ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিপন দেওয়ান

কোথায় কেমন পোশাক

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ জুন ২০১৮

কোথায় কেমন পোশাক

পোশাক আমাদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটি মাধ্যম। আমরা কারও সঙ্গে দেখা করতে গেলে সর্বপ্রথম যে জিনিসটা লক্ষণীয় তা হলো পোশাক। তাই গুরুত্ব দিয়েই পোশাক নির্বাচন করা উচিত। স্থান ভেদে পোশাক নির্বাচন করাটা খুবই জরুরী। আসুন জেনে নেয়া যাক, ইন্টারভিউ, ক্লাস, প্রেজেনটিশন, সেমিনার কিংবা অফিস পার্টিতে কেমন হবে আপনার পোশাক। ইন্টারভিউ : চাকরির ইন্টারভিউ অনেকের জন্যই খুব ভীতিকর ব্যাপার। অনেকেই চাকরির ইন্টারভিউতে সবধরনের প্রস্তুতি নিলেও পোশাকের ব্যাপারে দ্বিধা- দ্বন্দ্বে থাকেন। কোন পোশাক পরা উচিত, কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করা উচিত তা নিয়ে একটি ভয় থাকে। চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলে ফরমাল পোশাক পরা জরুরী। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার জিন্স, টি-শার্ট, ফতুয়া, অতিরিক্ত বড় ঘেরের গোল ড্রেস না পড়াই ভাল। এক্ষেত্রে সাধারণ সালোয়ার কামিজ বা সুতির শাড়ি আপনার প্রথম পছন্দ হতে পারে। লম্বা কামিজের সঙ্গে লেগিন্স পরেও যেতে পারেন। ইন্টারভিউয়ে বেশি খোলামেলা পোশাকপড়া উচিত নয়। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগে পোশাকের রঙের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। খুব বেশি উজ্জ্বল (যেমন লাল, কমলা) রঙের পোশাক না পরাই ভাল। কাল, গাড় ধূসর সাদা, গাড় নীল এবং বাদামি রঙের পোশাক পরতে পারেন। খেয়াল রাখবেন পোশাকটা যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে খাপ খায়। পোশাকের সঙ্গে আনষঙ্গিক উপকরণের ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখা উচিত। ইন্টারভিউ দিতে ঘড়ি, সাধারণ কানের দুল, ছোট কোন টপের সঙ্গে গলার চেইন পরতে পারেন। খুব বেশি গহনা ব্যবহার না করাই ভাল। চুলের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন পরিপাটি ও গোছানো হয়। বড় ধরনের ক্লিপ (যা সহজেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে) দিয়ে চুল বাঁধাবেন না। জুতার ক্ষেত্রে যথা সম্ভব ফ্ল্যাট স্যান্ডেল বা সু জাতীয় জুতা পরার চেষ্টা করুন। জমকালো, জরি বা চুমকি বসানো ব্যাগ এড়িয়ে চলুন। ক্লাস : ইউনিভার্সিটির মেয়েরা যাদের প্রতিনিয়ত বাইরে আসা যাওয়া করতে হয়, ক্লাস করতে হয় তারা পোশাক নির্বাচন এর ক্ষেত্রে আরামদায়ক এবং সহজে পরিধানযোগ্য পোশাক বেছে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে সুতি সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া ও জিন্স ব্যবহার করতে পারেন। সুতি, জর্জেট, লিলেন, সিল্ক কিংবা হাফ সিল্ক প্রায় সবধরনের কাপড়ের তৈরি পোশাক যার প্যাটার্ন বা কাটে রয়েছে বিভিন্নতা। বাহারি রং, ডিজাইন আর কাটিংয়ে বৈচিত্র্য আছে এমন পোশাক আপনার ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলতে পারে। অনেকেই জিন্স, টি-শার্ট পড়তে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এক্ষেত্রে জিন্সের সঙ্গে বিভিন্ন ডিজাইনের টপ পরতে পারেন। লং কামিজের সঙ্গে লেগিংস বেছে নিতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে মেরুন, সবুজ, হলুদ, সাদার পাশাপাশি কমলা, বাদামি মতো উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করতে পারেন। প্রেজেন্টেশন : প্রেজেনন্টেশনে ফরমাল পোশাক পরাটা বেশ জরুরী, খুব ফ্যাশনেবল পোশাক পরে প্রেজেন্টেশন করার প্রবণতা অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মধ্যেই দেখা যায়। এক্ষেত্রে সাধারণ ধরনের পোশাক পরতে পারেন। খুব বেশি বড় প্রিন্টের জামা বা গাড় রঙের পোশাক না পরাই ভাল। (খুব বেশি আঁটসাট জামা, সিলিভলেস জামা না পরাই ভাল)। লং কামিজ, সালোয়ার কামিজ হালকা কাজ করা ড্রেস যা আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে এমন ড্রেস আপনি বেছে নিতে পারেন আপনার প্রেজেন্টেশনের দিনে। সেমিনার : সেমিনার এর পোশাক হিসাবে আপনি, সুতির শাড়ি, জামদানি, সিল্ক কিংবা তাঁতের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরতে পারেন, সালোয়ার কামিজ, লং কামিজ ও এক্ষেত্রে পরা যেতে পারে। শাড়িটা হালকা হলে ব্লাউজের ডিজাইনে কিছুটা বৈচিত্র্য আনতে পারেন। খুব বেশি ফরমাল বা ক্যাজুয়াল না থেকে সেমি ক্যাজুয়াল লুকেও থাকতে পারেন, সঙ্গে গহনা পরতে পারেন যা আপনার পোশাকের সঙ্গে মানানসই। খুব ভারি কিছু না পরাই ভাল। জুতা ও ব্যাগের ক্ষেত্রেও কিছুটা ভিন্নতা এনে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে আপনার লুকটা সাজাতে পারেন। অফিস পার্টি : অফিস পার্টিতে আপনি খুব ফরমাল বা খুব ক্যাজুয়াল কোনটাই না, বরং মাঝামাঝি চলারই চেষ্টা করুন। খুব কড়া ধাঁচের কিছু পরা ঠিক নয় অফিসে। কিন্তু অফিসে যখন কোন পার্টি থাকে তখন নিজের লুকে কিছুটা ভিন্নতা আনতে পারেন। এক্ষেত্রে নিশ্চিন্তে পরে ফেলতে পারেন সুতি জামদানি শাড়ি। দেশি সিল্ক, তাঁতের শড়িও পরতে পারেন। শাড়ি যদি খুব জমকালো হয় সেক্ষেত্রে ব্লাউজটা হালকা কাজের রাখতে পারেন। তাছাড়া সালোয়ার কামিজ ও আপনার লুকে আনতে পারে ভিন্নতা, কামিজের সঙ্গে পালাজ্জো বা ন্যারো প্যান্ট দুটোই মানাবে। অফিসের পোশাক ফরমাল তো হবেই, কিন্তু একঘেয়ে কখনই নয়। হালকা গহনা, পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ ও জুতা। রুচিশীল পোশাক আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। পোশাক নির্বাচন করার আগে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা কোথায়, কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করব।
×