ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার শেষ ষোলোতে কঠিন চ্যালেঞ্জ মেসি-রোনাল্ডোর

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৮ জুন ২০১৮

 এবার শেষ ষোলোতে কঠিন চ্যালেঞ্জ  মেসি-রোনাল্ডোর

জাহিদুল আলম জয় ॥ এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় দুই তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসি। এরপরেই আছেন নেইমার। কিন্তু তিন সুপারস্টারকেই প্রথম রাউন্ডে সংগ্রাম করতে হয়েছে। যে কারণে ধুঁকতে হয়েছে তাদের দলকেও। গ্রুপের শেষ ম্যাচে অনেক নাটকীয়তার পর দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট কেটেছে আর্জেন্টিনা ও পর্তুগাল। তাইতো সারাবিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলভক্তের উন্মাদনাও অব্যাহত আছে। প্রথম রাউন্ডের গ-ি পেরুনোর পর এখন স্বস্তি দলগুলোর ভক্ত-সমর্থকদের। বিশেষ করে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। এ যাত্রায় হাফ ছেড়ে বাঁচলেও স্বস্তিতে থাকার সুযোগ নেই। কেননা এবার শুরু হচ্ছে নকআউট পর্বের লড়াই। এখানে আর সুযোগ নেই ড্র বা হারের। জিততে না পারলেই তল্পিতল্পা গুছিয়ে রাশিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। ‘ডি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা প্রত্যাশিতভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায় শেষ ষোলোতেই মেসিদের খেলতে হচ্ছে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৮টায় কাজানে হবে এই মহারণ। এর ফলে আর্জেন্টিনা বা ফ্রান্সের মতো টপ ফেবারিটের একটিকে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নিতে হবে। শনিবার রাত ১২টায় আরেক প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে ও পর্তুগাল। ‘বি’ গ্রুপে মেসিদের মতো সেরা হতে পারেনি রোনাল্ডোর পর্তুগীজ দল। যে কারণে উরুগুয়ের মতো পরাশক্তির বিরুদ্ধে সেরা ষোলোতেই দেখা হচ্ছে। তাইতো এ দল দু’টির একটিকেও বিদায় নিতে হবে শেষ আটের আগেই। তার মানে, কোনরকমে গ্রুপপর্বের বাধা পেরুলেও প্রিকোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যেতে পারে মেসি-রোনাল্ডোর। তাইতো দুই তারকাই পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে বাঁচামরার ম্যাচে উতরে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে মেসির। ম্যাচ শেষে আবেগতাড়িত আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, আমরা জানতাম সৃষ্টিকর্তা আমাদের সঙ্গেই আছেন। আমাদের এখান থেকেই বাদ পড়তে দেবেন না। এমন স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ আমি আগে খেলেছি কিনা মনে পড়ছে না। এটি এমন এক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছিল যেখানে আমাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যায়। তবে এসব নিয়ে আর ভাবতে চান না ক্ষুদে জাদুকর। ফাড়া কাটানোর পর আরেকবার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তিনি। তার আগে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখছেন। মেসির মতে, ফরাসী বাধা টপকাতে পারলে আর্জেন্টিনার ফাইনালে খেলার সামর্থ্য আছে। তবে ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়নদের সমীহ করছেন মেসি। এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ফ্রান্সের প্রতিটি ম্যাচ দেখেছি। দক্ষ খেলোয়াড় সমৃদ্ধ খুব ভাল একটি দল তারা। ওদের কয়েকজন গতিময় খেলোয়াড় আছে যারা সত্যিই ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। তবে আমি জানি আমাদের কি করতে হবে। কোন সন্দেহ নেই, এটা খুব কঠিন একটি ম্যাচ হবে। মজার বিষয় হচ্ছে, ২০১৪ সালে গ্রুপপর্বে নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে সর্বশেষ গোল করেছিলেন মেসি। চার বছর পর সেই দলটির বিরুদ্ধেই বিশ্বকাপে প্রথম গোল পেয়েছেন। গোলটি আবার রাশিয়া বিশ্বকাপের শততম। এর ফলে মেসির বিশ্বকাপে গোলসংখ্যা হয়েছে ৬টি। এর মধ্যে তিনটিই নাইজিরিয়ার বিপক্ষে। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে শততম গোল করেছিলেন ব্রাজিলের নেইমার। আর ২০১০ বিশ্বকাপে শততম গোলটি করেছিলেন স্পেনের আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। মেসির মতো দ্বিতীয় রাউন্ডেই কঠিন বাধা রোনাল্ডোর। শক্তিশালী উরুগুয়ে ইতোমধ্যেই হুঙ্কার ছেড়েছে। শেষ গ্রুপ ম্যাচে ইরানের বিরুদ্ধে খুব একটা ভাল করতে পারেনি পর্তুগাল। ওই ম্যাচে রোনাল্ডো পেনাল্টি মিস করেন। যে কারণে পাঁচ গোল নিয়ে শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের হ্যারি কেনকে ছুঁতে পারেননি। সবচেয়ে বড় কথা, এ জন্য তার দল জিততে পারেনি। আর গ্রুপের সেরা হতে পারেনি ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল রাশিয়াকে পেত পর্তুগাল। সেটা না হওয়ায় এখন সব দায় রোনাল্ডোর কাঁধে। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে তাকেই জ্বলে উঠতে হবে। কঠিন এ পরীক্ষা সি আর সেভেন উতরাতে পারেন কিনা সেটা জানা যাবে শনিবার মধ্যরাতে।
×