ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং খাত সংস্কারে আগামী মাসে সিদ্ধান্ত ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৭ জুন ২০১৮

ব্যাংকিং খাত সংস্কারে আগামী মাসে সিদ্ধান্ত ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাজেট আলোচনায় সংসদে জাতীয় পার্টির অনেক সদস্যের মন্তব্য উগ্র ছিল বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, বিরোধীদল হিসেবে সমালোচনা করা যায়, কিন্তু সরকারের অংশ হয়ে তাদের সদস্যরা যেভাবে কথা বলেছেন তা বেখাপ্পা মনে হয়েছে। কারণ সংসদে যখন বাজেট উপস্থাপন করা হয়, তখন তাদের মন্ত্রীরাও আমাদের সঙ্গে থাকেন। মনে রাখা উচিত, তারা বিরোধীদল হলেও সরকারের অংশ। তাদের দলের ক্যাবিনেট সদস্যরাও প্রস্তাবিত বাজেটে অনুমোদন দিয়েছেন। সুতরাং এটা আমার একার বাজেট নয়। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় তিনি আরও বলেন, আগামীকাল ২৮ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট অনুমোদন ও পাস হবে। আর এরও একদিন আগে অর্থাৎ আজ বুধবার অর্থবিল সংসদে পাস হচ্ছে। এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করার সময় নির্ধারণ করা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নিদের্শনা নিয়েই বাজেটে কোন পরিবর্তন আনা প্রয়োজন কি না সে বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করা হবে। প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার (যা জিডিপির ১৮.৩ শতাংশ) বিশাল বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। মুহিত বলেন, আজ বুধবার খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। বাজেট পাসের তারিখ এগিয়ে আনা হলো কেন, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শনি, রবিবারে আর যেতে চাইনি। ২৮ তারিখে শেষ করে দিব। আমরা ইচ্ছা করলে ৩০ তারিখে বাজেট পাস করতে পারতাম। এক দিন হয়তো বাড়ানো যেত। কিন্তু সেটা করা হয়নি। ব্যাংকিং খাত সংস্কারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী মাসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাত নিয়ে সমালোচনা রয়েছে এটা থাকুক। এর প্রতিউত্তর আমি যথা সময়ে দেব। এ বিষয়ে আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন, ব্যাংকের বিষয়ে সবচেয়ে বড় যে অভিযোগ সেটা হচ্ছে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া। এ ব্যাপারে কিছু করতে হবে। ব্যাংকের লুটপাট বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি একমত নই। লুটপাট মানে হচ্ছে ব্যাংকের সম্পদ ব্যাংকের পরিচালকরা নিয়ে নিচ্ছেন। এমনটি হচ্ছে না। তবে এক্ষেত্রে একটা খারাপ দিক রয়েছে। সেটি হচ্ছে এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালকদের সঙ্গে সমঝোতা করে ঋণ নিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে অন্য স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পর আগামীকালসহ ১৯ দিন সংসদে এ আলোচনা হবে। এ সময়ে সংসদের বাইরে বিভিন্ন গণমাধ্যম, ব্যবসায়ী সমিতি, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ফোরামে যেসব মন্তব্য ও পরামর্শ এসেছে সেগুলোর ওপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত, কিছুটা একেবারেই নতুন বিষয় থাকবে সেগুলো আগামীকালকে জাতীয় সংসদে জানিয়ে দেয়া হবে। এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে করমুক্ত আয়সীমা। তবে বিভিন্ন মহল থেকে আয়সীমা বাড়ানোর দাবি জানানো হলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এটা বাড়ানো হবে না, ভবিষ্যতেও বাড়ানো হবে না। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির আয় আড়াই লাখ টাকার বেশি হলে তাকে আয়কর দিতে হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, পাস হওয়া বাজেটে কি কোন বড় ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাব সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, না বড় ধরনের কোন পরিবর্তন তো হয় না। এখন এ বিষয়ে আমি কাজ করছি। এগুলো খুব বড় কিছু না। কর্পোরেট ট্যক্সে কোন পরিবর্তন আসবে না বলেও জনান তিনি। তিনি বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্সে পরিবর্তন আনার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। মোবাইল বা ইন্টারনেটে ভ্যাট কমানোর কোন উদ্যোগ থাকছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলে তো আমার প্রস্তাবই অত্যন্ত ভাল। আইসিটির বেশিরভাগ ট্যাক্স ৫ শতাংশ। তবে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমার একটা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আরও প্রস্তাব ছিল। এগুলো প্রায়ই আমরা সংশোধন করব। আইসিটিতে আমরা ইয়াং জেনারেশনকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে পারব।
×