স্টাফ রিপোর্টার ॥ যানজট ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এবার ফ্লাইওভারে বসানো হয়েছে ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। বাংলামোটর-মৌচাক-মালিবাগ ও হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের ৯ কিলোমিটারের পুরো ফ্লাইওভারটি থাকবে সিসি টিভির নজরদারিতে। ডিএমপি’র সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ফ্লাইওভারের ওপরে এবং ফ্লাইওভারসংলগ্ন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৫০টি ক্যামেরা বসিয়েছে। এর প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। শীঘ্র্রই এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসব ক্যামেরার ফুটেজ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে ফুলবাড়িয়ার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং আব্দুল গনি রোডের ‘সেন্ট্রাল কমান্ড এ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফ্লাইওভারের কল্যাণে মৌচাক-মালিবাগ মোড়ে আগের মতো যানজট নেই। তবে ভিন্নচিত্র রমনার হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলামোটর ফ্লাইওভারের সড়কে। অফিস সময়ে প্রতিদিন এই দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। এছাড়া প্রায়ই ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে আসামিরা। তাই যানজট ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ৫০টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে ।
সরেজমিন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারে গিয়ে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের বাংলামোটরের ঢাল, মগবাজার চৌরাস্তা মগবাজার ওয়্যারলেস, তেজগাঁও-সাতরাস্তা, মৌচাক ও মালিবাগ মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সচল করা হয়েছে সেগুলো। ৯ কিলোমিটারের পুরো ফ্লাইওভারটি থাকবে সিসি টিভির নজরদারিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ৫০টি ক্যামেরার ফুটেজ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে ফুলবাড়িয়ার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং আব্দুল গনি রোডের ‘সেন্ট্রাল কমান্ড এ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ থেকে। মনিটরে যানজট কিংবা কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখলেই স্ব স্ব থানার পুলিশকে নির্দেশনা দেবেন তারা। এছাড়া সড়কে পুলিশ কর্মকর্তারা সময় মতো ডিউটি করছেন কিনা? তাও নজরদারি করা হবে এখান থেকে। সূত্রগুলো জানায়, চলতি বছরের ২৮ মে ফ্লাইওভারের মালিবাগের অংশ থেকে বস্তাবন্দী এক নারীর দুই হাত ও দুই পা উদ্ধার করে রমনা থানা পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি গাড়ি ওই ব্যাগটি ফেলে চলে যায়। ওই ঘটনার ২৬ দিন হয়ে গেছে। ফ্লাইওভারে ক্যামেরা না থাকায় কোন গাড়ি থেকে ব্যাগটি ফেলা হয়েছিল। তা এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এখনও পর্যন্ত নিহতের নারী পরিচয় শনাক্ত হয়নি। এছাড়া ২০১৭ এর ডিসেম্বরে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। ছয় মাসেও বাসের নাম জানতে পারেনি পুলিশ। ডিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, বর্তমানে এ কার্যক্রম ট্রায়াল বেসিসে (পরীক্ষামূলকভাবে) চলছে। মূলত সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধী শনাক্তে ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছে। কেউ যদি কোন অনিয়ম করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে সহজে তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এছাড়া ডিউটি পোস্টের ট্রাফিক সদস্যরা সময় মতো কাজে যোগদান করছেন কিনা- সেটাও মনিটরিং সম্ভব হবে।
