ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ রিজভীর

কারাবিধির দোহাই দিয়ে চিকিৎসাবঞ্চিত করা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৩ জুন ২০১৮

   কারাবিধির দোহাই দিয়ে চিকিৎসাবঞ্চিত করা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির পক্ষ বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানানোর পরও কারাবিধির দোহাই দিয়ে তাঁকে চিকিৎসা বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, জনগণ বর্তমান সরকারকে লাল কার্ড দেখাতে বদ্ধপরিকর। তাই সরকারের আস্ফালন উপেক্ষা করেই জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। এতে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ এফ এম সিদ্দিকী। আমরা আর কতবার বলব পিজি বা সিএমএইচে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রকৃত চিকিৎসা হবে না। কারণ সেখানে ডপলার টেস্ট এবং বিশেষ ধরনের এমআরআই সুবিধা নেই। আছে শুধু ইউনাইটেড হাসপাতালে। তাই আমরা তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার কথা বলছি। কিন্তু আমাদের কথায় কর্ণপাত করা হচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। বিএনপি মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যেভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাতে দেশবাসীর নিকট এটা ক্রমাগত পরিষ্কার হয়ে গেছে সরকার তার জীবন নিয়ে দুরভিসন্ধিমূলক খেলায় মেতে উঠেছে। একজন সঙ্কটাপন্ন রোগীকে চিকিৎসা না দেয়া চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। রিজভী বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দূরে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করতেই নীলনক্সার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশজুড়ে বিরোধী দল নিধনের কর্মসূচী থামছে না। রিজভী বলেন, মানবাধিকার তদন্তে জাতিসংঘের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না বাংলাদেশ। সংস্থাটির এ ধরনের অন্তত দশটি অনুরোধে বাংলাদেশ সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার জিয়াদ রাদ আল হুসেইন সমাজে কাজ করার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমেই সঙ্কুচিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই দেশজুড়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন ও গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের ওপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। রিজভী বলেন, নিশ্চিত ভরাডুবির ভয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিএনপি ও বিরোধী দলের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। গত কয়েকদিনে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের পর এখন তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতেও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডাঃ মাজহারুল আলম ও মীর হালিমুজ্জামান ননীর বাসায় আওয়ামী লীগের ক্যাডার ও সাদাপোশাকে পুলিশ হানা দিয়ে তল্লাশির নামে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করে। কাশিমপুর ও কোনাবাড়িতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে তাদের খুঁজতে থাকে এবং পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধামকি দেয়। আর এগুলোর দিকে চোখ বন্ধ থাকা দায়িত্বহীন নির্বাচন কমিশন হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে। সরকার সংলাপে আসতে বাধ্য হবে- মওদুদ ॥ ক্ষমতাসীন সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সময় এলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে আসতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আদর্শ নাগরিক দল’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ছয় মাস বাকি থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে মওদুদ বলেন, যদি আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, সত্যিকার অর্থে একটি নির্বাচন করতে চাই, তাহলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। এটা হবে অন্যতম শর্ত। সেই সঙ্গে নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। তার আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। মওদুদ বলেন, আমরা গণতন্ত্র হারিয়েছি, মৌলিক অধিকার হারিয়েছি, ভোটের অধিকার হারিয়েছি, আইনের শাসন হারিয়েছি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হারিয়েছি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হারিয়েছি। আমাদের যে মৌলিক অধিকার তা থেকে বঞ্চিত।
×