ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি খাতে আরও অর্থ বরাদ্দের আহ্বান

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৪ জুন ২০১৮

জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি খাতে আরও অর্থ বরাদ্দের আহ্বান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ আজ রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে আরও অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে ওয়াটার এইড বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে আলোচকরা সবার জন্য নিরাপদ পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করলে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের অগ্রগতি ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যে কঠিন হয়ে পড়বে বলে উল্লেখ করেন। তারা বলেন, ওয়াটার এইড ও ইউনিসেফের যৌথ সহযোগিতায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) করা এক বিশ্লেষণে, পানি স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করা হয়েছে। যা ওয়াশ খাতে পৃথক বরাদ্দের দীর্ঘমেয়াদী ধারার মাধ্যমে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জিপিডি এবং বিগত ৭ বছরের জাতীয় বাজেটের তুলনায় ওয়াশ খাতের অপর্যাপ্ত বরাদ্দ চোখে পড়ার মতো। আগামী অর্থবছরে চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) তুলনায় স্থানীয় সরকার বিভাগে এই খাতে বরাদ্দ বেড়েছে মাত্র ৫৪ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু গত এক বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এবং সম্প্রসারিত নগরায়ণের ফলে সৃষ্ট ওয়াশ চাহিদার তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দকৃত টাকার অপর্যাপ্ততা উল্লেখযোগ্য। বক্তারা আরও বলেন, ভৌগলিক অবস্থান বিচারে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াশ বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে যে অসমতা, সেটা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। স্থানভেদে ওয়াশ কার্যক্রম অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজমান। গ্রাম ও চরাঞ্চলে বাজেট বরাদ্দের তীব্র প্রয়োজনীয়তা থাকার পরও মহানগর ও শহরগুলো তুলনামূলকভাবে অধিক বরাদ্দ পাচ্ছে। যদিও বাজেটের সামগ্রিক চিত্র অনুযায়ী আপাতদৃষ্টিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে ওয়াশখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। কিন্তু তারপরও গ্রাম ও শহরাঞ্চলে অসমতার হার বিস্তার লাভ করছে যেখানে শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে বরাদ্দ যথাক্রমে ৯০.৯ ও ৯.১ শতাংশ। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ওয়াশ খাতে বরাদ্দকৃত বাজেট ও ব্যয়ের ধরন থেকে এটা পরিষ্কার যে বরাদ্দকৃত অর্থও সঠিক পরিমাণে ব্যয় হয়নি। এছাড়াও তিনি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সেক্টর উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী পানি স্যানিটেশন ও হাইজিনের (ওয়াশ) লক্ষ্যসমূহ অর্জনে জাতীয় বাজেটে গ্রাম, দুর্গম ও অবহেলিত অঞ্চলসমূহ এবং ছোট ও মাঝারি শহরগুলোর জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। এছাড়া আয়োজক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ অর্জন করার জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা, স্বাস্থ্যবিধি, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যথাযথ অর্থ বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। ওয়াটার এইড বাংলাদেশ, ইউনিসেফ, পিপিআরসি, ফানসা-বিডি, ডব্লিউএসএসসিসি-বি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশিন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশ অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার ফয়সাল আব্বাস, ফ্রেশওয়াশ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়ার পক্ষে ইয়াকুব হোসেন, ওয়াটার এইডের প্রতিনিধি সৈয়দ আদনান, নেটওয়ার্কিং সংস্থার প্রতিনিধি অলক মজুমদার প্রমুখ।
×