ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাঁস-মুরগির খামার

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৯ জুন ২০১৮

হাঁস-মুরগির খামার

বিদেশী পাখি প্রজাতির টার্কি মুরগি পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ভালুকার অনেক খামারি। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বুধবার জনকণ্ঠে। উল্লেখ্য, টার্কি মুরগির রোগ-ব্যাধি কম, মাংস খেতে সুস্বাদু ও চাষ লাভজনক হওয়ায় এই মুরগি পালন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের খামারিরা বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায়, বাড়ির ছাদে, পতিত জমিতে শেড তৈরি করে ছোট বড় ঘর তৈরি করে গড়ে তুলেছেন ছোট বড় টার্কি মুরগির খামার। আমাদের প্রতিনিধিকে একজন খামারি জানান, গত ৮ মাস পূর্বে ২০টি বড় ও ৩০টি বাচ্চা টার্কি মুরগি নিয়ে তিনি শুরু করেন এই খামার। বর্তমানে ৮-৯শ’ মুরগি রয়েছে তার খামারে। দেড় লাখ টাকা বিনিয়োগ করে এ পর্যন্ত ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করে উপার্জন করেছেন প্রায় তিন লাখ টাকা। খামারে বিক্রির উপযোগী মুরগি রয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকার মতো। এ থেকে সহজেই অনুমান করা যায় এই পোল্ট্রি ব্যবসা কতটা লাভজনক। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে ভালুকায় দিন দিন টার্কি পালন বৃদ্ধি পাছে। স্বল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় টার্কি ফার্ম করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এ অঞ্চলের খামারিরা। এর ফলে উপজেলার বেকার যুব সমাজের একটি বড় অংশ ঝুঁকছেন এ ব্যবসার দিকে। পোলট্রি শিল্প দেশে আমিষের চাহিদা পূরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। ব্যাপক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই এ শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকারী ও বেসরকারী খাতের আরও এগিয়ে আসাটাই প্রত্যাশিত। পোলট্রি শিল্পের সম্প্রসারণে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাই একসঙ্গে কাজ করলে কোন বড় বাধাই থাকবে না। দেশে এখন বছরে একজন মানুষ গড়ে ডিম খায় ৫০টির বেশি। কয়েক বছর আগেও এটা ছিল ২৫ থেকে ৩০টি। আগে মানুষ মাংস খেত বছরে গড়ে দুই কেজি। এখন এটা চার কেজিতে পৌঁছেছে। মানুষ যেভাবে পোলট্রি গ্রহণ করেছে তাতে ২০২০ সালে উৎপাদন বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করার প্রয়োজন পড়বে। ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশন প্রতি দুই বছর পর পর একটা আন্তর্জাতিক সেমিনার করে থাকে। ১৯৯৭ সাল থেকে এটা হয়ে আসছে। এখন এটা বাংলাদেশেই হয়। এখান থেকে জানার ও শেখার অনেক কিছু আছে। বিশেষ করে নতুন খামারিদের। পোলট্রি হলো পুষ্টির সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা উৎস। পোলট্রি অনেক কম জায়গায় উৎপাদন করা যায়। নিজের বাড়িতে, এলাকায় থেকেই পোলট্রি করা যায়। ঘর-সংসারের কাজ করেও এটা করা যায়। অধিকাংশ খামারে মেয়েরাই কাজ করছে। ভবিষ্যতে এ শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখবেÑ এতে কোন সন্দেহ নেই। আন্তর্জাতিক খাদ্য সংস্থার মতে, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে হবে না, এটা হতে হবে পুষ্টিবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এ ক্ষেত্রে পোলট্রি ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। বাংলাদেশে যেমন পোলট্রি খাদ্য উৎপাদিত হয়, তেমনি বিদেশ থেকেও আমদানি হয়। সব ধরনের পোলট্রি খাদ্যের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতন থাকা প্রয়োজন। এ জন্য দরকার টিমওয়ার্ক। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে এবং সতর্ক থাকলে পোলট্রির ডিম ও মাংসের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত হবে, তা বলাই বাহুল্য।
×