ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্কুলছাত্রী খুন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৮ জুন ২০১৮

চট্টগ্রামে ধারালো  অস্ত্রের আঘাতে  স্কুলছাত্রী খুন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যাকা-ের ঘটনা বেড়েছে। সর্বশেষ বুধবার সকালে নগরীর চকবাজারস্থ মেরন সান স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ইলহাম বিনতে নাছির (১২) হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন উঠেছে, মেয়ে গলা কাটা দেখে মা নাসরিন আক্তার কেন আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন। ছুরি দিয়ে নিজের গলা না কেটে কেন হাত কেটেছেন। এমনকি হাতটিও ব্যান্ডেজ করা তা প্রত্যক্ষ করেছে পুলিশসহ আগত সকলে। আলমারি ভেঙ্গে দুর্বৃত্তরা ৫ভরি স্বর্ণালঙ্কর নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন ইলহামের মা নাসরিন। তবে আশপাশে কারও সঙ্গে তার কোন শত্রুতা ছিল না বলেও জানান। এদিকে, বাকলিয়া থানা পুলিশসহ সিএমপির কয়েক কর্মকর্তা, ডিবি, পিবিআই ও সিআইডির বিভিন্ন টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশের হিসেব অনুযায়ী গত ১০ দিনে ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩টি। এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নগরীর অক্সিজেন এলাকায় বন্ধুর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে অনিক (২০) নামের আরেক তরুণ। গত ১৭ জুন ছোট ভাই রনিকের মোটরসাইকেলের হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে নগরীর ব্যাটারি গলিতে স্থানীয় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে রনিকের বড় ভাই অনিক (২৫)। তবে অনিক হত্যার ঘটনায় পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তুষার ও এখলাসকে ভারতীয় পুলিশের মাধ্যমে বেনাপোল থেকে গ্রেফতার করার পর জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম আদালতের আল ইমরানের আদারত এ দুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বাকলিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বাকলিয়ার ল্যান্ডমার্ক সোসাইটির লায়লা ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় বুধবার সকালে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে এক প্রবাসীর বাসায় ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারে মেরনসান স্কুলের শিক্ষার্থী ইলহাম নামের এক শিশু খুনের ঘটনা ঘটেছে। তাদের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ার ঢেমশায়। তার বাবা নাছির সৌদি প্রবাসী। ইলহামের মা নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মেঝো মেয়ে জারিন বিনতে নাছিরকে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় ইলহাম ঘুম থেকে উঠেছে কিন্তু কোলের মেয়ে ইননাস বিনতে নাসির ঘুম থেকে উঠেনি। ইলহামের পাশের কক্ষেই ঘুমাচ্ছিল সে। জারিনকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘরের দরজা বন্ধ করার জন্য ইলহামকে তার মা বলেও গিয়েছেন। কিন্তু ইলহাম দরজা বন্ধ করেছে কিনা তা তিনি জানেন না। সকাল ৯টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। কক্ষের আলমারি খোলা, বিছানাপত্র এলামেলো। ইলহাম তার কক্ষে বিছানার উপর বালিশে মুখ ঢেকে সে শুয়ে আছে। ঘুমিয়ে আছে মনে করে ইলহামকে ডাকা শুরু করলে তার কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় সন্দেহ হয়। পরে বালিশ উল্টিয়ে দেখেন ধারালো অস্ত্রে তাকে জবাই করা হয়েছে। তখন দ্রুত তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। অপরদিকে, নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় মঙ্গলবার রাতে বন্ধুর হাতে ছুরিকাঘাতে বন্ধু খুনের ঘটনা ঘটেছে। আতুরার ডিপো এলাকায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অনিক (২২) ও অনিকের বন্ধু সম্রাট (২১) ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের চমেক হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
×