ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের বিরুদ্ধে রিজভী

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অমানবিক পর্যায়ে

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২ জুলাই ২০১৮

 খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অমানবিক পর্যায়ে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় রেখে তার শারীরিক অবস্থাকে সরকার অমানবিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকা সফর নিয়ে বিএনপি স্টাডি করছে। রিজভী বলেন, শনিবার খালেদা জিয়ার স্বজনরা কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা দেখে তারা বেদনাহত ও ব্যথিত হয়েছেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার একটা মওকা পেয়ে গেছে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে তার অসুস্থতাকে চরম অবনতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। খালেদা জিয়ার ঘাড়ে ও বাম হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত আর কোমর হয়ে বাম পায়ের তলা পর্যন্ত প্রচন্ড ব্যথায় তিনি অস্থির হয়ে আছেন। অস্ত্রোপচারকৃত দুটি চোখই ধূলাকীর্ণ স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে দিনকে দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে বন্দী করে হাতের মুঠোয় নিয়ে কোন অশুভ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বারবার বলা হয়েছে প্রোস্টেটিককমপেটিবল এমআরআই মেশিন, উন্নতমানের সিটি স্ক্যান, ডেক্সা স্ক্যান ফর বিএমডি (বনমেরু ডেনসিটি) টেস্ট, নার্ভ কন্ডাকশন স্টাডি ফ্যাসিলিটিজ, ইএমজি ইত্যাদি যা তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জরুরী। এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা থাকায় আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে এবং খালেদা জিয়ার স্বজনদের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁকে সুচিকিৎসা না দিতে সরকার মনে হয় শপথ নিয়েছে। আর এই উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে খালেদা জিয়াকে ক্রমাগত কষ্ট দিয়ে তাঁর জীবনকে বিপন্ন ও বিপর্যস্ত করা। আমরা আবারও দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই খালেদা জিয়ার প্রতি এই অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। তার ন্যূনতম কোন ক্ষতি হলে সরকার জনগণের ক্রোধ থেকে রেহাই পাবে না। আমি আবারও দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে সুচিকিৎসা ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও ছাত্রলীগের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, শিক্ষাঙ্গনের গণতন্ত্রবিরোধী বিপজ্জনক শক্তি ছাত্রলীগ। তিনি বলেন, সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। বেছে বেছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। রিজভী বলেন, আগে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়াটা ছিল প্রধানমন্ত্রীর তামাশা। সমগ্র জাতি এখন সেই তামাশার দৃশ্য অবলোকন করছে। মূলত, প্রধানমন্ত্রী সেদিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি বলেন, এই সময়ের ছাত্রলীগ প্রকৃত কোন ছাত্র সংগঠন নয়। এদের মধ্যে নেই জ্ঞানের আলো, শিক্ষার আদর্শ, সহমর্মিতা ও সহিষ্ণুতা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ। খালেদার মুক্তি দাবিতে রিজভীর ঝটিকা মিছিল ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজপথে ঝটিকা মিছিল করেছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিববার সকাল ৮টার দিকে বনানী এলাকায় দলের কিছু কর্মী সমর্থককে সঙ্গে নিয়ে মিছিল করেন। এর আগে কয়েক সপ্তাহ আগে রিজভী রাজধানীর শ্যামলীতে অনুরূপ একটি ঝটিকা মিছিল করেন। মিছিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী বলেন, সকালে আমরা বিক্ষোভ-মিছিল করেছি। তবে এটা পূর্বঘোষিত কোন কর্মসূচী নয়। বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তির জন্য আমরা যেকোন সময় যেকোন স্থানে বিক্ষোভ করতে পারি। এতে কর্মসূচীর প্রয়োজন হয় না। তিনি বলেন, আমি তো অনেকটা বন্দী অবস্থায় আছি। কাউকে বলে কয়ে কোথাও যাওয়া যায় না। তাই যখনই সুযোগ পাই তখনই মিছিল করে আবার পার্টি অফিসে চলে আসি।
×