ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

অজিত রায়ের জন্মদিনে আয়োজন ‘তুমি আমার অহঙ্কার’

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৬ জুলাই ২০১৮

অজিত রায়ের জন্মদিনে আয়োজন ‘তুমি আমার অহঙ্কার’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ দেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র শিল্পী অজিত রায়। স্বদেশের প্রতি দায়বদ্ধ এই শিল্পী ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক। অনন্য কণ্ঠের এই প্রথিতযশা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুর সৃষ্টি ও সঙ্গীত পরিচালনায়ও রেখেছেন অনন্য কীর্তি। গত ২৯ জুন ছিল প্রয়াত এই সঙ্গীতজ্ঞের ৮০তম জন্মদিন। শিল্পীর জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হলো বৃহস্পতিবার। এ দিন সন্ধ্যায় গানের সুরে ও বিশিষ্টজনের কথনে সাজানো ছিল স্মরণানুষ্ঠানটি। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘তুমি আমার অহঙ্কার’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিল্পীর হাতে গড়া সংগঠন অভ্যুদয় সঙ্গীতাঙ্গন। অনুষ্ঠানের সূচনা হয় অজিত রায়ের মেয়ে শ্রেয়সী রায়ের গানের সুরে। মাধুর্যময় কণ্ঠে শ্রেয়সীর কণ্ঠে গীত হয় ‘তুমি গাও তুমি গাও হে’। গান শেষে ছিল অজিত রায়কে নিবেদিত বিশিষ্টজনদের আলোচনা। এ পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তৃতা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সুমন বসাক। আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে সঙ্গীতায়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয় অজিত রায়কে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে অজিত রায়ের সুরারোপিত গানের সুরে সাজানো ছিল এ পর্ব। একক ও সম্মেলক সুরে আশ্রয়ে এগিয়ে যায় আয়োজন। সূচনায় অভ্যুদয়ের শিল্পীরা পাঁচটি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন। একক ও অভ্যুদয়ের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া গানগুলোর শিরোনাম ছিলÑ ‘মহারাজ, এ কি সাজে’, ‘আমারে তুমি অশেষ করেছ’, ‘গভীর রজনী’, ‘দাঁড়িয়ে আছো’, ও ‘তোমায় গান শোনাবো’। এ পর্বে একক কণ্ঠে দুটি গান গেয়েছেন প্রাচী চক্রবর্তী ও চন্দ্রিমা ভৌমিক। সঙ্গীতায়োজনের দ্বিতীয় পর্বে অজিত রায়ের সুরারোপিত গানের আশ্রয়ে উঠে আসে জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত ভট্টাচার্য, মাইকেল মধুসূদন ও শামসুর রাহমানের বাণী। দলীয় কণ্ঠে গীত হয় ‘হে মহামানব, এবার ফিরে, শুধু একবার চোখ মেলো’। একক কণ্ঠে এলড্রিন গেয়ে শোনান ‘এই তো এই দেশ’, ঝুলন কুমার শুনিয়েছেন ‘মুখে মধুর বাংলা গান’, প্রিয়ম বিশ্বাস গেয়েছেন ‘ঐ চকচকে কালো’ ও সঙ্গীতা তালুকদারের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘সুখ তুমি কি’। সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া গানগুলোর শিরোনাম ছিল ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে’, ‘কার আদরের’, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’, ‘আজি সপ্তসাগর’, ‘কপোতাক্ষ নদী’ ও ‘স্বাধীনতা তুমি’। উদীচীর নৃত্য উৎসবে ‘সিধু-কানুর পালা’ ॥ ‘নৃত্যে-ছন্দে ভাঙি পাথর-সময়’ সেøাগানে বুধবার থেকে দুই দিনব্যাপী নৃত্য উৎসবের আয়োজন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উৎসবের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। এ দিন বিকেলে উৎসবের সূচনা হয় আলোচনা পর্বের মাধ্যমে। এতে অংশ নেন নৃত্যগুরু আমানুল হক, মিনু হক, শর্মিলা বন্দোপাধ্যায় ও তামান্না রহমান। বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। আলোচনা শেষে পরিবেশিত হয় সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মরণে নির্মিত নৃত্যনাট্য ‘সিধু-কানুর পালা’। উদীচীর নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশিত নৃত্যনাট্যটি নির্দেশনা দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট নৃত্য গবেষক, শিক্ষক ও পরিচালক ড. মহুয়া মুখার্জী। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের অমর পুরুষ সিধু-কানুর বীরত্ব গাঁথাকে নতুন করে উপস্থাপন করাই ছিল এ নৃত্যনাট্যের উদ্দেশ্য। এ ছাড়াও আবহমান বাংলার নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ নৃত্যশৈলী নিয়ে মঞ্চে উপস্থিত হন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত নৃত্য সংগঠন ও দল। দু দিনব্যাপী এ উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম, নৃত্যনন্দন, স্পন্দন, নন্দন কলাকেন্দ্র, নটরাজ, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, কাদামাটি নামের নৃত্য সংগঠন। সেই সঙ্গে ছিল উদীচী গোপালগঞ্জ, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলা সংসদ এবং গুলশান শাখা সংসদের নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনা।
×