ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রান্সের পর ডেনমার্কও শেষ ষোলোতে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৭ জুন ২০১৮

ফ্রান্সের পর ডেনমার্কও শেষ ষোলোতে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘সি’ থেকে ফ্রান্সের পর ডেনমার্কও ‘শেষ ষোলো’তে খেলা নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার ফ্রান্স-ডেনমার্ক ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। আরেক ম্যাচে পেরুর কাছে ২-০ গোলে হারে অস্ট্রেলিয়া। বিদায় ঘটে অস্ট্রেলিয়ার। আন্দ্রে কারিলো ও পাওলো গুয়েরেরোর গোলে পেরু এক জয় নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হয় ফ্রান্স। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয় ডেনমার্ক। তারাও অপরাজিত থেকে রানার্সআপ হয়। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকে পেরু। ১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ফ্রান্স-ডেনমার্ক ম্যাচে ফ্রান্স শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে। কয়েকটি সুযোগ পায়। কিন্তু কাজে লাগানো যায়নি। খেলা প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকে। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমন চলে। কিন্তু গোল আর কোনভাবেই হয় না। প্রথমার্ধ শেষ হতেই ডেনমার্ক জেনে যায় অস্ট্রেলিয়া এক গোল খেয়েছে। তাতে ডেনমার্ক ফুটবলারদের গতি বেড়ে যায়। কিন্তু ফ্রান্সতো এ বিশ্বকাপের ফেভারিট দলগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফ্রান্সের গতির সামনে তাই কুলিয়ে ওঠা কঠিনই ছিল। এমবাপে, গ্রিজম্যান, গিরোদরা তাই আক্রমণ চালাতেই থাকেন। কিন্তু গোল আর মিলেনি। শেষপর্যন্ত ড্র হয় খেলা। অস্ট্রেলিয়া-পেরু ম্যাচে শুরুতে ১৮ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। গোল হজম করে বসে। তাতে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার আশাও যেন শেষ হয়ে যায়। গুয়েরেরো ক্রস করেছিলেন। কারিলো দারুণ ভলিতে অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাট রায়ানকে পরাজিত করে বল জড়িয়েছেন জালে। তার কিছু করারই ছিল না আসলে। পেরু ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। অসিদের হতাশাও যেন বাড়ে। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকেন অসি ফুটবলাররা। সুযোগও মিলে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া পারেনি। প্রথমার্ধে পিছিয়েই শেষ করে অসিরা। ৫০ মিনিটে গিয়ে আরেকটি গোল খায় অস্ট্রেলিয়া। পাওলো গুয়েরেরোর গোলে আরেকধাপ এগিয়ে যায় পেরু। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়াতে জয়ও যেন নিশ্চিত পাওয়ার পথে হাঁটে পেরু। বিশ্বকাপ থেকে একটি জয় নিয়েই বিদায় হয় পেরু। পেরুর কাছে হারায় অস্ট্রেলিয়ারও বিদায় ঘণ্টা বাজে। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ফ্রান্স-ডেনমার্ক ও সোচির ফিস্ট অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া-পেরুর মধ্যকার ম্যাচ একই সময়ে শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হয়। এই ম্যাচগুলো খেলতে নামার আগে ‘সি’ গ্রুপে ফ্রান্স ৬, ডেনমার্ক ৪ ও অস্ট্রেলিয়ার ১ পয়েন্ট ছিল। পেরুর কোন পয়েন্টই ছিল না। পেরুর বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ফ্রান্সের ‘শেষ ষোলো’তে খেলাও নিশ্চিত হয়েছিল। বাকি ছিল, দ্বিতীয় রাউন্ডে ডেনমার্ক না অস্ট্রেলিয়া যাবে। ডেনমার্কই যায়। ‘সি’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলবে ফ্রান্স। নাকি রানার্সআপ হয়ে খেলবে, তা নিশ্চিত হওয়াও বাকি ছিল। ডেনমার্কের বিপক্ষে হারা মানেই রানার্সআপ হয়ে যাওয়া। জেতা বা ড্র করা মানেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। ফ্রান্স গ্রুপ চ্যাম্পিয়নই হয়। ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়া, দুই দলই ছিল বিপদে। দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে হলে ডেনমার্কের পয়েন্ট হলেই হতো। সেটি ড্র থেকে আসুক। কিংবা জয় থেকে আসুক। পয়েন্ট মিললেই ‘শেষ ষোলো’তে খেলত ডেনমার্ক। ডেনমার্ক কী করল? ড্র ঠিকই পয়েন্ট পেল। অস্ট্রেলিয়ার জেতার কোন বিকল্প পথ খোলা ছিল না। হারলেই বিদায়। আবার জিতলেই হবে না, গোল ব্যবধান বাড়িয়েও জেতার সমীকরণ ছিল। কারণ ডেনমার্ক যদি ফ্রান্সের সঙ্গে হারত, অস্ট্রেলিয়া যদি পেরুর সঙ্গে জিতত; তখন গোল ব্যবধানেই ডেনমার্ক না অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলবে, তা নিশ্চিত হতো। ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গোল পার্থক্য ছিল ১। গ্রুপের শেষ ম্যাচে খেলতে নামার আগে ডেনমার্ক এক গোলে এগিয়ে ছিল। ডেনমার্ক ২ গোল দেয়ার বিপরীতে ১ গোল খেয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া ২ গোল দেয়ার বিপরীতে খেয়েছিল তিন গোল। ডেনমার্কের হারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার গোল ব্যবধান এগিয়ে থাকাও লাগত। অস্ট্রেলিয়া জয় দূরে থাক, হারল এবং গোল ব্যবধানেও অনেক পিছিয়ে থাকল। এর আগে ফ্রান্স ও ডেনমার্ক ১৫ বার মুখোমুখি হয়েছিল। ফ্রান্স ৮ বার ও ডেনমার্ক ৬ বার জিতেছিল। বিশ্বকাপে দুই দলের মধ্যে দুইবার লড়াই হয়। একবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স জিতেছিল। আরেকবার ডেনমার্ক জিতেছিল। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়, তখন ডেনমার্ককে হারায়। ২০০২ সালে হারে ফ্রান্স। এবার দুই দলের মধ্যকার ম্যাচটি ড্র হয়। অস্ট্রেলিয়া ও পেরুর মধ্যে ফুটবল বিশ্বকাপে কখনোই লড়াই হয়নি। এবারই প্রথম হলো। আগেই বিদায় নেয়া পেরু জিতে দেখাল। তাতে করে অস্ট্রেলিয়ারও বিদায় ঘটল। অস্ট্রেলিয়ার বিদায়ে ডেনমার্ক দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠল। ফ্রান্সতো আগেই শেষ ষোলোতে খেলার টিকেট পেয়ে যায়।
×