ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শ্রাবণ্যের বিশ্বকাপ ফুটবল নিবেদন

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ৫ জুলাই ২০১৮

শ্রাবণ্যের বিশ্বকাপ  ফুটবল নিবেদন

দুনিয়াজুড়ে শত কোটি মানুষ এখন ফুটবল জ্বরে জবুথবু! প্রিয় দল, পছন্দের প্লেয়ার এবং ভালবাসার জার্সি এসব নিয়েই এখন মহাব্যস্ত, আমাদের প্রিয় এই নীল গ্রহের মানুষেরা। যদিও ভৌগোলিক অবস্থান এবং আকারে আমাদের মাতৃভূমি অনেকের তুলনায় ছোট, কিন্তু তাতে কি! আমাদের আগ্রহ, উন্মাদনা এবং ফুটবলের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার উদাহরণ কারও থেকে কম যায় না। সে সবের আংশিক উল্লেখ করলে লেখার বিষয়ই বদলে যাবে। আসলে আমরা ‘স্পোর্টস প্রিয়’ জাতি এতে কোন খাদ নেই! প্রায় সপ্তাহ তিনেক হলো ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ শুরু হয়েছে। উন্মাদনা কেবল যে এই তিন সপ্তাহ ধরে তা কিন্তু নয়! বরং ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই আমাদের চিন্তা-চেতনা এমন কি জাতির মনোরাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নিয়েছে উত্তেজনাপূর্ণ এই খেলা। এভাবে বলতে কোন অসুবিধা নেই কারণ, প্রিয় দলের পতাকার আদলে বাড়ির রং বদলানো কিংবা কয়েক শ’ মিটারের লম্বা গজ কাপড়ের পতাকা! মাইলকে মাইল মোটরসাইকেল শোভাযাত্র সঙ্গে অগণিত জার্সি! এসব কিন্তু একদিনের প্রস্তুতি নয়। সত্যি বলতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ এবং মানুষদের মতো আমাদেরও পূর্ণ মনোযোগ চলমান এই ফুটবল বিশ্বকাপের রঙ্গমঞ্চে। সন্ধ্যা রাতে কিংবা গভীর রাতে খেলা শুরুর বেশ আগে থেকে আমাদের ঠিকানা এখন টেলিভিশন স্ক্রিনের সামনে। নিজেদের আলাপ-আলোচনার সঙ্গে চুলচেরা বিশ্লেষণ বলতে গেলে আকাশচুম্বী! এক্ষেত্রে কেবল সাধারণেরাই নয় অসাধারণেরও সমানে পাল্লা দিচ্ছেন। টিভি পর্দায় এই সাধারণ-অসাধারণদের আলোচনার পূর্ণ খোড়াক যোগাচ্ছেন হাতেগোনা যে ক’জন তাদের মধ্যে শ্রাবণ্য তৌহিদার নাম অন্যতম। শ্রাবণ্য, বেসকারী টিভি চ্যানেল মাছরাঙার ‘কিকঅফ’-এর অন্যতম সঞ্চালিকা। তার দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপন এবং আমুদে বিশ্লেষণ দর্শকদের মোহিত করছে। এ ছাড়া শ্রাবণ্যের নিজস্ব গুণ, বুদ্ধিমত্তা এবং অসামান্য রূপের প্রভাবে দর্শকদের মনোযোগ আরও একটু গভীর করেছে। সম্প্রতি তার এই চমৎকার উপস্থাপনার হাড়ির খবর জানতে যোগাযোগ করা হয়, অকপটে তিনি দর্শকদের উদ্দেশে জানিয়েছেন কিভাবে করছেন বা পারছেন দর্শক নন্দিত প্রশংসা সূচক এই কাজটি। তার আগে একটু বলে রাখি, শ্রাবণ্য তৌহিদা একজন প্রতিষ্ঠিত চৌকস উপস্থাপিকা, মডেল, অভিনেত্রী এবং একজন পেশাদার চিকিৎসক। নয় মাস বয়সের চাঁদের মতো ফুটফুটে এক সন্তানের মা এবং একজন ব্যস্ত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের সহধর্মিণী। ছোট বেলা থেকে প্রচুর পড়াশোনার পাশাপাশি মডেলিং এবং