ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ॥ ডুবে যাচ্ছে নিচু এলাকা

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২ জুলাই ২০১৮

  তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ॥ ডুবে যাচ্ছে নিচু  এলাকা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নীলফামারীর ডালিয়ার অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের বাইশপুকুর পয়েন্টে বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। ফলে নদীর পানি ৫২ দশমিক ৫৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে এবং শোঁ শোঁ শব্দ আর গর্জন তিস্তা নদী অববাহিকা কাঁপিয়ে তুলেছে। উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি হু হু করে বৃদ্ধির কারণে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায় রবিবার সকাল ৬টায় ডালিয়ার তিস্তা ব্যারাজ বাইশপুকুর পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫২ দশমিক ৫০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিন ঘণ্টা পর সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি আরও ৫ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় আরও ১ সেন্টিমিটার এবং বেলা তিনটায় আরও ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচে ৫২ দশমিক ৫৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যে কোন সময় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা অববাহিকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ৯৯ মিলিমিটার। আবার সকাল ৯টা হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ১১০ মিলিমিটার। সূত্র মতে, তিস্তা অববাহিকাসহ জেলা জুড়ে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এদিকে উজানের ঢলে পলিতে ভরে থাকা তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দেয়ায় নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার চর বেষ্টিত গ্রামগুলোর বসতঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে বলে জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জানিয়েছে। ফলে তিস্তার চরের টেপাখাড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, পূর্ব ছাতনাই, নাউতারা, ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শৌলমারীসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের বসবাসরত পরিবারগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নিরাপদে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, তার ইউনিয়নের ঝাড়সিংশ্বের এলাকায় বসবাসরত ৫ শতাধিক বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেেছ। পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভারি বর্ষণে জেলার জলঢাকা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে জলঢাকা পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের মাষ্টাপাড়া মহল্লাটি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ না পাওয়ায় জলাবদ্ধতায় পড়েছে। সেখাকার মহল্লাবাসীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
×