ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বাদল দিনে মনোমুগ্ধকর নৃত্যছন্দে আনন্দে আষাঢ়সন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৪ জুলাই ২০১৮

বাদল দিনে মনোমুগ্ধকর নৃত্যছন্দে আনন্দে আষাঢ়সন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাচের নান্দনিকতায় বৃষ্টিস্লাত সন্ধ্যাটি হয়ে ওঠে দারুণ আকর্ষণীয়। নূপুরের নিক্বণে শিল্পরসিকের নয়নে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেন একঝাঁক নৃত্যশিল্পী। মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে উপস্থাপিত হয় নৃত্যের মোহনীয় সৌন্দর্য। অপার আনন্দের উপলক্ষ হয়ে ওঠে ‘নৃত্যছন্দে আনন্দে আষাঢ়সন্ধ্যা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি মিলনায়তনে যৌথভাবে এ নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন নৃত্য সংগঠন স্পন্দন ও পল্লবী ড্যান্স সেন্টার। পরিবেশনার পর্ব শুরুর আগে ছিল সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অতিথি হিসেবে এ পর্বে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই) বাংলাদেশ শাখার সভাপতি নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, নৃত্যগুরু আমানুল হক, নৃত্যগুরু লায়লা হাসান, অধ্যাপক আব্দুস সেলিম প্রমুখ। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে ‘চাঁদ উঠেছে ওই’ গানের সুরে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে খুদে শিল্পীরা। এরপর ‘বনের হরিণ আয়’ গানের তালে নাচ করে স্পন্দনের শিশুশিল্পীরা। ‘ঝুমঝুম ঝুমরা নাচ নেচে কে এলো গো’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করে পল্লবী ড্যান্স সেন্টার। এ দু’টি পরিবেশনার পরিচালনায় ছিলেন মিনু হক ও অনিক বোস। এরপর অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মঞ্চে আসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বহরমপুর থেকে আসা নৃত্য সংগঠন বহরমপুর কলাক্ষেত্র। উপস্থাপিত হয় রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা নাট্যকাব্য অবলম্বনে সাজানো পরিবেশনা ‘আমি সে রমণী নহি’। মুগ্ধতা ছড়ানো দর্শকের করতালিতে অভিনন্দিত প্রযোজনাটির পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন অরিন্দম ব্যানার্জী। একই দলের দ্বিতীয় পরিবেশনাটির শিরোনাম ছিল ‘মেঘ ও আমি’। এ প্রযোজনাটিরও পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন অরিন্দম ব্যানার্জী। শিমু দে ও অভয়া দত্তের এ্যালবামের প্রকাশনা ॥ রবীন্দ্রনাথের গানে গানে সাজানো হয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন নিবেদিত দুই এ্যালবাম। শিমু দের কণ্ঠে ধারণকৃত এ্যালবামটির শিরোনাম ‘তোমায় আমায় মিলে’। আর অভয়া দত্তের গাওয়া এ্যালবামটির শিরোনাম ‘আলোক মালার সাজে’। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের এই জোড়া সঙ্গীত সঙ্কলনের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ধানম-ির ছায়ানট মিলনায়তনে। এ্যালবাম মোড়ক উন্মোচন আনুষ্ঠানিকতায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ড. ফকরুল আলম। মোড়ক উন্মোচন শেষে শিমু দে ও অভয়া দত্ত গেয়ে শোনান এ্যালবাম দুটিতে ঠাঁইপ্রাপ্ত গানগুলো। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। আটটি গানের আশ্রয়ে সঙ্কলিত হয়েছে ‘তোমায় আমায় মিলে’ এ্যালবামটি। এই সঙ্কলনের গানগুলো হলোÑ ‘পুরানো জানিয়া চেয়ো না’, ‘কেন আমারে পাগল করে যাস’, ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’, ‘কে বসিলে আজি হৃদয়াসনে’, ‘আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলেম গান’, ‘যাবার বেলা শেষ কথাটি যাও বলে’, ‘ফুল বলে, ধন্য আমি মাটির ’পরে’ ও ‘তোমার হল শুরু, আমার হল সারা’। এ্যালবামটির যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনা করেছেন হিমাদ্রী শেখর। শিমু দের কণ্ঠের মূল্যায়ন করে আনিসুল হকের মন্তব্য রয়েছে এ্যালবামটিতে। এতে আনিসুল হক বলেন, শিমু দের গাওয়া রবীন্দ্রনাথের প্রেম ও পূজা পর্বের গানগুলোয় বাণী আর সুরের সম্মিলন ঘটেছে। সঙ্গীত আয়োজন ও শিল্পীর পরিবেশনা মিলেমিশে গড়ে উঠেছে এক অপূর্ব শিল্পসৃষ্টি। গানের সঙ্গে মিশে গেছেন শিল্পী, তার সঙ্গে মিলেমিশে যাবেন শ্রোতারা। ‘আলোক মালার সাজে’ এ্যালবামটিও সঙ্কলিত হয়েছে আটটি গানের আশ্রয়ে। গানগুলো হলোÑ ‘আমি যে আর সইতে পারি নে’, ‘বাজিল, কাহার বীণা মধুর স্বরে’, ‘আজি এ নিরালা কুঞ্জে’, ‘বাজাও রে মোহন বাঁশি’, ‘ওগো কিশোর, আজি তোমার দ্বারে’, ‘দূরদেশী সেই রাখাল ছেলে’, ‘দিন শেষের রাঙা মুকুল জাগল চিতে’, ও ‘আমার একটি কথা বাঁশি জানে’। অভয়া দত্তের এ্যালবামটিতে রয়েছে প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হকের মন্তব্য। এতে মিতা হক বলেন, অভয়া দত্তের কিশোর বয়সের গান শুনেছিলাম। চমকে গিয়েছিলাম শ্রীমঙ্গলের এই মেয়েটির গায়নরীতিতে। অভয়ার হাতেখড়ি হয়েছে প-িত রাসবিহারী চক্রবর্ত্তীর কাছে। অসাধারণ মেধাবী ও সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী অসীম সঙ্গীতগুরু ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের প্রশিক্ষণ কাজে যুক্ত থেকে নিজের সঙ্গীত চেতনা ও দক্ষতাকে শাণিত করেছেন এই শিল্পী। তারই নিবিড় পরিচর্যায় অভয়ার আজকের এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা, যা শুনে শ্রোতার মন মধুর প্রশান্তিতে ভরে ওঠে।
×