উপস্থাপনার জন্য একটা নরম অনুভূতি তার সব সময় ছিল। এমন কি মেডিক্যালে পড়ার সময়ও আমার ভাল লাগার বিশেষ অনুভূতিটা প্রায়শই উপলব্ধি করতাম বলে তিনি জানিয়েছেন। পড়ালেখার ব্যাপারে তার পরিবার ছিল ভীষণভাবে শক্ত! ‘যখন এমবিবিএস পড়া শেষ করলাম তখন থেকে নিজের ভেতরের সুপ্ত ভালবাসাকে একটু একটু করে পরিচর্যা শুরু করলাম’। এক্ষেত্রে তার ভালবাসা এতটাই প্রবল ছিল যে, খুব অল্পতেই এই ভুবনে নিজের নাম উজ্জ্বল করেছেন। শ্রাবণ্য আলোচনায় আসেন ক্রিকেট ম্যাচের পর্যালাচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে। মাতৃত্বকালীন সময়ে কিছুকাল বিরতির পর আবার শুরু হয় তার নিরলস পথ চলা। কথা প্রসঙ্গে শ্রাবণ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয় ক্রিকেট-ফুটবলের মতো নন্দিত খেলা টিভি পর্দায় আমুদে উপস্থাপন এবং বিশ্লেষণ করছেন, আসলে এর মধ্যে কোন খেলাটা আপনার বেশি পছন্দের? শ্রাবণ্য, আমার দুটো খেলাই ভাল লাগে। আসলে কি ফুটবলটা তো চার বছর পর পর আমাদের দেশে আলোচনায় আসে। এ ছাড়া ক্রিকেট নিয়েই তো আমরা সারা সময় মেতে থাকি। মূলত ক্রিকেট খেলাই আমার বেশি পছন্দ। ফুটবল-ক্রিকেট নিয়ে অনুষ্ঠান করতে তাত্ত্বিক জ্ঞান বা কোন কর্মশালার দরকার হয়েছিল কি? না, আমি একেবারেই এসবের কিছুই করিনি। পড়াশোনা যা করার তা ইন্টারনেটের গুগল থেকে করেছি। প্রিয় দল আর্জেন্টিনা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে এখন ব্যক্তিগত কোন্ দলকে এগিয়ে রাখবেন বা সাপোর্ট করবেন। বেলজিয়ামকে এগিয়ে রাখব সঙ্গে ব্রাজিলকেও তবে আমার মনে হয় শেষ অবধি ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না! আপনার দেখা এবারের আসরের রোমঞ্চিত ম্যাচ কোন্টি? শ্রাবণ্য প্রথমেই বলব কোরিয়া-জার্মানির ম্যাচ এরপর ফ্রান্স-আর্জেন্টিনার ম্যাচ। উপস্থাপনার পাশাপাশি আর কি করছেন। মূলত সংসার, ডাক্তারি পেশা এবং উপস্থাপনা এই নিয়ে আমার সময় চলে যায় এর বাইরে যেমন টিভি নাটক বা অন্যকিছু ইচ্ছা থাকলেও হয়ে ওঠে না। সিনেমায় অভিনয় করার ইচ্ছা ? না, আমি তো আগেই বলেছি আমি সময় বেড় করতে পারি না। সিনেমা করার প্রস্তাব আসে কিন্তু আমার সুযোগ হয় না। তবে, আয়না বাজির মতো সিনেমার গল্প হলে কাজ করার ইচ্ছা আছে। এতকিছু এক সঙ্গে করে সফল হলেন কি করে? শ্রাবণ্য, আমি সব সময়ই কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাসী আর পরিশ্রম করেই এ পর্যন্ত এসেছি। সন্তান কিংবা স্বামী আপনার ক্ষেত্রে তাদের কোন অপূর্ণতা? না, শুদ্ধই (শ্রাবণ্যের ছেলে) এখন আমার ফাস্ট পাইরেটি, ওকেই বেশি সময় দিতে হয়, আর সাব্বিরের ব্যাপারে কোন অসুবিধা নেই। ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান। আমি এখন এফসিপিএসের ফাইনাল পার্টে আছি, ভবিষ্যতে একজন ভাল চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবা করতে চাই, সঙ্গে একজন সফল উপস্থাপিকা হিসেবেও নিজের নাম উজ্জ্বল করতে চাই।
×