ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আষাঢ়েও পুড়ছে বরেন্দ্র ॥ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ২৫ জুন ২০১৮

 আষাঢ়েও পুড়ছে বরেন্দ্র ॥ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বৃষ্টির অপেক্ষায় থেকে পেরিয়ে গেল আষাঢ়ের ১০ দিন। তার আগে থেকেই বৃষ্টিহীন রাজশাহী অঞ্চল। গাছে গাছে আগেই উঁকি দিয়ে ঝরে গেছে বর্ষার ফুল কদম, তবে ঝরেনি বৃষ্টি। এ অবস্থায় তীব্র খরা অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্রসহ উত্তরাঞ্চলজুড়েই। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তীব্র দাবদাহে তপ্ত হয়ে উঠেছে এ অঞ্চল। অব্যাহত তাপ প্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে প্রাণীকূলে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা সূর্য দহনে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনেও। বাসা-বাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সবখানেই অস্থিরতা চলছে। শান্তি মিলছে না কোথাও। অন্তত দুই সপ্তাহ ধরেই রাজশাহীর আবহাওয়ার তেমন কোনো হেরফের হচ্ছে না। প্রতিদিনই ৪০ ডিগ্রীর কাছাকাছি অথবা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রাও উঠছে কখনো কখনো। এই অবস্থায় প্রশান্তির একমাত্র উপায় বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে এ অঞ্চলে। এদিকে তীব্র তাবদাহের কারণে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। বিশেষ করে হাসপাতালের তিনটি শিশু ওয়ার্ডে পা ফেলার জায়গা নেই। বেডে ফ্লোরে সবখানেই রোগী আর রোগী। এত রোগীর চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান প্রফেসর আসগার হোসেন বলেন, ‘ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গড়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ রোগী রামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হচ্ছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরেই রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কখনোই ২৫ ডিগ্রীর নিচে নামেনি। রবিবার দুপুরে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপামাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে গত ১৫ জুন রাজশাহীতে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই ছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। নজরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীতে মৃদ তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ কারণে গরমের পরিমাণ অনেকটা বেশি। অব্যাহত তাপমাত্রার পাশাপাশি ভ্যাপসা গরম ছড়িয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন একেবারেই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যেই রাস্তা-ঘাট রোদে খাঁ খাঁ করছে। দুপুরের দিকে অবস্থা আরও বেগতিক আকার ধারণ করছে।
×