ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবারগুলোর ভাগ্য অনিশ্চিত

শিশু আটক কেন্দ্রে মেলানিয়া

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৩ জুন ২০১৮

শিশু আটক কেন্দ্রে মেলানিয়া

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যাপক রাজনৈতিক চাপের মুখে কঠোর অভিবাসন নীতি থেকে সরে এসে অভিবাসী শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি অবসানে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার একদিন পর ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শন করেন। তার এ অঘোষিত পরিদর্শনের পর এখনও আভাস পাওয়া যায়নি যে বিচ্ছিন্ন মা-বাবারা তাদের সন্তানদের সঙ্গে একত্রিত হবে কিনা। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। ফার্স্ট লেডির অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি ব্রিফিংয়ে অংশ নেন এবং অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী শিশুদের জন্য একটি অলাভজনক সামাজিক সেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তিনি টেক্সাসে ম্যাকএলেনে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান নিউ হোপ চিল্ড্রেনস শেল্টার পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে এ সফর শুরু করেন। এ আশ্রয় কেন্দ্রটিতে প্রায় ৬০ শিশু রয়েছে। এদের বেশিরভাগই টিনএজার। এরা এসেছে মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকে। মেলানিয়া টেক্সাসে ম্যাকএলেনে এক আশ্রয় কেন্দ্রে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা সেক্রেটারি এ্যালেক্স আজারের সঙ্গে টেবিলে বসে বলেন, আজ আমাকে এখানে অভ্যর্থনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি এখানে এসেছি বলে আমি আনন্দিত এবং শিশুদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব। তিনি বলেন, আমি এ কথাও আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, কী করে আমি যত শীঘ্র সম্ভব এ শিশুদের তাদের পরিবারের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি। হাজার হাজার শিশুকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের জিরো টলারেন্স নীতির সরাসরি ফল হিসেবে তাদের মা-বাবাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত বয়স্কদের গ্রেফতার করছে। বিচারের সম্মুখীন করছে এবং কারাগারে পাঠাচ্ছে। অন্যদিকে, তাদের সন্তানদের পৃথক আটক কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, তার এখানে আসার লক্ষ্য হচ্ছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সামাজিক সেবা প্রদানকারীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে কঠিন কাজ করে যাচ্ছেন এবং তাতে সমর্থন প্রদান করছেন সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানানো। প্রশাসন শিশুদের তাদের পরিবারের সঙ্গে একত্রিত করতে এর মধ্যে গৃহীত উদ্যোগের ওপর কিভাবে নির্ভর করতে পারে তা শোনার জন্যও তিনি এখানে এসেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিচ্ছিন্ন নীতি বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও প্রশাসন ২ হাজার ৩ শ’র বেশি শিশুকে কিভাবে তাদের মা-বাবাদের সঙ্গে একত্রিত করার পরিকল্পনা করছে সে বিষয়ে কিছুই বলছে না। এ শিশুদের সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্ত অতিক্রমের পর তাদের মা-বাবাদের কাছ থেকে পৃথক করা হয়। ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের সিদ্ধান্তে প্রভাব খাটিয়েছেন ফার্স্ট লেডি ও তার বড় মেয়ে এবং উপদেষ্টা ইভাঙ্কা। তিনি স্বাক্ষর করার সময় বলেন, ইভাঙ্কা এবং আমার স্ত্রীও বিষয়টা অত্যন্ত অনুভব করেন। বিষয়টা অত্যন্ত অনুভব করি আমি। আমরা পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন দেখতে চাই না এবং একই সময়ে আমাদের দেশে কারও অবৈধ আগমন চাই না। নির্বাহী আদেশে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী প্রতিটি অভিবাসীর জন্য ফৌজদারি বিচারের জন্য জিরো টলারেন্স প্রয়োগ নীতি অব্যাহত রাখার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ কথাও বলা হয়েছে যে, কর্মকর্তারা আটক মা-বাবা ও শিশুদের পৃথক না রেখে একত্রে রেখে পারিবারিক অবিচ্ছিন্নতা বজায় রাখার উদ্যোগ নেবেন। বিচার বিভাগ বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলোর প্রতি আচরণের ব্যাপারে আইনগত চাপ পরিবর্তনের জন্য এক ফেডারেল বিচারককে অনুরোধ জানিয়েছে। মেলানিয়া আশ্রয় কেন্দ্র ত্যাগ করার আগে বিমানে ওঠার সময় তার আলোকচিত্র গ্রহণ করা হয়। তার গায়ে ছিল সবুজ রঙের সামরিক জ্যাকেট এবং পেছনে একটি বার্তা ছিল। বার্তাটি হচ্ছে, ‘আই রিয়েলি ডোন্ট কেয়ার। ডু ইউ?’
×