ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযান

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২ জুলাই ২০১৮

  সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযান

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি শহরে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সিরীয় সরকারী বাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে দেড় লক্ষাধিক মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সৈন্যদের কাছে শহরগুলোর বিরোধী প্রশাসন আত্মসমর্পণ করেছে। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। জাতিসংঘ বলেছে, শহরগুলোতে লড়াইয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে জর্দান ও ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমিসংলগ্ন সীমান্তের দিকে পালিয়ে গেছে। দুটি দেশই বলেছে, তারা কোন সিরীয়কেই তাদের সীমান্ত অতিক্রম করতে দেবে না। বিদ্রোহী যোদ্ধারা আসাদের সমর্থক রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ, দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা প্রদেশে বিরোধীদের অধিকৃত ছিটমহলগুলোতে বিদ্রোহীরা বিমান ও স্থল হামলায় দ্রুত পিছু হটছে। দারার পূর্বাঞ্চলে সিরীয় সৈন্যদের অগ্রযাত্রা এক মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি হতে পারে। দারাকে আসাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে দেখা হয়। তাই দারা পুনর্দখল সরকারের জন্য এক কৌশলগত ও প্রচারমূলক বিজয় বলে বিবেচিত হবে। এ লড়াই শুরু হয় ১৯ জুন এবং শনিবার দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়েছে। জাতিসংঘের সিরীয় দূত বলেছেন, এ লড়াই আলেপ্পো অবরোধ এবং গৌতার পূর্বাঞ্চলে গত বছরের আক্রমণের মতোই হতে পারে। এ লড়াইয়ে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জর্দানের মধ্যে গত বছর স্বাক্ষরিত অস্ত্রবিরতি অচল হয়ে পড়েছে। ওই চুক্তিতে দারাকে সংঘাতমুক্ত অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে যে, চুক্তি লঙ্ঘনে যে কোন ধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা রাখবে দেশটি। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা আক্রমণ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বিরোধী দলের মুখপাত্র ইব্রাহিম জাবাউই নীরব থেকে চুক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। জাবাউই বলেন, বিদ্রোহীদের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা আত্মসমর্পণ বিষয় আলোচনার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাদের কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে যা তারা গ্রহণ করতে পারেননি। রাশিয়া অস্ত্র হস্তান্তরের দাবি জানিয়ে বলেছে, অস্ত্র হাতে নিয়েছে এমন যে কাউকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। রাশিয়া ২০১৫-সালে এ গৃহযুদ্ধে অংশ নেয়ার পর থেকে এ সংঘাত যে দিকে গড়িয়েছে সে দিকেই সহযোগিতা যুগিয়েছে। কিন্তু কখনও কখনও তারা হস্তক্ষেপের আশ্রয় নিয়েছে যার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, ত্রাণদল ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা। সরকারী বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা হাসপাতাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে, অন্তত ৫টি শহর আত্মসমর্পণে সম্মত হয়েছে এবং সরকারী শাসন মেনে নিতে সম্মত হয়েছে। সংবাদ সংস্থাগুলো বলেছে, একটি শহর এর মধ্যেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, দারায় অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে ১শর বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের এক মানবাধিকার উপদেষ্টা জান এইজল্যান্ড এ সপ্তাহে বলেছেন, লড়াই এতটাই তীব্র হয়েছে যে, সীমান্তে ত্রাণবহরগুলো থেমে রয়েছে। তিনি সীমান্ত খুলে দেয়ার জন্য জর্দানের প্রতি আবেদন জানান।
×