বেতন দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতন, বোনাস পরিশোধ, শ্রমিক ছাঁটাই, বন্ধ কারখানা চালুর দাবি ও নির্যাতন বন্ধের প্রতিবাদে ৫টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে ফতুল্লার ৪টি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা এ অবরোধ সৃষ্টি করে। পরে পুলিশের আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা। পরে ডিআইটি মাঠে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিকে রবিবার সকাল ১০টায় সিদ্ধিরগঞ্জের পুলিশ এলাকার প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লিঃ নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেড-ডেমরা সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, রবিবার সকালে ফতুল্লার শিবুমার্কেট এলাকার সাকুরা গার্মেন্টেস’র এক শ্রমিককে মারধর করে মালিক পক্ষের লোকজন। প্রতিবাদে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ওসমান, র‌্যাডিকেল ও আবির গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। তারা একত্রিত হয়ে বকেয়া বেতন বোনাস প্রদান এবং শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে করতে ফতুল্লা থানার সামনে এসে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ (পুরাতন) সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করে। সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও শ্রমিক ছাঁটাই ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। পরে শ্রমিকরা রাস্তার পাশের ডিআইটি মাঠে অবস্থান নিয়ে চার গার্মেন্টসের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করে। এদিকে সড়ক অবরোধরে কারণে রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সকুরা গার্মেন্টসের শ্রমিক আবুল কালাম ও সাত্তার মিয়া জানান, ঈদের আগে রাত দিন টানা কাজ করার পর গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ তাদের পুরো বোনাস প্রদান না করে আংশিক বোনাস দেয়। ঈদের ছুটির পর কাজে যোগ দিয়ে বাকি বোনাস দাবি করার কারণে এক শ্রমিককে মারধর করে মালিক পক্ষের লোকজন। তাদের দাবি কোন অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই তাদের প্রায় মারধর ও চাকরিচ্যুত করা হয়। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, বকেয়া বেতন বোনাস প্রদান ও শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতন বন্ধের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। এছাড়া চারটি গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের শ্রমিকরা সমস্যার কথা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার এমএস টাওয়ারে অবস্থিত প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লিঃ এর ইউনিট-২ ও ইকবাল গ্রুপে অবস্থিত ইউনিট-১ এ মোট ৪শ’ ৮০ শ্রমিক কাজ করছে। রবিবার শ্রমিকরা কারখানায় এসে দেখতে পায় কারখানাটিতে তালা ঝুলছে। এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে তারা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেডে-ডেমরা সড়কের এসে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৪ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, ঈদের আগ থেকেই প্যাপিলন নিট কম্পোজিট লিঃ এর ইউনিট-২ বন্ধ ছিল। রবিবার ইকবাল গ্রুপে অবস্থিত প্যাপিলনের ইউনিট-১ কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা এসে কারখানাটি বন্ধ দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে তারা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেড-ডেমরা সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করে। পরে আমরা গিয়ে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।