ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একক প্রার্থী হওয়ায় স্বস্তিতে কামরান, অস্বস্তিতে আরিফ

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩০ জুন ২০১৮

 একক প্রার্থী হওয়ায় স্বস্তিতে কামরান, অস্বস্তিতে আরিফ

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সর্বত্র এখন নির্বাচনী হাওয়া। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯ জন মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ২৭টি ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে মাঠে লড়তে নেমেছেন ১৩৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রথম দিকে ১৬৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও তাদের মধ্যে থেকে এখন পর্যন্ত ঠিকে আছেন এক নারীসহ ১৩৭ জন। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তারা মনোনয়ন দাখিল করেছেন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ৯টি পদে ৬৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার শেষ দিন পর্যন্ত ৯ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন ৬৬ জন এর মধ্যে তিনজন ছাড়া বাকি সকলেই লড়াইয়ের মাঠে থেকে গেছেন। এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই প্রার্থীরা প্রচার কাজের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে নেতা কর্মীদের নিয়ে বৈঠক শুরু করেছেন। বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের প্রার্থীদের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপনের স্থান আজকের মধ্যেই চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগ থেকে একক দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হওয়ায় স্বস্থিতে আছেন মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন কামরান। এবার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী প্রশ্নে দলের মধ্যে ঐক্যের লক্ষন দেখা যাচ্ছে। মাঠে ময়দানে কোন বিরোধ না থাকায় শুরুতেই একটি সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে। কিন্তু এক্ষেত্রে অস্বস্থিতে আছেন বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। নিজ দলের ভেতরে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও সেই সঙ্গে জোটের শরীক দল জামায়াতে ইসলামী থেকে একজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় তিনি বেকায়দায় পড়ে গেছেন শুরুতেই। আরিফুল হক চৌধুরীর পাশাপাশি মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমও মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তিনি আরিফুল হককে ছাড় দিতে নারাজ। তিনি বলেন অরিফুল হককে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ। সেলিম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন। এমনটা আসা করছেন আরিফ অনুসারীরা কিন্তু সেলিম বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমাদান পর্যন্ত নিজের অনঢ় অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছেন। নিজের দলের ভেতরে এমন প্রতিদ্বন্দ্বী রেখে অস্বস্থিতে আছেন আরিফুল হক চৌধুরী। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েও মেয়র পদে প্রার্থী দেয়নি জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ দলটির নেতারা জানান, ২০ দলের সিদ্ধান্ত মেনে তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ জামায়াত। বরং উল্টো তারা বিএনপিকেই ছাড় দেয়ার দাবি জানিয়েছে। জামায়াতকে সামাল দেয়া যাচ্ছে না। সিলেটে তারা বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করছে। তারা দলের পক্ষে জোবায়েরকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে উন্মুক্ত লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। সিলেট মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জোবায়ের বলেন, তারা নির্বাচনে আছেন এবং শেষ পর্যন্ত থাকবেন। খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে ছাড় দিলেও সিলেটে মেয়র পদে বিএনপিকে ছাড় দেবে না জামায়াত। জামায়াতের দাবি সিলেটে বিএনপির চেয়ে জামায়াতের সাংগঠনিক অবস্থা ভাল। এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবার গত নির্বাচনের পুণরাবৃত্তি হবে না জানিয়ে বলেন, গতবছর দলের কিছু ভুল বুঝাবুঝি ছিল। এবার আর সে অবস্থা নেই। এবার আর গতবারের মতো হবে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল সংগঠন। এই দলে মান অভিমান থাকতে পারে। প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। তবে এবার আমাদের মধ্যে কোন মতপার্থক্য নেই। নেত্রী যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। কামরান বলেন, আমরা এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে ঘোষণা করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করব। মনোনয়ন দাখিল শেষে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট মহানগরীর ভোটাররা আমাকে আবারও মেয়র পদে দেখতে চায়। যদি নির্বাচন যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।’ এছাড়াও দলের নেতাকর্মীসহ সিলেটের সর্ব স্তরের নেতাকর্মীদের ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ দল। এখানে মনোনয়নের লড়াই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সিলেট বিএনপি সবসময় ঐক্যবদ্ধ।
×