ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যশোরে গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি চায় স্কুলছাত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৬ জুলাই ২০১৮

যশোরে গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি চায় স্কুলছাত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মনিরামপুরে নবম শ্রেণীপড়ুয়া ১৫ বছরের এক কিশোরী দ্বিতীয় দফা অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। এখন সে পাঁচ মাসের গর্ভবতী। যশোরের আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মেয়েটির স্বজনরা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। এর আগেও একবার সন্তান ধারণ করেছিল এই কিশোরী। সেই সময় গর্ভপাত ঘটানো হয় কেশবপুরে একটি ক্লিনিকে। অভিযোগ করা হচ্ছে, আপন চাচাত ভাই ইসরাফিল নামের এক কলেজছাত্র বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির এই সর্বনাশ করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় হৈচৈ পড়ে গেছে। জানাজানি হওয়ায় ইসরাফিল ওই মেয়েকে গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। সে এখন গা-ঢাকা দিয়েছে। স্থানীয় একটি চক্র ইসরাফিলকে রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। ঘটনাটি মনিরামপুর উপজেলার একটি গ্রামের। ইসরাফিল ওই গ্রামের খাঁপাড়ার হায়দার আলী খাঁর ছেলে। সে পাশের মাতৃভাষা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আর মেয়েটি স্থানীয় একটি হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। ওই কিশোরী জানায়, তার বাবা-মা গত পাঁচ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। মেয়েটি এখানে তার দাদির কাছে থেকে লেখাপড়া করছে। প্রায় দেড় বছর আগে ইসরাফিল তাকে ফুঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির সর্বনাশ করে। এক পর্যায়ে ওই কিশোরীর গর্ভে সন্তান আসে। টের পেয়ে ইসরাফিল কেশবপুরে একটি ক্লিনিকে নিয়ে সেই সন্তান নষ্ট করায়। এরপরও ওই মেয়ের পিছু ছাড়েনি ইসরাফিল। ফলে আবার মেয়েটি গর্ভবতী হয়। গত পাঁচ মাস ধরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। মেয়েটি ও তার স্বজনদের অভিযোগ, বিষয়টি জানাজানি হলে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী দলবল নিয়ে এলাকায় যান। তিনি সেখানে গিয়ে তাদের বিভিন্ন রকম হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। চেয়ারম্যানের লোকজন মেয়েটিকে ঘরের বাইরে আসতে দিচ্ছেন না, কারও সঙ্গে কথা বলতেও দিচ্ছেন না। ভয়ে তারা বিচার চাইতেও পারছেন না। এদিকে খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সম্প্রতি ঘটনাস্থলে যান। তারা মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সে রাজি হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চেয়ারম্যান আনছার আলী। তিনি আসার পর মেয়েটি আর কথা বলতে পারেনি। ওই কিশোরীর দাবি, সে স্ত্রীর মর্যাদা চায়, গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি চায়। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ইসরাফিল গা-ঢাকা দিয়েছে। একাধিকবার যোগাযোগ করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে যোগাযোগ করা হলে ইসরাফিলের বাবা হায়দার আলী বলেন, ‘আমি ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি। ছেলে বলেছে, এই ঘটনায় সে দায়ী না।’
×