ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দখল দূষণের কবলে শুভাঢ্যা খাল

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ৩০ জুন ২০১৮

দখল দূষণের কবলে শুভাঢ্যা খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ২৯ জুন ॥ শুভাঢ্যা খালে অবৈধ দখল ও ভরাট প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় খালটি পুনরায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ইতোপূর্বে কয়েক দফা উচ্ছেদ অভিযান ও পুনঃখননের পরও দূষণ ও দখল প্রক্রিয়া চলছেই। বুড়িগঙ্গা নদীর শাখা খালটি নদীর উৎসমুখ থেকে রাজেন্দ্রপুর (১০ কিমি) পর্যন্ত ময়লা, টুকরো কাপড় ও বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে। খালটিতে দখল ও দূষণ বেড়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং কৃষকও পাচ্ছে না সেচের পানি। খালটি পুনরুদ্ধারের জন্য বিগত ৮ মার্চ ২০১৪ সালে খালটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও খালটি দূষণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও পুনঃখনন কাজ শুরু হয়নি। বরং খালটি দূষণ ও ভরাট প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়ে গেছে। রবিবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ জোড়া ব্রিজ এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর উৎসমুখ থেকে কদমতলী ব্রিজ পর্যন্ত খালের উভয়পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও বর্জ্য আবর্জনা সম্প্র্রসারণের কাজ পুনরায় শুরু করা হয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন বলেন, শুভাঢ্যা খালটি একটি ঐতিহ্যবাহী খাল। কিন্তু কালের আবর্তে এই খালটি এখন একটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকবার এ খালের পুনঃখনন ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় খালটি পুনরায় আবার দখল দূষণ ও ভরাট হয়ে গেছে। এবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ খালটি সম্মিলিত ভাবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ময়লা আবর্জনা সম্প্রসারণ ও দখল-দূষণ রোধে পুনরায় এর কাজ শুরু করেছি এবং এর শেষ না করে ঘরে ফিরছি না। তাছাড়া প্রতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে নিয়ে খালের তীরবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার ব্যবস্থাসহ এ সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যৌথ বাহিনী শুভাঢ্যা খালে বুড়িগঙ্গা নদীর মুখ থেকে চর কালীগঞ্জ এলাকা থেকে গোলাম বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের উভয়পাশে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। খালটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকারীরা খালের উভয়পাশে ১৮৬টি ছোট বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে এবং খালটি পুনরায় খনন করে সেখানে পানির নাব্য সৃষ্টি করে। এরপর খালটিতে পুনরায় দখল ও দূষণের কারণে ২০১২ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় খনন ও উদ্ধারের কাজ শুরু করে। প্রায় মাস খানেক সময়ব্যাপী খালের খনন কাজ সম্পন্ন করে। তার কয়েক মাসের মধ্যেই আবার দখল ও দূষণের ফলে খালটি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। পরবর্তীতে খালটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্ধ করেছিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড। কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটের নৌকার মাঝি জামাল মিয়া জানান, ৮-১০ বছর আগেও এ সময়ে আমরা খালে নৌকা চালিয়েছি। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমরা এখানে নৌকা চালাতে পারছি না। খালের মধ্যে ময়লা আবর্জনা ও মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় নৌকা চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
×