ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শরীরের দুর্গন্ধের রহস্য উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৫ জুলাই ২০১৮

শরীরের দুর্গন্ধের রহস্য উন্মোচন

শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য সাধারণত আপনি কী করেন? গোসল করেন, ডিওডোরেন্ট, এ্যান্টি-পার্সপির‌্যান্ট, পাউডারও মাখেন। অথবা বগলের লোম কামিয়ে ফেলেন। কিন্তু গরমের দিনে শেষ পর্যন্ত কিছুই মনের মতো কার্যকর হয় না। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন তারা শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার আরও অত্যাধুনিক পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। মানুষের বগল থেকে যে ঘাম বের হয় তাতে আসলে তেমন কোন গন্ধ নেই। কিন্তু ত্বকের ওপর বাস করা একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়াই হলো যতসব গন্ধের উৎস। গন্ধহীন ঘামকে তারাই রূপান্তর করে ও মানুষের শরীরে গন্ধ ছড়ায়। ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক এবং অক্সফোর্ডের দুটো গবেষণা দল বলছে, কিভাবে এই ব্যাকটেরিয়া কাজটি করে সেই রহস্যের প্রথম ধাপ তারা উন্মোচন করেছেন। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার আরও অত্যাধুনিক পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। শরীরের ত্বকে দুই ধরনের গ্রন্থি থেকে ঘামের উৎপত্তি। শরীর চর্চা বা পরিশ্রমের ফলে যে ঘাম উৎপন্ন হয় তা তৈরি করে একরিন নামক এক গ্রন্থি। এই ঘামে দুর্গন্ধ নেই এবং তা আমাদের শরীরকে ঠাণ্ডা করে। আরেকটি হলো এ্যাপোক্রিন গ্রন্থি। যার উপস্থিতি বগল ও গোপনাঙ্গের আশপাশে। যেখানে রয়েছে অবাঞ্ছিত লোম। এখান থেকে যে ঘাম উৎপত্তি হয় তাতে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন যা দুর্গন্ধহীন হলেও ব্যাকটেরিয়ার কারণে এটি দুর্গন্ধে রূপান্তরিত হয়। খুব সামান্য এই ব্যাকটেরিয়ার মারাত্মক ক্ষমতা। যারা তাদের কাজে ওই প্রোটিনটি ব্যবহার করে। শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে সাধারণত জনপ্রিয় দুটি পণ্য হলো ডিওডোরেন্ট ও এ্যান্টি-পার্সপির‌্যান্ট। ডিওডোরেন্ট সুগন্ধি ব্যবহার করে দুর্গন্ধকে ঢেকে দেয়। এতে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী কিছু উপাদানও রয়েছে। অন্যদিকে এ্যান্টি-পার্সপির‌্যান্ট ঘামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। বলা যেতে পারে লোমকূপে এক ধরনের ছিপি এঁটে দেয়। ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্কের জীববিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ডক্টর গ্যাভিন থমাস বলছেন, ‘আমাদের শরীরে যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তার মধ্যে মাত্র কয়েকটি দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। এই ব্যাকটেরিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম স্টেফালোককাস হমিনিস। ডক্টর থমাস বলছেন, এই ব্যাকটেরিয়া যে প্রোটিনটি ব্যবহার করে, নতুন প্রজন্মের স্প্রে, রোল-অন ডিওডোরেন্টে তা প্রতিরোধী উপাদানই হবে দুর্গন্ধের নতুন অস্ত্র। কিন্তু তা যতদিন না হচ্ছে ততদিন বাতাস পরিবহনযোগ্য পরিষ্কার পাতলা পোশাক পরুন। নিয়মিত স্নান করুন। দরকারে ডিওডোরেন্ট বা এ্যান্টি-পার্সপির‌্যান্ট ব্যবহার করুন।-বিবিসি অবলম্বনে।
×