৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। প্রতিদিন ঢাকায় মানুষ বাড়ছে। বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৩৫ সালে ঢাকার জনসংখ্যা হবে সাড়ে ৩ কোটি। ঢাকা এখনই প্রচুর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। সেটা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এনথনি ভেনাবল বলেন, গড় হারে প্রতিদিন ঢাকায় মানুষ বাড়ছে। যানজটসহ জলাবদ্ধতা ও অতিরিক্ত ঘনবসতির কারনে ঢাকা তার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে পারছে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের সর্বশেষ সুযোগ হতে পারে ঢাকাকে পরিকল্পিতভাবে পূর্বমুখী করা।
×