ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ সারা যুক্তরাষ্ট্রে

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২ জুলাই ২০১৮

ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ সারা যুক্তরাষ্ট্রে

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে শনিবার গণবিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লসএ্যাঞ্জেলেস থেকে বোস্টনসহ সব শহরে এই বিক্ষোভ হয়। যার মধ্যে অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ও ছোট ছোট শহরগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খবর গার্ডিয়ানের। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ একটি অংশে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। সূর্যের প্রখর তাপকে উপেক্ষা করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের শিশুদের মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্নকরণের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ হয়। প্রেসিডেন্টের এই নীতিমালার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনার জন্যই হাজার হাজার লোক জড়ো হন। তারা সুপ্রীমকোর্টে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে করা মামলার স্থগিতাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নিউজার্সিতে নিজের ক্লাবে গলফ খেলার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মামলাকারীদের চরম বামপন্থী ডেমোক্র্যাট বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্সির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতেই এই মামলাটি করা হয়েছে। যারা তার অভিবাসী নীতির কঠোর সমালোচক। টুইটারে ট্রাম্প বলেন, আইসিইর মহৎ ও মহান নারী-পুরুষরা আপনারা কোন চিন্তা করবেন না কিংবা কাজের গতি হারাবেন না। আপনারা আমাদের নিরাপদ রাখতে সবচেয়ে খারাপ অপরাধমূলক উপাদানগুলো নির্মূল করতে খুব ভাল কাজ করে যাচ্ছেন। তাই মহৎরা! চরম বামপন্থী ডেমোক্র্যাটরা চায় আপনাদের বের করে দিতে। পরবর্তীতে তারা সব পুলিশকে সরাতে চায়। কোন সুযোগ নেই। এটি কখনই ঘটবে না! নবেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে ট্রাম্প তার সমর্থকদের কাছে আবেদন করেছেন অভিবাসন নীতিকে প্রধান স্তম্ভ করতে। এটি প্রেসিডেন্টের বিরোধিতার মূল চাবিকাঠিও। বিশেষত ডেমোক্র্যাট দলের প্রগতিশীলদের কাছে। ওয়াশিংটনে শনিবার বিক্ষোভকারীরা হোয়াইট হাউসের কাছে লাফায়েত স্কয়ারে মিলিত হন। যা আয়োজন করে মোভ অন, দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টি ইউনিয়ন ও অপর কয়েকটি গোষ্ঠী। দ্য ফ্যামিলি বিলং টুগেদার বিক্ষোভে প্রধান বক্তা ছিলেন লিন-ম্যানুয়েল মিরান্ডা, আলিসিয়া কিয়াস ও আমেরিকা ফিরেরা। মিরান্ডা সেখানে তার জনপ্রিয় সঙ্গীত বিষয়ক হ্যামিলটন সিডির ডিয়ার থিওডোসিয়া গানটি পরিবেশন করেন। মেরিল্যান্ডের তাকোমা পার্কের জন হল্যান্ডের মত বৌদ্ধ-সমর্থিত বিক্ষোভকারীরা হাতে হাত ধরে, গান গেয়ে ও তিব্বতীয়া বোল নিয়ে গান করেন। শুরুতে বক্তারা যদি আমরা ধীরে ধীরে চলতে থাকি তবে এর আশ্চর্যজনক প্রভাব পড়তে পারে বলে বর্ণনা করেন। তারা জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি ৯৫ ফারেনহাইট (৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস) তাপ উপেক্ষা করে এখানে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানান, শুধু সঙ্গীদের সমর্থন দিতে। উপস্থিত অনেকের মত হল্যান্ড ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ন্যাশনাল মলে অনুষ্ঠিত উইমেন্স মার্চ বিক্ষোভে অংশ নেন। রাজধানী তখন পুরোপুরি বৃহৎ বিক্ষোভ এলাকায় পরিণত হয়। যার মধ্যে গত বছর অনুষ্ঠিত মার্চ ফর সাইন্স ও অতি সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে করা মার্চ ফর আওয়ার লাইভস রয়েছে। নিউইয়র্কেও বড় ধররেন র‌্যালি হয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির লসএ্যাঞ্জেলস, ডালাস, ডেনভার, শিকাগো, বোস্টন ও অপর বড় শহরে বিক্ষোভ হয়। সিনিয়র ডেমোক্র্যাটিক নেতারা বিক্ষোভে বক্তব্য দেন। বোস্টনে বক্তাদের মধ্যে ২০২০ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারনার ও কংগ্রেসম্যান জো কেনেডি থ্রি। লসএ্যাঞ্জেলসসে সিনেটর কমলা হ্যারিস, অপর সম্ভাব্য ২০২০ প্রধানরা বক্তব্য শেষ করার পর জন লেজেন্ড সঙ্গীত পরিবেশন করেন। টেক্সাসে ট্রাম্পের নিউ জার্সি ক্লাবের বাইরেও ছোট ছোট বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে প্রায় দুই শ’ লোক জড়ো হন। জাতীয় বিক্ষোভ সংগঠক আইজেন পো বলেন, এটি একটি সর্বাত্মক চেষ্টা। যা উন্মাদতার মুহূর্তকে বন্ধ করবে। এটি লাল বা নীল বিষয় নয়। আপনি যা দেখছেন তা এই প্রশাসনের নীতিগুলোর প্রত্যাখ্যান। এই মাসে ট্রাম্প জনরোষে পড়ে বিচ্ছিন্নকরণের নীতি স্থগিত করেন। তার আদেশটি অস্পষ্ট ও প্রশাসনকে মা-বাবার কাছ থেকে প্রায় দুই হাজার শিশুকে পুননির্মাণের পরিকল্পনার অভাবে সমালোচনা করা হয়েছে। প্রশাসন এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবারগুলোকে আটকানোর অধিকার দাবি করছে।
×