ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত রবিউলের গড়া স্কুলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত পরিবার

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১ জুলাই ২০১৮

নিহত রবিউলের গড়া স্কুলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ, ৩০ জুন ॥ গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলায় নিহত গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিমের পরিবারে এখন আর আর্থিক অসচ্ছলতা নেই। রবিউল করিমের স্ত্রী সরকারী চাকরি পেয়ে তার পরিবার নিয়ে সচ্ছলভাবেই জীবনযাপন করছেন। তবে রবিউল করিমের হাতে গড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত বিশেষায়িত বিদ্যালয়টির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে তার পরিবার। ১ জুলাই নিহত রবিউল করিমের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী নিয়েছে তার হাতে গড়া ব্লুমস বিদ্যালয়ের কার্যকরী কমিটি ও এলাকাবাসী। জঙ্গী হামলায় নিহত রবিউল করিমের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদরের কাটিগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, করিমের বড় ছেলে সাজিদুল করিম তার দুই বছর বয়সী বোন কামরুন নাহার রায়নাকে নিয়ে বারান্দায় খেলা করছে। এ সময় কথা হয় প্রয়াত রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালমার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার চাকরিটি হওয়ার পড়ে মানসিকভাবে অনেকটাই ভাল আছি। তার স্বামী সম্পর্কে বলেন,আমি শুধু স্বামী হারাইনি, হারিয়েছি একজন ভাল বন্ধু। যে বন্ধুর সঙ্গে আমি সবকিছু শেয়ার করতাম। রবিউল করিমের মৃত্যুর পর তার শোক কাটিয়ে উঠলেও তার হাতে গড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত বিশেষায়িত বিদ্যালয়টির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত তার পরিবার। রবিউল করিমের শেষ ইচ্ছা পূরণে সরকারের সহযোগিতা চান তার স্ত্রী। জঙ্গী হামলায় আদরের বড় সন্তানকে হারিয়ে বৃদ্ধ মা করিমুননেছা অনেকটাই চুপ হয়ে গেছেন। বাড়িতে সাংবাদিকসহ কেউ এলেও তাদের ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তিনি বলেন, দুইটি বছর পার হয়ে গেল আমার সন্তানের সঙ্গে কথা হয় না। আমার সন্তানের মৃত্যুটি অন্যরকম। যে মৃত্যু মেনে নেয়া একজন মায়ের জন্য কষ্টের। আমার এক সন্তান হারিয়ে আরেক সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছি। সরকারের কাছে দাবি যে দায়িত্ব বড় ভাই থাকলে পালন করত। আমার ছোট সন্তানকে একটি চাকরি দিয়ে প্রশাসন সেই দায়িত্ব পালন করুক। এদিকে রবিউল করিমের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী নিয়েছে তার হাতে গড়া প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত বিশেষায়িত বিদ্যালয়টির কমিটি ও এলাকাবাসী। দিনব্যাপী এই কর্মসূচীর মধ্যে থাকবে শোক র‌্যালি, রবিউল করিমের কবর জিয়ারত ও তার ওপর আলোচনা সভা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালিয়ে দেশী ও বিদেশী নাগরিকদের জিম্মি করে জঙ্গীরা। খবর পেয়ে জিম্মিদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মানিকগঞ্জের সন্তান রবিউল করিম।
×