ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রোয়েশিয়াও টাইব্রেকারে কোয়ার্টার ফাইনালে

প্রকাশিত: ১০:০২, ২ জুলাই ২০১৮

ক্রোয়েশিয়াও টাইব্রেকারে কোয়ার্টার ফাইনালে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। উত্তেজনা দেখা যায়। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত খেলা ১-১ ড্র হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়েও সমতা থাকলে টাইব্রেকারে খেলা গড়ায়। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে ক্রোয়েশিয়া। গোলরক্ষক সুবাসিচ অসাধারণ খেলেন। ডেনমার্কের তিনটি বল রুখে দেন। খেলার প্রথম মিনিটেই ডেনমার্ককে এগিয়ে দেন ম্যাথিয়াস জোরগেনসেন। কিছুক্ষণ না যেতেই ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা ডেনমার্ক তা ধরে রাখতে পারেনি। ৪ মিনিটে মারিও মানজুকিচ গোল করে ১-১ সমতায় ফেরান ক্রোয়েশিয়াকে। এরপর আর কোন গোল হয়নি। টাইব্রেকারেই খেলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন কোয়ার্টার ফাইনালে সোচিতে ৭ জুলাই স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া। সেন্ট পিটার্সবার্গে স্বপ্নের মতো শুরু হয় ডেনমার্কের। প্রথম আক্রমণেই সাফল্য মিলে যায়। নুডসেনের লম্বা থ্রো থেকে পেনাল্টি বক্সের ভেতরে বল পান ডেলানি। জটলার মধ্যেই বল এগিয়ে দেন জোরগেনসেনকে। তিনি গোলপোস্টকে লক্ষ্য করে তাৎক্ষণিক শট নেন। শট ততটা জোরালো ছিল না। তবে ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচের পায়ে লেগে জালে ঢুকে যায়। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ডেনমার্ক। এ বিশ্বকাপে যা দ্রুততম গোল। ৫৭ সেকেন্ডের সময় গোল হয়। কিন্তু এই এগিয়ে যাওয়ার ভাগ্য বেশিক্ষণ টিকেনি। মুহূর্তেই যেন ক্রোয়েশিয়া গোল পরিশোধ করে দেয়। চার মিনিটে ডি-বক্স থেকে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ব্যর্থ হন রক্ষণদুর্গের ক্রিস্টেনসেন। তারই মুখে লেগে বল ডিবক্সেই থাকে। মানজুকিচ বলটি পেয়েই জালে জড়ান। ১-১ সমতায় ফেরে ম্যাচ। চার মিনিটেই দুই গোল হয়ে যায়। এ নিয়ে বিশ্বকাপে এমন ঘটনা দুইবারই ঘটল। প্রথমবার ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা-নাইজিরিয়া ম্যাচে। এবার দ্বিতীয়বার ঘটল। ডেনমার্ক যে এগিয়ে যায়, সেই চাপ থেকে ক্রোয়েশিয়া দ্রুত মুক্তও হয়। দুই দলই সমানতালে খেলতে থাকে। আক্রমণ চলতে থাকে দুই শিবিরেই। গোল করার সুযোগ দুই শিবিরই পায়। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। ২৮তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার পেরিসিচের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক স্মেইকেল। গোলরক্ষকের হাত থেকে ফস্কে যাওয়া বলটি পেরিসিচ সঠিক শট নিতে না পারায় গোল হয়নি। ৪০তম মিনিটে ডেনমার্কের এরিকসেনের শট ক্রসবারের কোনায় লেগে বাইরে যায়। প্রথমার্ধ ১-১ সমতা নিয়েই শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই দুই দল চাপ তৈরি করতে থাকে। একবার ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণদুর্গে গিয়ে ডেনমার্ক ফুটবলাররা কাঁপন ধরান। তো আরেকবার ডেনমার্ক দুর্গে গিয়ে গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলাররা। কিন্তু গোল আর মিলে না। দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যেই নিখুঁত গতি দেখার মিলে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কোন দলই গোল দিতে পারেনি। ১-১ সমতাতেই খেলার নির্ধারিত সময় শেষ হয়। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। দুই দল গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে। তবে ডেনমার্ক যেন নতুন উদ্যমে খেলতে থাকে। একটানা আক্রমণ চালাতে থাকে। ডেনমার্ক ফুটবলারদের পায়েই বেশিরভাগ সময় থাকে বল। ডেনমার্কের গোল করার কয়েকটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কাজে লাগেনি। ক্রোয়েশিয়া সেই তুলনায় নীরবই হয়ে থাকে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১০ মিনিটতো ক্রোয়েশিয়া ফুটবলারদের খেলা খুঁজেই পাওয়া যায়নি। যেন দম নিচ্ছিলেন তারা। খেলার ১০৫ মিনিটে মানে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও খেলা ১-১ সমতায় থাকে। দ্বিতীয়ার্ধে ক্রোয়েশিয়া গতি দেখায়। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ও শেষ হওয়ার ৬ মিনিট আগে ১১৪ মিনিটে গিয়ে পেনাল্টিও পায় ক্রোয়েশিয়া। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল পেয়ে ডেনমার্ক গোলরক্ষককেও কাটিয়ে নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করেন রেবিচ। কিন্তু জোরগেনসেন ফাউল করেন। পেনাল্টি মিলে ক্রোয়েশিয়ার। সেই পেনাল্টি থেকে মডরিচ গোল করতে পারেননি! ডেনমার্ক গোলরক্ষক কেষ্পার স্মেইকেল রক্ষা করেন। জেতার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় ক্রোয়েশিয়ার। খেলার সব সময়ও শেষ হয়। টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। ডেনমার্কের এরিকসেন প্রথমেই গোল করতে ব্যর্থ হন। ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক সুবাসিচ ঢেকিয়ে দেন। বাদেলজের শটও ঠেকিয়ে দেন স্মেইকেল। তাতে ০-০ হয়। এবার ডেনমার্কের কেজায়ের গোল করেন (১-০)। ক্রোয়েশিয়ার রামারিচও গোল করেন (১-১)। ক্রোন-ডেহলি গোল করলে ডেনমার্ক এগিয়ে যায় (২-১)। মডরিচ এবার আর মিস করেননি (২-২)। স্কোন মিস করেন। ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন। তাতে ডেনমার্ক পিছিয়ে পড়ে। ২ গোল মিস হয়। পিভারিচের গোলটিও এবার রুখে দেন ডেনমার্ক গোলরক্ষক। তাতে ব্যবধান ২-২ থাকে। দুই দলেরই দুটি করে মিস হয়। নিকোলাই জোরগেনসেনও মিস করেন। ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন। ক্রোয়েশিয়ার রাকিটিচ গোল করলেই জিতে যাবে দল। গোল করেন রাকিটিচ (৩-২)। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া।
×