ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাল দৃষ্টিপাত নাট্যদলের ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকের মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৭:১১, ৩ জুলাই ২০১৮

কাল দৃষ্টিপাত নাট্যদলের ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ঢাকার সেগুনবাগচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় দৃষ্টিপাত প্রযোজনা ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকের মঞ্চায়ন হবে। গ্রীক ট্র্যাজিক নাট্যকার সফোক্লিসের অসামান্য নাট্যর্কম ‘ইডিপাস’ অবলম্বনে নাটক ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকটি মূল অনুবাদ শম্ভু মিত্র রূপান্তর এবং নির্দেশনা দিয়েছেন ড. খন্দকার তাজমি নূর। নাটকে অভিনয়শিল্পীরা হলেন ড. খন্দকার তাজমি নূর, অধরা প্রিয়া, আবদুল হালিম আজিজ, জাহাঙ্গীর কবির বকুল, রাাকিব হোসান ইভন, শ্রেয়া খন্দকার, রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম আজিজ, সুজন খান, নাজমুস সাধন, সুপ্তি হালদার, রাজ আহমেদ, রুনা আঁখি, সাদিয়া। নাটকের আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী নাজমুস সাধন। তিন প্রখ্যাত গ্রীক ট্র্যাজিক নাট্যকারের মধ্যে অন্যতম প্রধান সফোক্লিস, বিশ্ব নাট্যাঙ্গনে যাঁর কীর্তিময় তাৎপর্য বর্তমান শতকেও সমান প্রযোজ্য। তাঁর অসামান্য নাট্যকর্ম ‘ইডিপাস’ নিয়ে নাট্যদল দৃষ্টিপাত মঞ্চে আনে নাটক ‘রাজা হিমাদ্রি’। আত্মানুসন্ধান আর পরিচয় সংকটের যে সংগ্রাম হাজার বছর আগেও মানব অন্তরে ক্ষত সৃষ্টি করে চলছিল প্রতিনিয়ত, সময়ের ব্যবধানে আজও তা সমান প্রযোজ্য। দৃষ্টিপাত নাট্যদল ভারতের দুটি আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবসহ বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন স্থানে ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকটি উপস্থাপন করেছে। তিন প্রখ্যাত গ্রীক ট্র্যাজিক নাট্যকারের মধ্যে অন্যতম প্রধান সফোক্লিস, বিশ্ব নাট্যাঙ্গনে যাঁর কীর্তিময় তাৎপর্য বর্তমান শতকেও সমান প্রযোজ্য। তাঁর অসামান্য নাট্যকর্ম ‘ইডিপাস’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘রাজা হিমাদ্রি’। ‘রাজা হিমাদ্রি’ নাটকের গল্পে দেখা যাবে প্রচ- ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস! পশ্চিমের আকাশে এমনই কালো মেঘ করেছে যা প্রাগ্জ্যোতিষপুর বা হিমালয়ের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। ‘রাজা হিমাদ্রি’র রাজ্যের সকল প্রজারা তাই সন্ত্রস্ত এই অশুভ ঝড়ের আগমনে। সকলে ভিড় করেছে রাজপ্রাসাদের সামনে। ভীষণ এক সঙ্কটের সম্মুখীন হিমালয় পুত্র রাজা হিমাদ্রি। পৃথিবীর কেনো কিছুকেই যে কখনও ভয় করেনি আজ হঠাৎ কি এক দৈব ভীতিতে আক্রান্ত হয়ে পরে এই অসীম ক্ষমতাধর মহাপুরুষটা। কেন, কি সেই কারণ? যার জন্য তাঁর রাজ্যে আজ এই অশুভ ইঙ্গিত! নির্ভয় এই মানুষটা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই জন্ম হয় আরও নতুন কিছু প্রশ্নের। হিমাদ্রির চিন্তার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে তাঁর ‘জন্মসূত্র’, এই চিন্তার সূত্রধরে সে ছুটে চলে সমস্ত হিমালয়ের ইতিহাস জুড়ে। সৃষ্টির উৎসমুখ থেকেই পদ্মা মেঘনার স্রোতধারা ভিন্ন গতিপথে নির্ধারণ করে দিয়েছেন স্বয়ং বিধাতা; যেমনি আলো এবং অন্ধকারকে! তাই রাজা হিমাদ্রিও চায় তাঁর জন্মের নেপথ্য ইতিহাসকে অন্ধকার থেকে আলোতে উদ্ভাসিত করতে..! যত নিচ জন্মই সে হোক না কেন, তাঁর সেই বৃত্তান্ত সে জানবেই। তাঁর ধারণা রানী ইন্দ্রানী। হয়তো বংশের অভিমানে তাঁর এই হীন জন্মকথার আশঙ্কায় লজ্জিত! কিন্তু হিমাদ্রি জানে যে, সে হিমগিরির ঐর্শ্বয্যে লালিত, হিমালয় নন্দিনী পার্বতীর সন্তান এবং কালের দেবী তারই ভিন্ন রূপ মাত্র। কখনও তিনি তাঁকে তুলেছেন উচ্চে, কখনও নামিয়েছেন নিচে, তাঁর বিশ্বাস, স্বয়ং দুর্গতিনাশিনী যার প্রতীকী মাতা অসম্মানে কখনও তার সমাপ্ত হতে পারে না। মহাভারতে মহাবীর কর্ণের জন্মসূত্রও প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল তাঁর সকল আধুনিক অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা তাঁর নিষ্ঠা এবং সততাকে! গুরু পরশুরামের কাছে পরিচয় গোপন করার অপরাধে র্নিমম শাস্তি পেয়েছিলেন; যুদ্ধের চরম সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তাঁর দেয়া দিব্যাস্ত্রের মন্ত্র ভুলে গিয়ে। তাই আজ এই সঙ্কটময় পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে আলোর দিশারী রাজা হিমাদ্রির প্রত্যাশা, এই যদি হয় মানব জীবনের আদি ইতিহাস তবে কেন সে তাঁর নিজের জন্মবৃত্তান্তের গূঢ় কাহিনীকে অন্ধকার থেকে আলোতে এনে উদ্ভাসিত করবে না? ব্রহ্মার নির্দেশে ব্রহ্মপুত্রের পবিত্র জলে হাতের মাতৃরক্ত ধুয়ে পবিত্র হয়েছিলেন পর্শুরাম! তাই হিমালয়ের এই মহাসঙ্কটের মাঝে দাঁড়িয়েও হিমাদ্রির বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা নিয়তি, হায় নিয়তি আমার বিধিলিপি পূর্ণ করার পথে তুমি আমাকে চালনা কর, আমাকে আমার সম্পূর্ণতার পথে, সত্যের পথে, আলোর পথে নিয়ে চলো! হে দেব আলো চাই আমার!
×