ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৬ জুলাই ফের বৈঠক

ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল চূড়ান্ত করার পথে সংসদীয় কমিটি

প্রকাশিত: ০৮:০২, ৫ জুলাই ২০১৮

ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল চূড়ান্ত করার পথে সংসদীয় কমিটি

সংসদ রিপোর্টার ॥ গণমাধ্যমের আপত্তির মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংজ্ঞা এবং শাস্তি ও জরিমানা নির্ধারণ করে বেশ কিছু ধারায় সংশোধনী এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮ চূড়ান্ত করার দিকে এগোচ্ছে সংসদীয় কমিটি। তবে গণমাধ্যমের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আরেক দফা বসার পরেই সব চূড়ান্ত করার কথা ভাবছেন কমিটির সদস্যরা। এজন্য আগামী ১৬ জুলাই পুনরায় বৈঠকে মিলিত হবেন সংসদীয় কমিটি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। বুধবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২৪তম বৈঠকের এসব আলোচনা উঠে আসে। কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া এবং বিশেষ আমন্ত্রণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া কমিটির আমন্ত্রণে এ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ৭১ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এবং দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বৈঠকে যোগদান করেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে গণমাধ্যমের আপত্তির মুখে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৩২ ধারায় পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে সংসদীয় কমিটি। ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি শব্দ দুটি বাদ দিয়ে এ ধারাটি চূড়ান্ত করতে চাইছে তারা। বৈঠক শেষে কমিটি সভাপতি ইমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি ভাল আইন চাই। যেন সেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। তাই সকল স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে বৈঠক করছি। এই নজির খুব কমই আছে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিলটা নির্ধারণ করতে চাই যাতে কারও কোন মন খারাপ না হয়। আলোচনা যেটা হলো তাতে সমাধান বের করেছি মনে হয় অধিকাংশ দফায় তারা পজেটিভলি চিন্তা করছে। তারা ৮, ২১, ২৫, ২৮, ৩২, ৪৩, ৪৬ ধারাসহ বেশ কয়েকটি ধারায় আপত্তি তুলেছিলেন। আমরা তার ব্যাখা দিয়েছি। আশাকরি আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি চূড়ান্ত করে আগামী অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসেই উত্থাপন করতে পারব। বৈঠক শেষে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দ্বিতীয় বারের মতো বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। কমিটি কিছু সংশোধনী দিয়েছেন। তবে যেহেতু আগে পাইনি, যে কারণে আমরা প্রস্তুত ছিলাম না বলে সদুত্তর দিতে পারিনি। আমরা অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা করে আগামী বৈঠকে আমাদের ব্যাখা তুলে ধরব। তবে তাদের আলোচনার কিছু সংশোধনী ইতিবাচক বলা যায়। তবে আমাদের প্রত্যাশা আরও অনেক বেশি। সেগুলো নিয়ে আলাচনা হচ্ছে। তবে আজকের (বুধবার) বৈঠকে কমিটির সভাপতি-মন্ত্রীদের সহযোগিতার মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অনেকগুলো ধারা সম্পর্কে আপত্তি দিয়েছিলাম, আজ (বুধবার) তারা তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে। আজ আমরা আলোচনা শুরু করি নাই। আমরা টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন (এ্যাটকো) ও বিএফইউজের নেতাদের সঙ্গে বসব। সেখানে আজকের ব্যাখা তুলে ধরব এরপর আগামী বৈঠকে আমরা আমাদের কথা তুলে ধরব। তবে আমরা আশাবাদী। কমিটি সভাপতি ও দুই মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে তারা একটা ভাল আইন করবেন। মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, ডিজিটাল ফেয়ারের নামে যে নৈরাজ্য চলছে তার প্রতিকারের জন্য আইনের প্রয়োজন। সেই আইন করার ব্যাপারে আমরা ও সরকার একমত। ডিজিটাল ফেয়ারের নামে সৎ সাংবাদিকতাও একটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আইন কোনভাবেই যাতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব না করে এবং সম্প্রচার মাধ্যমকে কোনভাবেই যেন আক্রান্ত না করে সেটাই আমাদের কনসার্ন। আমরা যে প্রস্তাব করেছিলাম সেগুলো পরিবর্তন হয়েছে। তবে আমরা আমাদের অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বসে পরবর্তী বৈঠকে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরব। বৈঠকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×