ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বান্দরবানে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৪ জুলাই ২০১৮

বান্দরবানে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

এস বাসু দাশ, বান্দরবান থেকে ॥ বান্দরবানে দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে জেলা শহরের কালাঘাটার বড়ুয়াপাড়া এলাকায় এবং লামা উপজেলার সড়ই ইউনিয়নে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, জেলা শহরের প্রতিমা রানী দাশ (৪৩) এবং লামা উপজেলার সড়ই ইউনিয়নের কালাইয়া পাড়ার বাসিন্দা মোঃ মাঈন উদ্দিনের ছেলে মোঃ হানিফ (৩০), হানিফের স্ত্রী রেজিয়া খাতুন (২৫) ও মেয়ে হানিফা আক্তার (৩)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে অতি বর্ষণের ফলে জেলা শহরের কালাঘাটা এলাকায় বসতবাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়লে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। দমকল বাহিনীর কর্মীরা এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মাটির নিচ থেকে প্রতিমা রাণীর লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এদিকে ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন, পৌর মেয়র ইসলাম বেবীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বর্ষণ শুরু হলে দুপুরে লামা উপজেলার সড়ই ইউনিয়নে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ সময় মঈন উদ্দিনের বসতঘরের ওপর আচমকা পাহাড় ধসে পড়ে। এতে ঘুমন্ত মোঃ হানিফ, তার স্ত্রী ও সন্তান মারা যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা লাশ উদ্ধার করেন। পাহাড় ধসে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যুর সত্যতা সড়ই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোঃ আশ্রাফ আলী নিশ্চিত করে বলেন, তাদের ঘর থেকে পাহাড় প্রায় ২০০ ফুট দূরে। এত দূর থেকে পাহাড়ে মাটি এসে মাটির ঘর চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা আশ্চর্যজনক। এ বিষয়ে জেলার লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, পাহাড় ধসে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি । এদিকে সাংগু নদীর পানি বাড়ার কারণে বান্দরবানের পলুপাড়ায় একটি ব্রেইলি ব্রিজ পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটির এবং বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের বৈদ্যপাড়া সড়ক পথ পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, ফলে উভয় পাশে আটকা পড়ে যানবাহনসহ যাত্রীরা, আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। সড়কে চলাচলরত যাত্রীরা নৌকায় চলাচল করছে। জেলা শহরের ইসলামপুর, আর্মিপাড়া, শেরে বাংলা নগরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার কারণে স্থানীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা দেখা দেয়ার কারণে বান্দরবানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করেছে বান্দরবান পৌরসভা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে বান্দরবানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। রাঙ্গামাটিতে লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি থেকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টার ভারি বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি শহর ফের পাহাড় ধসের কবলে পড়েছে। শহরের বেশ কিছু ঝুকিঁপূর্ণ এলাকায় নতুন করে পাহাড় ধস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ রাঙ্গামাটি শহরসহ সারা জেলায় মাইকিং করে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে। এদিকে ভারি বর্ষণের ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়কের রাউজান বেরেলিয়া এলাকা পাহাড়ী ঢলে সড়কটি ডুবে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ভারি বর্ষণের ফলে জেলার কাপ্তাই লেক বেষ্টিত বাঘাইছড়ি, বরকল, লংগদু, জুড়াইছড়ি ও নানিয়াচর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ী ঢলে কাপ্তাই লেকের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ব্যাপকভাবে মৌসুমি ফসলের ক্ষতি হয়েছে ।
×