ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেতন দাবিতে আমরণ অনশনে শেবাচিম কর্মচারীরা

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ২ জুলাই ২০১৮

   বেতন দাবিতে আমরণ অনশনে শেবাচিম কর্মচারীরা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সুপ্রীমকোর্ট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বেতন-ভাতা প্রদানে পরিচালকের বিরুদ্ধে গড়িমসি করার অভিযোগ এনে রবিবার সকাল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচী শুরু করেছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা। সকাল আটটা থেকে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচী শুরু করা হয়। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ২১২ কর্মচারীর এ কর্মসূচীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরণ অনশন করছেন হাসপাতালের পুরাতন কর্মচারী ও বাংলাদেশ সরকারী চতুর্থ কর্মচারী সমিতির জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। এদিকে কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও আমরণ অনশনের ফলে সকাল থেকেই জরুরী রোগী ব্যতীত সাধারণ রোগীদের সেবা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি আন্দোলনরত পরিছন্ন কর্মীরা কাজ না করায় হাসপাতালের সর্বত্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শেবাচিম হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর বিভিন্ন পদে ২১৫ কর্মচারী যোগদান করেন। ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্মচারীদের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করলে কর্মচারীরা উচ্চাদালতের রিট মামলা দাখিল করে। ওই বছরের ২২ আগস্ট উচ্চাদালত কর্মচারীদের পক্ষে রায় প্রদান করলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রীমকোর্টে আপীল করে এবং আদালত আপীলটি খারিজ করে দেয়। চলতি বছের ৬ ফেব্রুয়ারি ওই রায়টি বাস্তবায়নের জন্য পরিচালককে নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অধিদফতরের ডিজি। আদেশটি পেয়ে পরিচালক ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দফতরে কার্যাদেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে পরিচালককে গত ৪ এপ্রিল যোগদানকৃত কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি। এমনকি মামলা চলাকালে ৩০ মাস কর্মচারীদের স্থগিত সময় কর্মকাল হিসেবে গণ্য করে উক্ত সময়ের কর্মচারীরা বেতন ভাতা পাবেন বলে দাবি করে জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নিকট নির্দেশনা (জিও) প্রেরণ করেছেন পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন। ওই নির্দেশনার আলোকে জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা প্রত্যেক কর্মচারীর বহি ফিক্সেশন সম্পন্ন করেছেন। কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের সকল প্রক্রিয়া শেষ হলেও রহস্যজনক কারণে পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন বেতন-ভাতা প্রদান করছেন না। এদিকে চার মাস পূর্ব থেকে কাজে যোগদানের পর বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় ২১২ কর্মচারী পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ব্যাপারে পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মচারীরা হাসপাতালের বিভিন্ন দফতরে কাজ করে আসছেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তাদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়নি। সর্বশেষ কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য মতামত চেয়ে ফের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। . রূপগঞ্জে সড়ক অবরোধ নিজস্ব সংবাদদাতা রূপগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উত্তেজিত শ্রমিকরা প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। রবিবার বিকেলে উপজেলার যাত্রামুড়া এলাকার টিএ্যান্ডটি শার্ট ফ্যাশন লিমিটেড নামে পোশাক কারখানায় এ শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শ্রমিকরা জানায়, যাত্রামুড়া এলাকায় অবস্থিত টিএ্যান্ডটি শার্ট ফ্যাশন লিমিটেড নামে পোশাক কারখানায় দের শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। রোজার ঈদের আগে শ্রমিকদের দাবিকৃত মে মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ তা দেয়নি। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ঈদের পরে কারখানা চালু করেই বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে বলে শ্রমিকদের আশ^াস দেয়া হয়। ঈদ পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষ কারখানা চালু করেনি। রবিবার দুপুরে সকল শ্রমিক কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে বিকেল ৪টার দিকে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নেন।
×