ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন যুগেও সংস্কার হয়নি মুন্ডুমালা আমনূরা সড়ক

যাত্রীদের ধাক্কায় ঘোরে গাড়ির চাকা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৩ জুন ২০১৮

যাত্রীদের ধাক্কায় ঘোরে  গাড়ির চাকা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন বেহাল। তিন দশক আগে কাঁচা রাস্তাটি প্রথম পাকাকরণ করা হয়েছিল। তারপর থেকে আর কোন সংস্কার হয়নি। রাস্তার পিচ পাথর তো উঠেছেই, নিচের ইট বালি উঠে কাদাতে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তায় প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ছোটবড় যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে থাকছে সড়কের মাঝপথে। কোথাও কোথাও যানবাহনের যাত্রীরা নেমে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে-ঠুলে যানবাহনগুলোকে পারাপার করছে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা-আমনূরা প্রধান সড়কের চিত্র এটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়াতের আর কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় অনেকটা বেকায়দায় পড়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে তানোর ও মোহনপুর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। শুধু মুন্ডুমালা-আমনূরা সড়কেই নয়, তানোরের সঙ্গে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র সড়কটির অবস্থায়ও অনেকটা করুণ। মুন্ডুমালা হতে গোদাগাড়ীর জটেবটতলা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তাটি ১৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়াই এমন পর্যায়ে গেছে যে দেখে মনে হবে এটি পাকা সড়ক নয়, যেন কাদাময় কোন গ্রামের রাস্তা। পিচ পাথর ইট বালুর কোন চিহ্ন নেই। বড় বড় গর্ততে পরিণত হয়েছে। গোদাগাড়ী হতে মুন্ডুমালা পর্যন্ত চলছিল বাস। এ করুণ রাস্তার কারণে ৭ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে বাস চলাচলও। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর (এলজিইডি) তানোর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মুন্ডুমালা হতে আমনূরা ধামধুম ৭ কিলোমিটার রাস্তা শুধু সংস্কারই নয়, রাস্তার দুই পাশে তিন ফুট করে সম্প্রাসরণও করা হবে। ইতিমধ্যে এ রাস্তার জন্য প্রায় ৬ কোটির বেশি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। . ঝিনাইগাতী- গোবিন্দগঞ্জ নিজস্ব সংবাদদাতা শেরপুর থেকে জানান, সংস্কার ও সম্প্রসারণের অভাবে শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী-গোবিন্দগঞ্জ সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ওই সড়কে প্রতিদিন এলাকার শিক্ষার্থীসহ শতশত যাতায়াতকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে দুধনই, বনকালি, হলদিবাটা, মনাকোষা, বনগাঁও, খন্দকারপাড়া ও রাজনগর হয়ে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত এলজিইডির প্রায় ১২ কিলোমিটার ওই রাস্তায় প্রতিদিন ট্রাক, বাস, সিএনজি, অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে থাকে। কিন্তু রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার ও সম্প্রসারণের অভাবে মাঝে-মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। উপজেলার কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনসহ গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৬ সালে ওই রাস্তাটি সংস্কার করা হলেও ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের কাজ করায় কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন স্থানে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বনগাঁও জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনোয়ার হোসেন বুলবুল, স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, ওই সড়কের ভগ্নদশার কারণে প্রতিদিন শতশত যাতায়াতকারীর সঙ্গে এলাকার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সংস্কারের বিষয়ে আজও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। . সাপাহার-খঞ্জনপুর নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতার কারণে সাপাহার উপজেলা সদর থেকে থানা রোড হয়ে খঞ্জনপুর বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় ৫ কিমি রাস্তাটি এখন বেহাল। পথচারীসহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। জানা গেছে, উপজেলার অন্যতম বিজিবি ক্যাম্প খঞ্জনপুর ও উপজেলার শিরন্টি, পাতাড়ী ও আইহাই ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে বিভিন্ন উন্নয়নের পাশাপাশি প্রথম কার্পেটিং করে এই রাস্তাটি। এর পর দীর্ঘ দিন রাস্তাটি হাজারও খানাখন্দে বেহাল হয়ে পড়ে থাকলেও যেন কারও নজর পড়েনি রাস্তাটির দিকে। এলাকার জনগণ বর্ণনাতীত কষ্ট করে ওই পথে চলা ফেরা করছে। বেশ কিছু দিন পূর্বে তারা রাস্তাটির মাটি কেটে উলোট-পালট করে পুরো রাস্তায় খোয়া বিছিয়ে দিলেও সেই খোয়াগুলো ডলে সমান করেনি। যার ফলে রাস্তা মেরামতের পূর্বে যত কষ্ট করে জনগণ ওই পথে চলাচল করত এখন খোয়া ও পাথর বিছিয়ে কোন কাজ না করার কারণে বর্ণনাতীত কষ্ট নিয়ে সেই পথে চলাচল করছে। . ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে গর্ত ! নিজস্ব সংবাদদাতা মীরসরাই, চট্টগ্রাম থেকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই সদরস্থ অছি মিয়া ব্রিজে একটি ঝুঁকিপূর্ণ সুড়ঙ্গময় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উক্ত স্থানে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। দেখা যায়, উপজেলা সদরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অছি মিয়া ব্রিজের উত্তর পশ্চিম পার্শ্বে সিসি ঢালাইয়ের পার্শ্বে একটি গর্তের মুখ। যা মহাসড়কের ওপর থেকে রাস্তার পাশের একটি ছোট গর্ত হিসেবে দৃশ্যমান। যার আয়তন এক থেকে দেড় বর্গফুটের মতো। কিন্তু ভেতরের দিকে ভালভাবে উঁকি দিয়ে দেখলেই ভেতরে প্রায় ২০ বর্গফুটের মতো সুড়ঙ্গ সাদৃশ্য গর্ত। আবার আড়ালে থাকা ক্রিয়দাংশ অন্ধকারাচ্ছন্নও রয়েছে। অনেকটা ডিমের খোলসের মতই ওপর দিয়ে সুন্দর রাস্তা দৃশ্যমান, কিন্তু এক ফুটের মতো পিচ বিটুমিনের নিচে ফাঁকা সুড়ঙ্গময় গর্ত। যে কোন সময় কোন ভারি গাড়ি এখানে ধসে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে। রাস্তায় চলা পথচারী জনৈক সঙ্গীত শিল্পী সনজিত কুমার বলেন, এই রাস্তা দিয়ে কয়েকটি স্কুলের শিশু কিশোর শিক্ষার্থীরা নিত্য যাতায়াত করে। তাছাড়া সারি সারি ছোটবড় যানবাহন তো রয়েছেই। যে কোন সময় এখানে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গর্তের দিকে তাকিয়ে ভয় পাচ্ছে বলেও অনেক পথচারী জানায়। এই বিষয়ে ফোর লেনের ব্যবস্থাপক সওজ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার হোসেন বলেন, বৃষ্টির পানি অপসারণের জন্য কোন ভাবে ছোট গর্ত থেকে ধীরে ধীরে এমন বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওপর থেকে দৃশ্যমান না থাকায় কারও দৃষ্টিগোচরে আসেনি। উক্ত স্থানে শীঘ্রই সংস্কার ও ঢালাইয়ের মাধ্যমে নিরাপদ মহাসড়ক নিশ্চিত করা হবে বলে জানান তিনি।
×