ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়ার মান রাখল জাপান

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২৯ জুন ২০১৮

এশিয়ার মান রাখল জাপান

রুমেল খান ॥ রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ১৬ নিশ্চিত করেছে ‘এইচ’ গ্রপের দুই দেশ জাপান-কলম্বিয়া। আর বিদায় নিয়েছে সেনেগাল। বৃহস্পতিবার ভলগ্রোদাদে অনুষ্ঠিত খেলায় পোল্যান্ড ১-০ গোলে জাপানকে এবং সামারায় অনুষ্ঠিত খেলায় একই ব্যবধানে কলম্বিয়া হারায় সেনেগালকে। জাপান নিজেদের ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতেই পারে। কারণ হেরেও তারা দ্বিতীয়পর্বে উন্নীত হয়। এ জন্য দায় তাদের পক্ষে যাওয়া সমীকরণের। ৩ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে দ্বিতীয় হয় তারা। অথচ তাদের সমান পয়েন্ট তৃতীয় স্থানে থাকা সেনেগালেরও। এমনকি স্বপক্ষ ও বিপক্ষ গোলও জাপানের মতো সমান তাদের। এছাড়া মুখোমুখি লড়াইয়েও জাপানের সঙ্গে ড্র (২-২) করেছিল তারা। তখন দু’দলের মধ্যে হলুদ কার্ড কম পেয়েছে কোন দল, সেটা নিরূপণ করা হয়। সেক্ষেত্রে সেনেগালই পিছিয়ে পড়ে। তাদের হলুদ কার্ড প্রাপ্তি ছিল জাপানের চেয়ে ২টি বেশী। আর এর সুবাদেই ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ে নকআউট পর্বে গিয়ে এশিয়ার মর্যাদা রাখতে সক্ষম হয় জাপান। এদিকে ৩ খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের পর্ব নিশ্চিত করে কলম্বিয়া। ৩ খেলায় ৩ পয়েন্ট পাওয়া পোল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল তারা যখন প্রথম দুই খেলাতেই হেরে যায়। কাজেই বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি তাদের জন্য ছিল স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার। ফলে সেই ম্যাচে জিতেও কোন লাভ হয়নি তাদের। ফিফার অষ্টম র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য ঈগলস’ খ্যাত পোল্যান্ড। ৬১ নম্বর র‌্যাঙ্কিংধারী ‘সামুরাই ব্লু’ খ্যাত জাপান। খেলায় উভয়দলই গতিশীল এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে। উভয়দলই গোল করার একাধিক সুযোগ নষ্ট করে। প্রথমার্ধে কোন দলই গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে বল নিয়ন্ত্রণে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল এশিয়ার দেশ জাপান। অথচ ৫৯ মিনিটে গোল খেয়ে বসে তারা। জাপানের ডি-বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় পোল্যান্ড। ফ্রি কিক নেন পোলিশ মিডফিল্ডার রাফাল কুরযাওয়া। সেই উড়ন্ত ফ্রি কিকের বল বক্সের ভেতর দৌড়ে গিয়ে ডান পায়ের জোরালো প্লেসিং শটে জাপানের গোলরক্ষক ইজি কাওয়াশিমাকে পরাস্ত করে জালে ঢুকিয়ে দেন পোলিশ ডিফেন্ডার জান বেদনারেক (১-০)। ইংলিশ ক্লাব সাউদাম্পটনে খেলা মাত্র ২২ বছর বয়সী এবং ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই ডিফেন্ডারের জাতীয় দলের এটাই হচ্ছে প্রথম গোল (ষষ্ঠ ম্যাচে)। গোল খেয়ে সেটা শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা (তাদের আগের সেরা সাফল্য ছিল ২০০২ ও ২০১০ আসরে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা) জাপান। কিন্তু বারবারই তাদের আক্রমণগুলো নসাৎ করে দিচ্ছিল এই আসর থেকে আগেই বিদায় নেয়া পোল্যান্ড। তাদের সেরা তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভানডোস্কির প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল সবার। কেননা জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের এই তারকা রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজ দেশের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচে কোন গোল করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় ম্যাচেও গোলহীন থেকেই বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেন তিনি। সেই সঙ্গে জাপানকে হারিয়ে সান্ত¡না ও ‘প্রেস্টিজিয়াস’ জয় নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করলো ১৯৭৪ এবং ১৯৮২ বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান অর্জন করা পোল্যান্ড। এর আগে মুখোমুখি হওয়া দুটি ম্যাচেই পোল্যান্ডকে হারিয়েছিল জাপান। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পর ২০০২ সালের মার্চে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিল জাপান। কাজেই এবার জাপানকে হারিয়ে বদলা নিল পোল্যান্ড। ফিফার ২৭ নম্বর র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য লায়ন্স টেরাঙ্গা’ খ্যাত সেনেগাল। ষোড়শ র‌্যাঙ্কিংধারী ‘দ্য ট্রাইকালার্স’ খ্যাত কলম্বিয়া। এই ম্যাচে যোগ্যতর দল হিসেবেই জয়ী হয় ২০১৪ আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা কলম্বিয়া। যদিও জিততে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাদের। খেলার ৭৫ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় তারা। কর্নার পায় কলম্বিয়া। জুয়ান ফার্নান্দো কুয়েনতিনোর কর্নার থেকে মাথা ছুইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার ইয়েররি মিনা। শেষ পর্যন্ত ওই গোলেই পূর্ণ ৩ পয়েন্ট, গ্রুপসেরা এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার আনন্দ নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
×