ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ খেলায় মেয়েরা

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৮ জুন ২০১৮

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ খেলায় মেয়েরা

বাংলাদেশের নারীরা বাঘিনীর মতো গর্জে বাংলার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তুলেছে। বঙ্গ ললনারা এশিয়া কাপ ক্রিকেট খেলায় ভারতকে হারিয়ে দেশের জন্য নিয়ে এসেছে জয়ের মালা। বাঘিনীদের এই বিজয় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদার মাত্রা আরেকটু বাড়িয়ে দিল। শাবাশ বাংলাদেশ। আসলে নারী পারে না এমন কোন কথা নেই। নারীরা কিন্তু সবই পারে কারণ নারী শক্তি, নারী সৃষ্টি। আমাদের এই ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ী সমাজ চরমভাবে নারীবিরোধী। এ সব ধর্ম ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে নারীদের ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে নারীদের দাবিয়ে রাখতে চায়। নারীর প্রতি আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ভাল নয়। আমাদের সমাজে দেখবেন ছেলে শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহিত করা হয়। আর মেয়ে শিশুর হাতে কাপড়ের পুতুল ধরিয়ে দেয়া হয় ছেলেরা অবাধে মাঠে খেলতে পারে কিন্তু মেয়েরা মাঠে খেলতে পারে না। মেয়ে যদি সাইকেল চালায় তখন তাকে নিন্দা করা হয়, বিদ্রƒপ করে তাকে ‘মদ্দা’ বলা হয়। মেয়ে যদি গাছে চড়ে তখন তাকে গেছো বলা হয়। এভাবে সকল কাজে মেয়েদের বাধা দেয়া হয়। মেয়েদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি মোটেই ভাল নয়। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের অধিক অংশগ্রহণ করতে হলে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে সব বিদ্যালয়ে ক্রীড়া শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে হবে, বিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্রীড়া সামগ্রী থাকতে হবে। খেলার জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে। এ সময় ক্রীড়া শিক্ষক মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেবে। সারা দেশে জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা বিদ্যমান আছে। এসব ক্রীড়া সংস্থা মেয়েদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। প্রতি বছর মেয়েদের ফুটবল লীগের আয়োজন করবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেসা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু আছে। এই টুর্নামেন্টকে আরও বেগবান করতে হবে। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লা ও বিভিন্ন শহরে ফুটবল ক্লাবসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া ক্লাব রয়েছে। এসব ক্লাবে মহিলা ফুটবল দল রাখতে হবে। এসব ক্রীড়া সংস্থা ও বিভিন্ন ক্লাব যদি নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়ানুষ্ঠান চালু রাখে এবং নারীদের অবাধে অংশগ্রহণ থাকে তাহলে ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। অপর দিকে ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারীদের চাকরি ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তা ছাড়া নারী অগ্রযাত্রায় সকল বাধা অতিক্রম করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো বখাটেদের দৌরাত্ম্য। এসব বখাটের উৎপাত বন্ধ করতে হবে। এবং সমাজে নারী দমন ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করতে হবে। সোজা সাপটা কথা হলো একটি নারীবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে এ দেশের নারীরা খেলাধুলায় যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত রাখতে পারবে। গীর্জাপাড়া, মৌলভী বাজার থেকে
×