ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা

তৃণমূল নেতাদের আজ দিকনির্দেশনা দেবেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩০ জুন ২০১৮

 তৃণমূল নেতাদের আজ দিকনির্দেশনা দেবেন শেখ হাসিনা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা আজ শনিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত দলীয় চেয়ারম্যান, মহানগরের অধীন সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় নির্বাচিত কাউন্সিলরগণ এবং জেলা পরিষদের নির্বাচিত দলীয় সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। বর্ধিত সভায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এদিকে আগামী ৭ জুলাই গ্রামে বসবাসকারী আওয়ামী লীগ উল্লিখিত পর্যায়ের নেতাদের নিয়েও দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত সভা গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, ওয়ার্ড নেতাদের একটা বিরাট ভূমিকা থাকে। গ্রামের মানুষ কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে এ বিষয়ে এসব নেতারা দায়িত্বও পালন করেন। এবার গণভবনে তাদের ডাকা হয়েছে। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাদের সামনে রেখে নির্বাচনী দিক নির্দেশনা দেবেন এবং তাদের কথাও শুনবেন। জানা গেছে, সারাদেশে সংগঠনের অভ্যন্তরীন কোন্দল আর ব্যাপক হারে বিরোধী মতাদর্শীদের অনুপ্রবেশ নিয়ে চিহ্নিত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সারাদেশে গত সাড়ে ৯ বছরে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী মতাদর্শীরা ব্যাপক হারে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে। অতীত অপকর্ম থেকে রেহাই পাওয়া, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আগামী নির্বাচনে জনগণ থেকে দলকে বিচ্ছিন্ন করার টার্গেট নিয়ে তারা ক্ষমতাসীন দলে অনুপ্রবেশ করেছেন। অনেকে পেয়েছেন তৃণমূলে গুরুত্বপূর্ণ পদ। অন্যদিকে সারাদেশে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও এখন ভয়াবহ। অধিকাংশ সংসদীয় আসনে নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব। কেউ কারা মুখ দেখতে চান না। দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচী পৃথকভাবে পালিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে একেবারে গ্রাম পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে শুনবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে গ্রামের নেতাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, ওয়ার্ড নেতাদের একটা বিরাট ভূমিকা থাকে। গ্রামের মানুষ কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে এ বিষয়ে এসব নেতারা দায়িত্বও পালন করেন। এবার গণভবনে তাদের ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুই নেতা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। ফলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যেও জোরেশোরে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই বর্ধিত সভা হচ্ছে। এর আগে গত ২৩ জুন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, দলের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়র এবং পৌরসভা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, যে কোন দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বা কোন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিতে বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়। এবারের বর্ধিত সভায় বর্তমান সরকারের আমলে দেশের যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তা সঠিকভাবে প্রচার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকা, বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- জনগণের সামনে তুলে ধরা, ঘরে ঘরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝানো, নৌকায় ভোট দেয়ার যুক্তি তুলে ধরা, বিগত সরকারের সঙ্গে বর্তমান সরকারের তুলনামূলক উন্নয়নচিত্র তুলে নৌকার পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠনের নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের মধ্যে যারা ভাঙন সৃষ্টি করছেন বা দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখছেন তাদের বিষয়েও দিক নির্দেশনা থাকবে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের বাইরে যদি কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে চান তাদের বিষয়ে কঠোর দিক নির্দেশনা থাকবে। কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের নির্দেশনাও আসতে পারে। এছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের সাড়ে ৯ বছরের উন্নয়ন সংবলিত পুস্তিকা দেয়া হবে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের হাতে। এ বিষয়ে পড়ে জেনে যেন সাধারণ মানুষের কাছে বলতে পারে সে বিষয়েও দিক নির্দেশনা দেয়া হবে।
×