ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফার কাঠগড়ায় জাকা-শাকিরি

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২৫ জুন ২০১৮

 ফিফার কাঠগড়ায় জাকা-শাকিরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গ্র্যান্ট জাকা ও জাদরান শাকিরির উদযাপন ঘিরে ওঠা বিতর্ক যেন থামছেই না। ব্রাজিলের সঙ্গে ১-১এ ড্র করার পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়পর্বের আশা বাঁচিয়ে রাখে সুইজারল্যান্ড। দুর্দান্ত গোলের পর আনন্দে মাতোয়ারা দুই সুইস তারকা সেদিন তাদের জন্মভূমি কসোভোর জাতীয় প্রতীক ঈগলের মতো (দুই হাতে ক্রস চিহ্ন তৈরি) করে উদযাপন করেন। তাতেই তৈরি হয় বিতর্ক। সেটি এখন রীতিমতো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রূপ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাও বিষয়টি ভালভাবে নিতে পারেনি। সংস্থাটি তাই তদন্ত কমিটি গঠন করে জাকা ও শাকিরিকে তলব করেছে। ফিফার আইন অনুযায়ী স্টেডিয়ামে সবধরনের রাজনৈতিক বার্তা ও প্রতীক নিষিদ্ধ। শাকিরি ও জাকাÑ দু’জনের পরিবারই কসোভোর বাসিন্দা ছিল। এই দেশটি একসময় সার্বিয়ার অধীনে ছিল। ২০০৮ সালে স্বাধীনতা পেলেও সার্বিয়া দেশটিকে স্বীকৃতি দেয়নি এখনও। সার্বিয়ার আগ্রাসনের শিকার হয়ে এই দুই ফুটবলারের পরিবার কসোভো ছেড়ে চলে আসেন সুইজারল্যান্ডে। তাদের পূর্বপুরুষ আলবেনিয়ান। জাকার বাবা-মা আলবেনীয় হলেও তাদের উৎস সার্বিয়াতে। তার ভাই আলবেনিয়ার জাতীয় ফুটবল দলে খেলেন। জাকার বাবা ১৯৬৮ সালে বেলগ্রেডে যুগোস্লাভিয়ার কমিউনিস্ট সরকার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে জেলও খেটেছেন। এছাড়া একই ম্যাচের ৬৬ মিনিটে জার্মান রেফারি ফেলিক্স ব্রাইচ সার্বিয়াকে একটি পেনাল্টি দেননি। দলটির কোচ স্লাডেন ক্রাসজিক রেফারিকে হেগে আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধ ট্রাইবুন্যালে শাস্তি দেয়ার কথা বলেছেন। এই মন্তব্যের কারণে ফিফা তার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়া সার্বিয়ার ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধেও ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। কারণ ভক্তদের বিঘœ সৃষ্টি করা। এছাড়া তারা রাজনৈতিক ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যও প্রদর্শন করে। সার্বিয়ার সাবেক প্রদেশ কসোভোতে জন্ম নিয়েছেন শাকিরি। সার্বিয়ার থেকে বের হয়ে এসে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয় কসোভো। যদিও কসোভোর এই স্বাধীনতার অনুমোদন দেয়নি সার্বিয়া। যে কারণে দুইদেশের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা। অন্যদিকে জাকার বাবা-মা কসোভোর স্থানীয় হলেও তার মূলত আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত। গোল উদযাপনের সময় তারা এমন করেছিলেন কেনোÑ এই প্রশ্নের উত্তরে শাকিরি ম্যাচ শেষে বলেছেন, এটা শুধু আমাদের আবেগ থেকে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফুটবলে সবসময়ই আবেগটা একটু বেশি কাজ করে। সবাই দেখেছে আমরা গোল করার পর কি করেছি। এটা আবেগ থেকেই হয়েছে, এখানে অন্য কিছু কাজ করেনি।’ ম্যাচে শাকিরি যে বুট পরেছিলেন তার একটিতে সুইস ও অন্যটিতে কসোভোর পতাকা ছিল। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর সুইস কোচ ভালদেমার পেতকোভি বলেন, ‘আপনারা রাজনীতির সঙ্গে ফুটবলকে মেলাতে পারেন না। এটা কখনই উচিত নয়। ওরা যা করেছে সেটা কেবলই ইমোশন থেকে। বিশ্বকাপের মঞ্চে ইমোশন থেকে অনেক কিছু হতে পারে। এ নিয়ে ভাবতে চাই না। মাঠে ছেলেরা যেভাবে খেলছে, তাতে আমি বেশ খুশি।’ ফিফার তদন্তে কী দাঁড়ায় সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা। বুধবার গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের প্রতিপক্ষ কোস্টারিকা।
×