ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ২৩ জুন ২০১৮

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যারা এ হত্যাকান্ডে ষড়যন্ত্র করেছেন তাদের সকলের নাম জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের পেছনে যারা জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জিয়াউর রহমান। তার বিচার করা না গেলেও তার আসল জঘন্য রূপ তুলে ধরতে হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুরহমান হত্যাকান্ড নিয়ে রচিত গল্প ‘মহামানবের দেশে’ অবলম্বনে নির্মিত চতুর্থ ও পঞ্চম কাহিনীচিত্র ‘সেদিন শ্রাবণের মেঘ ছিল এবং জনক ১৯৭৫’-এর প্রিমিয়াম শো ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনীরা বাংলাদেশকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তার স্বপ্ন, তার নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। খুনীদের বিচার করা হলেও দেশ এখনও কলঙ্কমুক্ত হয়নি। শুধু খুনীদের বিচার সম্পন্ন করে নয়, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই, এমন কোন হত্যাকান্ড নেই যে ২১ বছর পর সেই হত্যাকান্ডের মামলা রুজু হয়েছে। খুনী তথা জিয়াউর রহমানরা চায়নি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হোক। বরং যাতে বিচার না হয় তার জন্য তারা আইন পাস করেছে। ’৭৫ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত খুনীরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, নাম মুছে ফেলতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আইনের মাধ্যমে খুনীদের বিচার করেছেন। তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করছেন। সোনার বাংলা গড়ছেন। তিনি বলেন, এখনও দেশে এমন রাজনৈতিক দল রয়েছে যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করতে চায় না। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। তাদের চিরতরে বিতারিত করতে হবে। পণ করতে হবে, জাতির পিতার আদর্শ লালন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা ও তার চেতনায় দেশ গড়ায় বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে সহযোগিতা করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে তিনি ১৯ বছরের যুবক। সেই সময় ১ থেকে ১৫ আগস্টের অনেক ঘটনা তার মনে আছে। তিনি তার বাবা এ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের কথা স্মরণ করে বলেন, তার বাবা আর বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ছিল বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে তাদের পরিবারের সম্পর্ক ছিল দারুণ। ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার বাবা দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু তার বাবাকে বলেছিলেন, তোমাকে খন্দকার মোশতাক মেরে ফেলবে। উত্তরে বাবা বলেছিলেন, আমাকে নয় সুযোগ পেলে তোমাকেই (বঙ্গবন্ধু) তারা মেরে ফেলবে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, খন্দকার মোশতাকের পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত হারামিতে ভরা। এরপর ৫ বার খন্দকার মোশতাক তাদের বাসায় এসেছেন, বাবার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কি আলাপ হয়েছে তা জানতে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক সংসদ সদস্য মাহামুদুর রহমান বেলায়েত, জাতীয় প্র্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, অভিনেতা শহিদুল ইসলাম সাচ্চু প্রমুখ।
×