ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফের যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি ফ্লাইট শুরুর আশ্বাস বিমানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৩ জুলাই ২০১৮

ফের যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি ফ্লাইট শুরুর আশ্বাস বিমানমন্ত্রীর

সংসদ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ দেড় যুগ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকার পর আশার বাণী শোনালেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল। তিনি জানান, আমেরিকাতে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে আমরা আগ্রহী। ছোট বিমান ক্রয় করার পর অনতিবিলম্বে আমেরিকাতে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার চেষ্টা করব। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সরকারী দলের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এমন আশার বাণী শোনান। মন্ত্রী জানান, আমরাও চাই বাংলাদেশ থেকে বিমান সরাসরি আমেরিকায় যাক। কিন্তু আমাদের বোয়িং ৭৭৭ বিমান যদি সেখানে যায় তাহলে যাত্রী পাওয়ার জন্য সেখানে অর্থাৎ আমেরিকায় ৩-৪ দিন বসে থাকতে হয়। এজন্য আমাদের বিমানের ক্রুসহ অন্য কর্মকর্তাদের আমেরিকাতেই থাকতে হয়। এতে অনেক লোকসান হয়। তাই আমরা ছোট বিমান কিনছি। আমরা ২০০-২৫০ যাত্রীবাহী বিমান কেনার পর অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ-আমেরিকা ফ্লাইট চালু করার চেষ্টা করব। বাংলাদেশ বিমান এখন লাভজনক ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ও মামুনুর রশিদ কিরণের পৃথক দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিমানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ বিমান এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। আরও বেশি লাভজনক করতে বিমানের নতুন নতুন রুট চালু করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিমানের আয়ের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা, বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা। লাভের পরিমাণ ৪৬ কোটি ৭৬ লাখ। বিমানকে লাভজনক করার জন্য বহরে নতুন বিমান যুক্ত করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী জানান, বিমান বহর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ২০০৮ সালে ১০টি উড়োজাহাজ ক্রয় চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। উক্ত চুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৪টি ৭৭৭-৩০০ইআর ২০১১ ও ২০১৪ সালে এবং ২টি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ২০১৫ সালে বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। অবশিষ্ট ৪টি ৭৮৭-৮ (ড্রিম লাইনার) উড়োজাহাজের মধ্যে ২টি উড়োজাহাজ চলতি আগস্ট ও নবেম্বর, অপর দুটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিমানের কাছে হস্তান্তরের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। তিনি জানান, অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কানাডার উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩টি টি ড্যাশ-৮কিউ৪০০ উড়োজাহাজ জি টু জি ভিত্তিতে কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তাছাড়া ফ্লাইট ফ্রিকুয়েন্সি বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য কিছু নতুন গন্তব্যে সার্ভিস সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিমান বহরে ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে দুটি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ও একটি টারবো-প্রুপ উড়োজাহাজ লিজ ভিত্তিতে সংগ্রহের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলাদেশ বিমানে যাত্রী পরিবহন ও রাজস্ব কমে গেছে এমন প্রশ্নে বিমানমন্ত্রী জানান, বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। বিমানে যাত্রী পরিবহন ও রাজস্ব আহরণের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যাত্রী পরিবহন ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে ২০১৫-১৬ বছরে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং ২০১৬-১৭ সালের পূর্বের বছর হতে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে। তিনি জানান, কয়েক বছর লাভ করার পর তিন বছর অর্থাৎ ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৭২ দশমিক ২৩, ২৭৫ দশমিক ৯৯ ও ৪৬ দশমিক ৭৬ কোটি লাভ করেছে। ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ নং ১৪৩ বলে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৩ সাল থেকে চালু হওয়া বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪৫ বছরে পদার্পণ করেছে। পর্যটন কর্পোরেশনের প্রতি বর্তমান সরকারের বিশেষ সুনজর থাকায় শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন হোটেল/ মোটেলের সংখ্যা এখন ২১টি। এছাড়া কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে ১৩টি রেস্তরাঁ ও বার রয়েছে।
×